রেখা মনি, নিজস্ব প্রতিবেদক
আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে রংপুরের বিভিন্ন নগরীতে লাচ্ছা সেমাই তৈরির ধুম পড়েছে। শহরের পাড়া- মহাল্লাহ ও অলিগলিতে গড়ে উঠেছে প্রায় দু’শতাধিক লাচ্ছা সেমাই তৈরির কারখানা। আর এ সব কারখানায় নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিম্নমানের সব উপকরণ দিয়ে দেদারছে তৈরি হচ্ছে ভেজাল লাচ্ছা সেমাই।
অধিক মুনাফার লোভে সেমাই তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে মানবদেহের জন্য মারাত্মক সব ক্ষতিকর উপকরণ। অথচ এসব দেখার দায়িত্বে নিয়োজিত বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) একেবারে নির্বিকার। সরেজমিনে দেখা গেছে, অধিকাংশ লাচ্ছা তৈরির কারখানা বিএসটিআই এর অনুমোদন ছাড়া প্রতিষ্ঠিত।
এছাড়া যে সকল কারখানা গড়ে উঠেছে সেগুলোতে মানা হচ্ছে না কোন হাইজিন নিয়মনীতি। নামি-দামি অনেক কোম্পানির লেভেল লাগিয়ে স্থানীয়ভাবে তৈরি এসব লাচ্ছা বাজারজাত করে আসছে মালিকরা।
মানুষের খাওয়ার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এসব লাচ্ছা সেমাই সৈয়দপুর শহরের চাহিদা মিটিয়ে স্থানীয় হাট-বাজার ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা শহরে অবাধে পাঠানো হচ্ছে।
হাতেগোনা কয়েকটি লাচ্ছা তৈরির বৈধ কারখানা থাকলেও তারা বিপাকে পড়েছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীদের দাপটে। শহরের ঘুঘুর মোর, সাতমাথা কলাবাড়ি, মাহিগঞ্জ সরেয়ারতল, হারাগাছ, ষ্টেশন এলাকা, গনেশপুর, বাবুখা, কুঠির পারা ,সহ শহরের বিভিন্ন আনাচে কানাচে মৌসুমী লাচ্ছা সেমাইয়ের কারখানা চালু করা হয়েছে। এ সব কারখানা থেকে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন নামে লাচ্ছা বাজারজাত করা হচ্ছে। এ সব লাচ্ছা প্রতিদিন রিক্সাভ্যান ও ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সায় শহর ও গ্রামের হাট বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে।
উৎপাদনে যাওয়া এ সব অস্থায়ী কারখানায় গড়ে দৈনিক ২৫ থেকে ৮০ খাঁচি (প্রতি খাঁচিতে ১৮ কেজি) লাচ্ছা উৎপাদন হচ্ছে। স্থায়ী কারখানাগুলোতে উৎপাদিত হচ্ছে গড়ে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ খাঁচি। রংপুরে ডিডি জাহাঙ্গীর সাহেব বলেন ,পঁচা ডিম, এ্যানিমেল ফ্যাট এবং কৃত্রিম ঘি ও সুগন্ধি মিশ্রিত ভেজাল লাচ্ছা সেমাই তৈরি যাতে না হয় সেজন্য কারখানাগুলোতে নজরদারি রাখা হয়েছে। এছাড়া অনুমোদনহীন লাচ্ছা সেমাই কারখানাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যস্থা নেয়া হবে। চিকিৎসকরা বলেন ,এসব লাচ্ছা সেমাই খেয়ে পেটে পীড়া, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। সুস্থ্য থাকতে হলে এসব অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে।