নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর
রংপুর নগরের আজাদ হোমিও হল সংলগ্ন অবৈধ স্থাপনা ও দখল উচ্ছেদ অভিযানের ছবি তোলার সময় পুলিশের লাঠিচার্জেও শিকার হয়েছেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের রংপুর অফিসের ক্যামেরাপারসন লেমন রহমান। গুরুত্বর আহত অবস্থান তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সাড়ে ৫টার দিকে ভাঙ্গা মসজিদ মোড়ে এই ঘটনাটি ঘটে।
এদিকে লাঠিচার্জের ঘটনায় বিক্ষুদ্ধ রংপুরের সাংবাদিক সমাজ দ্রুত দোষী পুলিশ সদস্যদের শাস্তি ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানিয়ে সন্ধ্যায় সড়ক অবরোধ করেন। নগরীর সুপার মার্কেট মোড়ে দীর্ঘ এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সড়কে অবস্থান নিয়ে সাংবাদিক নেতারা ওই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ঘোষণা দেন। এসময় সেখানে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যান এবং দোষীদের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে সাংবাদিকরা সড়ক অবরোধ থেকে সরে আসেন। সড়ক অবরোধে রংপুর প্রেসক্লাব, রিপোর্টার্স ক্লাব, সিটি প্রেসক্লাব, রিপোর্টার্স ইউনিটি, টেলিভিশন ক্যামেরা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন-টিসিএ রংপুর, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম, রংপুর ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সংবাদকর্মীরা অংশ নেন। সন্ধ্যায় রংপুর জেলা প্রশাসন, মেট্রোপলিটন পুলিশ ও সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ওই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দেয়া হয়। একই সঙ্গে লাঠিচার্জের ঘটনার দায়ে এএসআই সায়েমকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে নেয়া হয়। রাতে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির ক্যামেরাপারসন নির্যাতিত লেমন রহমানকে দেখতে হাসপাতালে যান পুলিশ কমিশনার আবদুল আলীম মাহমুদসহ অন্য কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে লাঠিচার্জের ওই ঘটনা সম্পর্কে প্রত্যক্ষদর্শী ও পেশাগত দায়িত্ব পালনে উচ্ছেদ অভিযানের সময় উপস্থিত থাকা সাংবাদিকেরা জানান, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ক্যামেরাপারসন লেমন ভিডিও করার জন্য সামনের দিকে এগিয়ে যায়, এসময় করে পুলিশ বাধা দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশ লেমনের উপরে চড়াও হয়ে তার ওপর লাঠিচার্জ করতে শুরু করনে। এক পর্যায়ে লেমন মাটিতে পড়ে গেলে এলোতাপারীর বুট ও লাঠি দিয়ে লেমনকে পেটাতে থাকেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাপ্তাহিক রংপুরের সংবাদ পত্রিকার রিপোর্টার কবির চৌধুরি বলেন, পুলিশ যখন এলাকা ফাঁকা করার জন্য লাঠিচার্জ শুরু করেন। ঠিক সেই সময় ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ক্যামেরাপারসন লেমনের উপরে পুলিশ হটাৎ কেন জানি চড়াও হয়ে যায়। আর ১০-১২ জন পুলিশ একসঙ্গে হয়ে লেমনকে লাঠিচার্জ করেন। এতে লেমন গুরুত্বর আহত হয়ে মাটিতে ঢলে পড়েন।
এদিকে ওই ঘটনায় জড়িত সকল পুলিশ সদস্যদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে টিসিএ রংপুর এর সভাপতি শাহ্ নেওয়াজ জনি। তিনি জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দায়ী সকল পুলিশ সদস্যর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া না হলে আমরা আবারো রাজপথে নামব। একই সঙ্গে আহত লেমনের শারীরিক অবস্থান উন্নতির ওপর নির্ভর করে প্রয়োজনে পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে। তবে পুলিশের মতো দায়িত্বশীলদের কাছ থেকে এরকম ঘটনা প্রত্যাশিত নয় বলেও জানান তিনি।