রেখা মনি, রংপুর, স্টাফ রিপোর্টার
রংপুরে দিন দিন বাড়ছে কিশোর অপরাধ। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মারামারি, চুরি, ছিনতাই ও যৌন নিপীড়নের মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে কিশোর বয়সীরা। জেলায় কোনো কিশোর সংশোধনাগার না থাকায় বাধ্য হয়েই অভিযুক্ত অনেক কিশোরকে আটকের পর ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে পুলিশ। কিছু অভিযুক্তকে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হলেও বয়স বিবেচনায় জামিন পেয়ে ফের অপরাধে জড়াচ্ছে তারা। জেলা পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, বাসা-বাড়িতে চুরি, ছিনতাই, ইভটিজিংসহ নানা অপরাধে সম্পৃক্ত কিশোর বয়সিরা। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে মাদক কারবারিরা কিশোরদের ব্যবহার করছে মাদক পরিবহনের কাজে। গত ২০১৭ সালে মারামারি, চুরি, ছিনতাই, ইভটিজিং ও মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের ২৬টি মামলায় ৩৮ জন, ২০১৮ সালে ৫০টি মামলায় ৫২ জন ও ২০১৯ সালে ৫০টি মামলায় ৬৮ জন কিশোরকে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। তাদের বেশিরভাগই নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের। এ ছাড়াও অর্ধশত কিশোরকে আটকের পর অপরাধের ধরন ও মাত্রা বিবেচনা করে তাদের পরিবারের সদস্যদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মামলায় চালান করা বেশিরভাগ কিশোরকে সংশোধনী কারাগারে পাঠানো হচ্ছে আদালতের নির্দেশে। শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। আর বাকিরা জামিনে রয়েছে। জানা গেছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের পরিচয় ব্যবহার করেও অনেক কিশোর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে। শহরের পাড়া-মহল্লার বাসা-বাড়িতে চুরি, ছিনতাই ও ইভটিজিংসহ নানা অপরাধের অভিযোগে প্রায়ই এসব কিশোরকে আটক করে পুলিশ। কিছু অপরাধীকে আদালতের নির্দেশে সংশোধনের জন্য সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুলিশ আটক কিশোরদের মামলা না দিয়ে জেলা শহরে থাকা সরকারি শিশু পরিবারে পাঠাতে চাইলেও তাদের নিতে অনীহা প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ। পুলিশ তখন বাধ্য হয়েই মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়। কোনো কিশোরের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা থাকলে আদালতের নির্দেশে তাকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। আমাদের শিশু পরিবারগুলোয় সরকারি খরচে এতিম শিশুদের লালন-পালন করা হয়। সেখানে কোনো কিশোর অপরাধীকে আমরা রাখতে পারি না। দু-তিনদিনের জন্য রাখতে হলে তাদের জন্য চট্টগ্রামে আমাদের সেফ হোম রয়েছে। |