রংপুর ব্যুরো:
রংপুর নগরীর দামোদরপুর ১৩নং ওয়ার্ডের ফরহাদ হোসেন, স্ত্রী মোছাঃ রোজিনা আক্তার ইয়াসমিন’র মেয়ে প্রতিবন্ধী মোছাঃ রিফা মনি (১৯) ১০নং ওয়ার্ডে তার নানার বাসায় থাকতো, এর মাঝেই বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে পার্শ্ববর্তী একই ওয়ার্ডের মৃত আকবর হোসেনের ছেলে মোঃ আবুল কালাম আযাদ (৫১) রিফা মনিকে একা পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষন করে।
রংপুর নগরীর দামোদরপুর ১৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ ফরহাদ হোসেন ও তার স্ত্রী মোছাঃ রোজিনা আক্তার ইয়াছমিন ঢাকার সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আয়া এবং স্বামী ওয়ার্ড বয়ের চাকুরী করেন,গত ৩০ এপ্রিল ২০২২ ঈদুল ফিতরের ছুটিতে রংপুর নগরীর বখ্তিয়ারপুর আদর্শগ্রাম ১০নং ওয়ার্ডে তার বাবা ইব্রাহীম খলিলের বাড়িতে বেড়াতে আসেন, সাথে তাদের এক ছেলে সন্তান ও প্রতিবন্ধী মেয়ে রিফা মনিকে নিয়ে। ঈদ উদযাপনের পরে রিফা মনিকে রেখে তারা তাদের একমাত্র ছেলেকে নিয়ে উভয়েই ঢাকা চলে যায়।
পরে ১৪/০৯/২০২২ পূনরায় রোজিনা আক্তার তার বাবার বাড়িতে এসে তার প্রতিবন্ধী মেয়ে রিফা মনিকে নিয়ে ঢাকার সাভারে নিয়ে যায়।
হঠাৎ কয়েকদিন পরে রিফার বুকে প্রচন্ড ব্যথা হওয়ায় রোজিনা আক্তার রিফা মনিকে গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ খাওয়ায়, তাতেও ব্যথা না সারলে পরে তাকে ঐ হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক ট্রিটমেন্টে করেন এবং তাতে জানতে পারেন যে তার মেয়ে রিফা মনি অন্তসত্বা।
রোজিনা আক্তার তার মেয়ে রিফা মনিকে এই জঘণ্যতম কাজের কথা জিজ্ঞেস করলে রিফা মনি বলে তাকে রেখে ঢাকা আসার পরে গত ১২/০৮/২০২২ তারিখে দুপুরের খাবারের পরে আনুমানিক ০৩ ঘটিকার সময় বাড়ি ফাঁকা থাকার সুযোগ নিয়ে পার্শ্ববর্তী রিফার নানা বাড়ির দক্ষিন দিকের বাড়ি মৃত আকবর আলীর ছেলে আবুল কালাম আযাদ (৫১) তার
টিভির ঘরে প্রবেস করে খাটের উপর ফেলে জোরপূর্বক ধর্ষন করে।
এবং শেষে তাকে বিভিন্ন রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে বলে এই কথা কাউকে জানালে রিফার পরিবারের সকলের অনেক বড় ক্ষতি করবে।
এমনকি তাকে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে।
এই ঘটনার কথা তার মেয়ের কাছ থেকে শোনার পর দ্রুত তার স্বামী ফরহাদ হোসেনকে অবগত করে রিফাকে নিয়ে রংপুরে তার বাবা ইব্রাহীম খলিলের বাসায় চলে আসে।
এবং উপরোক্ত বিষয়ে ঘটনার সাক্ষী (১) মাসুদ আহমেদ (৩৫) পিতা ইব্রাহীম খলিল (২) সেফালী বেগম (৫০) স্বামী শহিদুল ইসলাম (৩) আনিছা বেগম (৪৫) স্বামী আজিজুল ইসলাম উভয় সাং বখ্তিয়ারপুর আদর্শগ্রাম থানা হাজির হাট মেট্রো: রংপুর মহানগর গণকে নিয়ে ০১/০২/২০২৩ তারিখে মডার্ন ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার ধাপ রংপুরে রিফা মনির আল্ট্রাসনোগ্রাম করানো হয়, আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট অনুযায়ী ২৫ সপ্তাহ ০২ দিনের অন্তসত্বা রিফা মনি।
তাৎক্ষনিক উপরোক্ত বিষয় পরিবারের সকলের সাথে আলোচনা করে বিবাদীর বিরুদ্ধে ১৩/০২/২০২৩ তারিখে রংপুর হাজিরহাট থানায় উপস্থিত হয়ে লিখিত অভিযোগ করা হয়।
যাহার মামলা নং-৬ নারী শিশু নির্যাতন আইনের সংশোধনী অদ্ধাদেশ ৯ এর (১) মামলা রুজু করা হয়।
বিবাদী আবুল কালাম আযাদ ও তার তিন সন্তান প্রভাবশালী এবং সরকারি চাকুরীজীবি বলে
তারা বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য বিভিন্ন মহলের মাধ্যমে ভুক্তভোগীর পরিবারকে মোটা অংকের টাকার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু ভুক্তভোগীর পরিবার এই প্রস্তাবে রাজি নন, তারা এই প্রতিবন্ধী রিফা মনির সন্তানের স্বীকৃতি চায়
এ বিষয়ে ধর্ষক আবুল কালাম আযাদের স্ত্রী সন্তান ও তার ছোটো ভাইয়ের সাথে কথা বলে জানতে চাইলে তারা বলেন এই বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যে, ভুক্তভোগীরা মিথ্যে দুর্ণাম দিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবী করার জন্য এহেনো মিথ্যে অভিযোগ দিচ্ছে।
পরে সকল বিষয় ও আলামত তুলে ধরলে এক পর্যায় তারা বলে আমাদের কিছু বলার বা করার নাই, মালায় কোর্ট যা রায় দিবে আমরা তা মেনে নিবো বলে মন্তব্য করেন।
পরে এ বিষয়ে ১০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কামরুজ্জামান তুষার বলেন যে এই ধর্ষণের ঘটনাটি সত্যি, যদি সত্যি না হতো তাহলে ধর্ষক পরিবার থানায় এবং পান্ডারদিঘী বাসিন্দা ও মেট্রোপলিটন পরশুরাম থানা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি খতিবর রহমানকে মোটা অংকের টাকার প্রস্তাব দিতো না, তিনি এমন জঘন্য অপরাধের শাস্তির দাবী জানিয়ে বলেন থানায় কথা বলে আমি মামলাটি সচল করার ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এদিকে ধর্ষক আবুল কালাম আযাদ ও মেট্রোপলিটন পরশুরাম থানা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি খতিবর রহমানের মুঠো ফোনের কথপকথন ফাঁস হয়ে যায়, তাতে স্পষ্টভাবে ধর্ষক আবুল কালাম আযাদ খতিবর রহমানকে বলে আমি ঐ প্রতিবন্ধীকে তার থাকার বাসস্থান সহ মোটা অংকের একটা টাকা প্রদান করবো, তবে ঐ প্রতিবন্ধীর সাথে কোনো রকম বিবাহের সম্পর্কে আবদ্ধ হতে পারবেনা, তখন ভুক্তভোগীর পক্ষে খতিবর রহমান বলে আপনি থাকার জায়গা ও টাকা দিলেই তো সমস্যার সমাধান হবে না, কারণ প্রতিবন্ধী রিফা মনি এখন ৭ মাসের অন্তসত্বা তার সন্তানের বাবার দায়িত্ব কে নিবে, ঐ বাচ্চাটি সমাজে কি পরিচয় নিয়ে বাঁচবে, তখন ধর্ষক আবুল কালাম বাচ্চাটা নষ্ট করার জন্য জোরালো আবেদন করেন।
কিন্তু খতিবর রহমান এহেনো প্রস্তাবে রাজি না হয়ে বলেন আপনাকে এতো কিছু দিতে হবেনা,বরং আপনি তাকে বিয়ে করে ঢাকায় তার বাবা মায়ের কাছে রাখেন ওখানেই তার বাচ্চা প্রসব হবে।
আপনি সেই থাকা খাওয়ার খরচ বহন করবেন।তাহলে ঐ মেয়েটিও সমাজে বলতে পারবে তার বাচ্চার বাবা আপনি।
এ ছাড়া আর কোনো পথ নেই, ওনারা মামলা করবে, আর মামলা করলে তো বুঝতেই পারছেন কি হবে, তখন ধর্ষক আবুল কালাম বলেন আপনি যেভাবেই হোক বিষয়টা টাকার বিনিময়ে রফা করেন।
অপরদিকে হাজিরহাট থানার ওসি রাজিফুজ্জামান বলেন ধর্ষক গ্রেফতারের জন্য সব রকমের প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি,এবং খুব দ্রুত আসামী গ্রেফতার হবে বলে জানান তিনি। কিন্তু মামলার এতোদিনেও আসামী গ্রেফতার হলোনা,কি হচ্ছে এই ধর্ষণ মালার আড়ালে তা এখনো ধোঁয়াসায় রয়ে গেছে।