রংপুর ব্যুরো:
অনিয়ম, দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যসহ ২০টি অভিযোগ এনে রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার মর্ণেয়া ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। বুধবার (০১ মার্চ) দুপুরে রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন শেষে স্মারকলিপি প্রদান করেন মর্ণেয়া ইউনিয়নবাসী।
গত ২৬ জানুয়ারি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরে অভিযোগ করেন তিনজন সংরক্ষিত নারী সদস্যসহ দশজন ইউপি সদস্য। এতে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি, বে-আইনিভাবে সরকারি গাছ কাটাসহ ২০টি অভিযোগ করেন তারা। ইউপি সদস্যরা বলেন, কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছেন চেয়ারম্যান। একই সঙ্গে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক, ইউএনও, দুদকসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে অভিযোগও দিয়েছেন তারা। তাদের অভিযোগ, দুঃস্থ-অভাবি মানুষদের সরকারি অনুদানের টাকা আত্মসাৎ করেছেন চেয়ারম্যান। একই সঙ্গে জন্ম নিবন্ধনসহ নানা নিবন্ধনের জন্য নেয় বাড়তি টাকা। এমন চেয়ারম্যানের অপসারণ চান সেবাবঞ্চিতরা।
চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই দাবি করেন অভিযুক্ত চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান। তদন্তের পর সব সত্য উঠে আসবে বলে জানান তিনি। এদিকে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের জন্য গংগাচড়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আফতাবুজ্জামানকে নিয়োগ প্রদান করেছেন প্রশাসন। এ বিষয়ে আফতাবুজ্জামান বলেন, মর্ণেয়া ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। দশ কার্যদিবসের মধ্যে তার জবাব না পেলে এবং তা সন্তোষজনক না হলে ইউনিয়ন পরিষদ আইন অনুযায়ী চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গংগাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ তামান্না বলেন, মর্ণেয়া ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ এবং ১০ সদস্যের অনাস্থার অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রংপুর জেলা প্রশাসক, ড: চিত্রলেখা নাজনীন বলেন, এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে ইউনিয়ন পরিষদ আইনানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মর্ণেয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চার প্রার্থীর সঙ্গে লড়েন জিল্লুর রহমান। ২২ হাজার ভোটারের মধ্যে ৪ হাজার ১শ ৫০টি ভোট পেয়ে জয়ী হন এই চেয়ারম্যান।