রংপুর প্রতিনিধি:
রংপুরে প্রতিবন্ধী রিক্সাচালক নাজমুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দায়ের । বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে নাজমুলের স্ত্রী শ্যামলী বেগম বাদী হয়ে পুলিশ কনস্টেবল হাসান আলী ও তার স্ত্রী সাথী বেগমকে আসামি করে আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযুক্তদের আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এর আগে বেলা ১২টায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পার্কের মোড় এলাকায় নাজমুল হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকা-রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। নিহতের স্ত্রী শ্যামলী বেগম ও স্থানীয়দের অভিযোগ, রংপুর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত কনস্টেবল হাসান আলী ও স্ত্রী সাথী বেগম পিটিয়ে রিক্সাচালক নাজমুলকে হত্যা করেছে। অবিলম্বে তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন আন্দোলনকারীরা। এছাড়াও বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর শাপলা চত্বরে রি রিক্সাচালক শ্রমিক লীগ ও দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বাংলাদেশ ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা মৃত্যের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করে। বুধবার দুপুরে কনস্টেবল হাসানের কোর্টপাড়া ভাড়াবাসা থেকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে কনস্টেবল হাসান ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেন এলাকাবাসী। এ ঘটনায় ওই দিনই স্ত্রীসহ কনস্টেবল হাসান আলীকে আটক করে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাজহাট থানার এসআই আশরাফুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় কনস্টেবল হাসান ও তার স্ত্রী সাথীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে আসামিদের আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়েছে। তবে, বেলা সাড়ে ৪টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি। নিহত রিক্সাচালক নাজমুল ইসলামের বাড়ি লালমনিরহাটের মুস্তফি এলাকায়। নগরীর আশরতপুর ইদগাহ পাড়ায় বাড়িভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য রংপুর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত হাসান আলী আশরতপুর কোর্টপাড়ায় বাড়িভাড়া নিয়ে পরিবারসহ বসবাস করেন। নাজমুলের পায়ের সমস্যা থাকায় দীর্ঘদিন থেকে হাসান আলীর একটি ব্যাটারিচালিত রিক্সা ভাড়ায় চালাতেন। গত মঙ্গলবার রাতে ওই রিক্সা নিয়ে হাসান আলীর সঙ্গে নাজমুলের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরই জেরে তাকে বেধড়ক মারধর করেন হাসান আলী। এক পর্যায়ে অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে কোর্টপাড়ার বাড়িতে নিয়ে যান হাসান। এদিকে বুধবার দুপুরে হাসানের ভাড়াবাসায় নাজমুলের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেরে বিক্ষোভ শুরু করেন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে মেট্রোপলিটন তাজহাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তাদেরও অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে নাজমুলের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, নাজমুলকে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার প্রচারণা চালিয়েছেন পুলিশ সদস্য হাসান।