রংপুর ব্যুরো:
১৮ এপ্রিল’২৩ রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ২৬নং ওয়ার্ডের মন্ডলপাড়াস্থ জয়দার মোড়ে সবুজ মিয়ার দোকানের সামনে রাত আনুমানিক ০৯:০০ দিকে আব্দুল হকের দোকান শান্তি ভ্যারাইটিজ স্টোরের বকেয়া টাকা পরিশোধ না করার জেরে তার দুই ছেলে রাসেল, আল আমিন ও দুই মেয়ে কর্তৃক মারুফা আক্তার ও হাবিবুল্লাহ ওরফে বাবু উপর সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাবিবুল্লাহ ওরফে বাবু দোকানের মালিক আব্দুল হকের নিকট মাসিক বাজার বাকী হিসেবে নিতেন এবং মাস শেষে টাকা পরিশোধ করতেন। সেই সূত্র ধরেই ১১৫০/- টাকার লম্বা সময়ের একটি জের পড়ে যায়। ঘটনার দিন রাতে হাবিবুল্লাহ ওরফে বাবু তার নিজ বাসা থেকে তারাবী নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদে যাওয়ার পথে আব্দুল হকের সাথে সাক্ষাৎ হয়। আব্দুল হক তার কাছে পাওনা টাকা পরিশোধের চাপ প্রয়োগ করলে তিনি ঈদের পূর্বেই টাকা পরিশোধ করবে বলে জানান। কিন্তু আব্দুল হক তাতে রাজি না হয়ে তাকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে তার চার সন্তানকে হাবিবুল্লাহর উপর লেলিয়ে দেয়।
পরে রাসেল এবং আল-আমিন লোহার রড এবং চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি তাকে আঘাত করতে থাকে, এসময় আল আমিনের হাতে থাকা চাপাতির আঘাতে হাবিবুল্লাহ ওরফে বাবুর বাম চোখ কেটে বের হয়ে যায়। এই বর্বরোচিত হামলা থেকে রেহাই পায়নি বাবুর তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মারুফা আক্তার। স্বামীর উপর সন্ত্রাসী আক্রমণ ঠেকাতে এসে নিজেই হামলার শিকার হয়ে মাটিতে পড়ে যায়, পরে রাসেল,আল আমিন এবং তাদের দুই বোন মিলে মারুফা আক্তার তার বুকে, পেটে এলোপাতাড়ি লাথি মারতে থাকে, ফলে ঘটনাস্থলেই সে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যায় ।
পরবর্তীতে স্বামী-স্ত্রী উভয়কেই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ হাবিবুল্লাহ ওরফে বাবুর বাম চোখের কর্নিয়া ফেটে ৯৮ শাতাংশ নষ্ট হয়েছে মর্মে ঘোষণা দেয় এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার পরামর্শ দেয়, অপরদিকে মারুফা আক্তারের প্রচন্ড ব্লিডিং হওয়ায় গর্ভে থাকা তিন মাসের সন্তান পেটেই মারা যায় মর্মে চিকিৎসকগণ ঘোষণা দেন।
এদিকে এই ঘটনায় মারুফা আক্তার বাদী হয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় আব্দুল হক, আল আমিন, রাসেলসহ ৮ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে । সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী পুলিশ এই মামলায় একজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়, ৫ জন আসামি অগ্রিম জামিন নেন এবং দুইজন আসামি পলাতক।
এলাকাবাসী এই ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে এমন ঘটনার যেন আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেই সাথে উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করে অপরাধীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়।