রংপুর বিভাগে করোনা সংক্রমণ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে
রোস্তম আলী: রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
রংপুর বিভাগের প্রতিটি জেলায় করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমান পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। প্রতিদিন করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। গত তিন দিনে বিভাগে মৃত্যুবরণ করেছে পঁচল্লিশ জন।
পরিস্থিতি বিবেচনায় গত রোববার জরুরী ভিত্তিতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চতুর্থ তলায় একটি ৫০ শয্যার নতুন করোনা ইউনিট চালু করা হয়েছে। সেখানে আইসিইউ সুবিধা নেই। বর্তমানে সেখানেই করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, রংপুর শিশু হাসপাতালের জন্য নির্মিত তিন তলা বিশিষ্ট ১০০ শয্যার হাসপাতালটিকে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য গত বছরের এপ্রিল মাসে ডেডিকেটেড করোনা আইসোলেশন হাসপাতাল হিসেবে চালু করা হয়। শুরুতে ১০টি আইসিইউ বেড নিয়ে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালটি যাত্রা শুরু করলেও ২টি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে মাত্র ৮টিতে ভেন্টিলেশন সুবিধা রয়েছে।
সবক’টি আইসিইউতে রোগী থাকায় নতুন রোগী আইসিউতে নেয়ার সুযোগ না থাকায় কর্তৃপক্ষ গত শুক্রবার হাসপাতালের মুল ফটকে ‘আইসিইউ বেড খালি নেই’ মর্মে নোটিশ ঝুলিয়ে দেন।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মাত্র ২০টি আইসিইউ বেড রয়েছে। রোগীর চাপের কারণে সেখানেও বেড খালি নেই।
হৃদরোগীসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত মুমুর্ষ রোগীদের চাপ প্রতিদিন বাড়তে থাকলেও আইসিইউ বেড খালি না থাকায় আইসিইউতে রোগী নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে করে মুমুর্ষ রোগীরা সঠিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
রংপুর বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বড় হাসপাতাল হিসেবে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হওয়ায় এখানে প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় শতাধিক রোগী ভর্তি হয়।
কিন্তু এত বড় হাসপাতালে মাত্র ২০টি আইসিইউ বেড দিয়ে বিভাগের আট জেলার রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, বিভাগের ৮ জেলায় দেড় কোটির বেশি মানুষের জন্য আইসিইউ বেড রয়েছে মাত্র ৪৬টি। এর মধ্যে রংপুর ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে ১০টি (সচল ৮টি), রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০টি এবং দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৬টি।
করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর দিকেই এসব হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা বৃদ্ধির কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা করা হয়নি। বর্তমানে রংপুর ও দিনাজপুর ছাড়া বিভাগে বাকি ৬ জেলা কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলার কোনো হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা নেই।
চিকিৎসকগণ জানিয়েছেন,
শুধুমাত্র রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই কমপক্ষে ১০০ আইসিইউ বেড দরকার। সেখানে মাত্র ২০টি বেড। এই ২০টি বেডে এত বড় হাসপাতালের মুমুর্ষ রোগীদের সেবাদান করা মোটেই সম্ভব নয়।
এদিকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স ও চিকিৎসক স্বল্পতার কারণেও চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তাই ভলান্টিয়ার চিকিৎসক হিসেবে আত্মনিয়োগ করার জন্য তরুণ চিকিৎসকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন রংপুর করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এসএম নুরুন্নবী।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায় জানিয়েছেন,
গত এক সপ্তাহ ধরে রংপুর বিভাগে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ভয়াবহভাবে বেড়ে চলেছে। দু’দিনেই ডেডিকেটেড হাসপাতালের শয্যা ভরে গেছে। এভাবে রোগী বাড়লে পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। ইতিমধ্যে ডেডিকেটেড করোনা
আইসোলেশন হাসপাতালে রোগীর শয্যা সঙ্কুলান না হওয়ায় রোববার থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি ইউনিটে ৫০ শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে আইসিইউ সুবিধা না থাকলেও সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy