প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৫, ২০২৪, ১১:৩৭ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুলাই ২০, ২০২০, ৭:২৫ পি.এম
রংপুর বিভাগে কোরবানীযোগ্য ৯ লাখ পশু প্রস্তুত দাম কম হওয়ায় দিশেহারা খামারিরা
রিয়াজুল হক সাগরঃ
পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় খামার ও বাসাবাড়িতে কোরবানিযোগ্য প্রায় ৯ লাখ পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে করোনা ও বন্যা দুর্যোগের কারণে পশুর প্রত্যাশিত দাম পাওয়া নিয়ে বিভাগের দেড় লাখ খামারি সংশয়ে আছেন। অনেকেই কম দামে গরু বিক্রি করছেন। রংপুর বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দফতরের উপ-পরিচালক ডা. হাবিবুল হক জানান, চলতি বন্যা ও লাম্পিং ডিজিজের প্রভাব পড়বে না কোরবানির পশুতে। বিভাগের আট জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা সাড়ে ছয় লাখ হলেও কোরবানিযোগ্য পশু মজুত আছে ৭ লাখ ৭২ হাজার ৮৮১টি। এর মধ্যে ষাঁড়, বলদ, গাভী, মহিষ চার লাখ ৯৮ হাজার ৫৩৪টি, ছাগল, ভেড়াসহ অন্যান্য দুই লাখ ৭১ হাজার ২৩৩টি এবং গৃহপালিত পশু আছে এক লাখেরও বেশি। তাই স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে পশু যাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এজন্য সড়ক পথের পাশাপাশি নতুন সংযোজন হিসেবে রেলপথকেও বেছে নেয়া হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসন ও প্রাণিসম্পদের যৌথ উদ্যোগে অনলাইনে সহজে পশু কেনার সু-ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এদিকে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে গোটা বিভাগে প্রায় ৪০০ কোরবানির পশুর হাটে কেনাবেচার ব্যাবস্থা করছে জেলা প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ অবস্থায় খামারিদের লোকসান ঠেকাতে অনলাইনে পশু বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন ও প্রাণিসম্পদ বিভাগ। সেই সঙ্গে হাট-বাজারগুলোতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে পশু বিক্রির ব্যবস্থাও করা হয়েছে। অঞ্চল ভেদে পশু পরিবহনের সু-ব্যবস্থা হিসেবে প্রথমবারের মতো সড়কের পাশাপাশি রেলপথকেও বেছে নেয়া হয়েছে। এত কিছুর পরও পশুর কাঙ্ক্ষিত দাম পাওয়া নিয়ে খামারিরা সংশয়ে আছেন। করোনা ও বন্যার প্রভাব পড়েছে দেশের উত্তরাঞ্চলের হাটগুলোতে। সেই সঙ্গে রয়েছে গরুর লাম্পিং স্কিন ডিজিজ। গরু কেনায় তেমন আগ্রহ নেই ব্যবসায়ীদের। হাটে সাধারণ ক্রেতাদেরও নেই ভিড়। রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম খটখটিয়া এলাকার বাসিন্দা জোবেদা লাইভস্টক কমপ্লেক্সের পরিচালক রেজওয়ানুল হক টফি জানান, শিক্ষিত হয়ে দেশে কোনো চাকরি জোটেনি তার ভাগ্যে। সংসারের বোঝা না হয়ে পাড়ি জমান বিদেশে। সেখানে ৫ বছর থাকার পর বাড়িতে এসে শুরু করেন গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্প। তার খামারে ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকা দামের ১৫টি গরু আছে। প্রতিটি গরুর পেছনে প্রতিদিন তার খরচ হচ্ছে কমপক্ষে ৫০০ টাকা। গেল বছর পশু খাদ্যের দাম কম থাকলেও এ বছর করোনা ও বন্যার কারণে খাদ্যের দাম বেড়েছে। কিন্তু বাড়েনি গরুর দাম। এখন পযর্ন্ত অনেকেই খামারে এসে গরুর দাম বললেও তাতে তার গরু কেনা ও লালন-পালনের দাম উঠবে না বলে তিনি দাবি করেন। একই এলাকার খামারি সাইফুল ইসলাম গত এক দশক ধরে গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্প করে আসলেও এবারের ঈদে পশুর ন্যায্য মূল্য পাবেন না জেনে অনেক আগেই কম দামে গরু বিক্রি করেছেন। বুক ভরা আশা নিয়ে তার মতো অনেকেই গরু লালন-পালন করলেও এ বছরও শঙ্কায় আছেন বিভাগের এক লাখ ৫৫ হাজার ৮০২ জন খামারি। রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কে এম তারিকুল ইসলাম জানান, ক্রেতা-বিক্রেতারা যাতে নিরাপদে পশু কেনাবেচা করতে পারেন সেজন্য সব ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রতিটি পশুর হাটে মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধাসহ জালটাকা শনাক্তকরণ মেশিন থাকবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও তৎপর থাকবে। পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য জানান, দেশীয় শিল্প রক্ষায় ভারতীয় গরুর প্রবেশ ঠেকাতে বিজিবির পাশাপাশি পুলিশও শক্ত অবস্থানে রয়েছে। সড়ক-মহাসড়কে নিরাপদে পশু পরিবহনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy