রোস্তম আলীঃ রংপুর জেলা প্রতিনিধি
Facebook Twitter share
রংপুর সদরের সদ্যপুস্করিনী ইউনিয়নে দুঃস্থদের মাঝে ভিজিডি কার্ড বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এবং বিষয়টি তদন্তে কমিটি গঠন করবে বলে জানিয়েছে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দপ্তর।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষক, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী,
Surjodoy.com
ছাদ জমানো বাড়ির মালিক কিংবা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের পরিবারের কারো নামে কার্ড করার বিধান নেই। কিন্তু সূত্রে জানা গেছে কার্ড বিতরণে এই নিয়ম আদৌ মানা হয়নি। সদ্যপুস্করিনী ইউনিয়ানের ভিজিডির তালিকায় থাকা ৩২ নম্বর কার্ডধারী স্থানীয় পশু চিকিৎসক একরামুল হকের পাকা বাড়ি আছে। অথচ তার স্ত্রীর নামে করা ভিজিডি কার্ড দিয়ে চাল তোলা হয়।ভিজিডির চাল পাওয়া বিষয়ে পশু চিকিৎসক একরামুল হক বলেন,
The Daily surjodoy
“আগে চাকরি করতাম, এখন ওষুধের দোকান আছে। চেয়ারম্যান সাহেবকে বলছিলাম আমার স্ত্রী শিরিনা বেগমের নামে একটি ভিজিডি কার্ড করে দেওয়ার জন্য। তারপর তিনি আমার বউয়ের নামে একটি ভিজিডি কার্ড করে দিয়েছেন।” ৪ নম্বর ভিজিডি কার্ডধারী জোসনা রানী বলেন, তার স্বামী জমি আবাদ করেন। এবার জমি থেকে ২৫ মণ ধান পেয়েছেন, তাই ভিজিডির চাল প্রয়োজন হয় না।
The Daily surjodoy
ইউপি চেয়ারম্যান তাকে যে ভিজিডি কার্ড দিয়েছেন তিনি সেই ভিজিডি কার্ডটি প্রতিবেশী সোবহানের কাছে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন। তালিকায় ৮ নম্বর ডিজিডি কার্ডধারী সায়মা খাতুন বলেন, “আমি ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে ইস্যু করা কার্ড থেকে ভিজিডির চাল পাই। আমার স্বামীর দুইটা ট্র্যাক্টর আছে। কিন্তু আমরা স্বচ্ছল নই, তাই মেম্বারকে বলার পর তিনি আমাকে একটা ভিজিডির কার্ড করে দিয়েছেন।”
The Daily surjodoy
মহিলা ও শিশু বিষয়ক কর্মকর্তার দপ্তর থেকে জানা গেছে, তালিকায় ৩৬ নম্বর ভিজিডি কার্ডধারী দক্ষিণ অযোদ্ধাপুর গ্রামের তাজুল ইসলাম নিসবেতগঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক। তার স্ত্রীর ফরিদা পারভীনের নামে ভিজিডি কার্ড প্রদান করা হয়েছে। এই ব্যাপারে স্কুল শিক্ষক তাজুল ইসলাম বলেন, “আমি চেয়ারম্যানের ভোট করেছি, তাই তিনি নিজ ইচ্ছায় আমার স্ত্রীর নামে একটি ভিজিডি কার্ড করে দিয়েছেন।”
The Daily surjodoy
এ ব্যাপারে সদ্যপুস্করিনী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়াম্যান সোহেল রানা বলেন, “যখন ভিজিডি বরাদ্দ করা হয় তখন নির্বাচন চলছিল। এর সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।”
রংপুর সদর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হাবিবা হেলেন বলেন, কোনো জনপ্রতিনিধি অথবা সরকারি কর্মচারীর নামে ভিজিডিসহ এ ধরনের কার্ড ইস্যু করার নিয়ম নেই। “অনলাইনে জনগণ আবেদন করার পর চেয়ারম্যান নিজে তালিকা থেকে দুঃস্থ ব্যক্তি চিহ্নিত করেছেন। এরপর আমাদেরকে ভিজিডির কার্ড তৈরি করতে বলা
The Daily surjodoy
হলে আমরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং ইউপি সদস্যদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তালিকা তৈরি করি। সেই তালিকা দিয়ে আমরা ভিজিডি কার্ড প্রদান করি। আমাদের তো প্রতিটি বাড়ি যাওয়া সম্ভব না।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তদন্ত করছেন বলে জানান তিনি। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা ভিজিডি কমিটির সভাপতি ইসরাত সাদিয়া সুমি বলেন, “সদ্যপুষ্করিনী ইউনিয়ন থেকে আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। আমি এই বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মনিরুজ্জামান রব্বানীকে আহবায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি এবং ৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।”
The Daily surjodoy
তিনি বলেন, “এ মাসের ভিজিডির চাল বিতরণ না করার জন্য চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছি। সত্যিকার অর্থে কোনো স্বজনপ্রীতি হলে অব্যশই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
রংপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নাছিমা জামান ববি বলেন, ইউনিয়ন কমিটি যাছাই বাছাই করে তালিকা তৈরি করা উচিৎ ছিল। কিন্তু শিক্ষক, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীরা ভিজিডি কার্ড পেলে এটা আসলেই অন্যায়। যাদের ৫ শতকের উপরে জমি আছে তারা কখনোই ভিজিডির কার্ড পাওয়ার যোগ্য নয় এবং চাকরিজীবীদের তো প্রশ্নই ওঠে না
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy