রাজশাহীতে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। জেলা প্রশাসক রাজশাহী অফিসে পিওন পদে চাকুরী দেওয়ার নামে এই প্রতারণা করেন তিনি। সুলতান আহম্মেদের ছেলে অভিযুক্ত সালাউদ্দিন তালাইমারী মতিহার থানার বাসিন্দা। জন্মস্থান পাবনায় হলেও তালাইমারীতে গড়েছেন আলিশান বাড়ি।
জানা যায়, গোদাগাড়ী এলাকার আব্দুর করিম তৎকালীন বিএনপির আমলে গোদাগাড়ী থানার দ্বায়িত্বে থাকা নৌকার মাঝি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেই সুত্রে থানা পুলিশের পরিদর্শক সালাউদ্দিনের সঙ্গে ছিলো পূর্ব পরিচিত। পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে করিমের ভাতিজা আসফে রায়হানের ডিসি অফিসে চাকরী পাইয়ে দেওয়ার কথা বলেন সালাউদ্দিন।বিনিময়ে সালাউদ্দিন ১০ লাখ টাকা চান । করিম তাতে রাজি হয়ে টাকাও দেন ১০ লাখ। ইসলামি ব্যাংক গোদাগাড়ী শাখা থেকে সালাউদ্দিনের নিজ এ্যাকাউন্ট রাজশাহী শাখায় ছয় লক্ষ পঁচানব্বই হাজার এবং তিন লক্ষ পাঁচ হাজার টাকা দেন স্বাক্ষীদের উপস্থিতিতে।
কিন্তু টাকা পাওয়ার পরে সালাউদ্দিন চলে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। আজ কাল বলে সময় ক্ষেপণ করতে থাকেন । পরে টাকা না দিয়ে আত্মগোপনে চলে যান তিনি। দীর্ঘদিন টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। পরে টাকা ফেরত না পেয়ে আদালতে মামলা করা হয়।
আদালত সুত্র জানা যায়, টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি করতে থাকায় চলতি বছরের ২৫ মে করিম বাদি হয়ে রাজশাহীর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। (১৩৬৭ স্মারকে মামলা নং ৩১৬/২৩) আদালত গোদাগাড়ী উপজেলা প্রশাসনকে মামলার তদন্তভার দেয়। উপজেলা প্রশাসন মামলার তদন্ত শেষে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন তিনি। তদন্তে টাকা দেওয়ার সত্যতাও পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, সালাউদ্দিন আহমেদ তৎকালীন বিএনপি সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ব্যারিষ্টার আমিনুল হকের ডান হাত হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর গোদাগাড়ীতে ছাত্রলীগ নেতা ফিরোজ কবিরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।পেটানোর দৃশ্য দাড়িয়ে থেকে দেখছিলেন সালাউদ্দিন।ব্যারিষ্টার আমিনুল হকের কাছের লোক হওয়ায় থানা থেকে ফোর্স আসতে দেননি তিনি। এসআই হয়ে দায়িত্ব পালন করতেন ওসির। বসতেন ওসির চেয়ারে। মন্ত্রীর ক্ষমতায় দাপিয়ে বেড়াতেন, গোদাগাড়ীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় গড়েছেন একাধিক আলিশান বাড়ি।
গোদাগাড়ী ডিগ্রি কলেজ শাখার সভাপতি শহীদ ফিরোজ কবির ছিলেন আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী। পুলিশের অবহেলা ও বিএনপি নেতাদের রোষানলে জীবন হারাতে হয় ফিরোজ কবিরকে।অবসান ঘটে একটি অধ্যায়ের।
এসব বিষয়ে কথা বলতে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ও বিএনপি’র নেতা সালাউদ্দিনকে একাধিকবার ফোন দিয়ে পাওয়া যায়নি। ফোন রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।