আবুল হাশেমঃ
রাজশাহীর পুঠিয়ায় বেশিরভাগ ইটভাটার পরিবেশের ছাড়পত্র নেই। ভাটার মালিকরা সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর এবং উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমঝোতা করে ব্যবসা করার অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, উপজেলায় ১৭টি ইট ভাটা রয়েছে। চলতি বছরে ১১টি ভাটার কার্যক্রম চালু রয়েছে। আর মাত্র ৪টি ভাটার পরিবেশের সনদপত্র আছে। যে ৪টি ভাটার সনদ দেওয়া হয়েছে তা আবার সঠিক ভাবে যাচাই-বাছাই করলে সনদ পাওয়া যোগ্য ইটভাটা না। গভীর রাতে ইটভাটাগুলিতে কয়লা পরিবর্তে কাঠ পোড়ানোর অভিযোগ উঠেছে।
অপরদিকে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ না থাকায় ভাটাগুলি প্রতিদিন ফসলী জমির উর্বর অংশ কেটে এনে ভাটায় জমা করছে। হাতেগোনা দুয়েকটি ভাটা আধুনিক ভাবে কয়লা দিয়ে ইটপোড়ানো ব্যবস্থা রয়েছে।
তবে শিলমাড়িয়া, ভাল্লুকগাছী এবং বেলপুকুরিয়া এলাকার কৃষিজমির মাটি সবচেয়ে বেশি কাটা হচ্ছে। মূলত ভাটার মালিক এবং মোল্লাপাড়া ও পচামাড়িয়া এলাকার হান্নান সহ আরও কয়েকজন মাটিখেকো দালালদের প্রলোভনে পড়ে কৃষকরা জমির টপ সয়েল বা উপরিভাগের মাটি বিক্রি করছেন। এর ফলে ফসলি জমির উর্বরশক্তি হ্রাস পাচ্ছে।
সূত্রমতে, পুঠিয়ায় চারটি ভাটার লাইসেন্স আছে আর বাকি ১৩টির কোনো লাইসেন্স বা ছাড়পত্র নেই। কীভাবে চলে প্রশ্ন করা হলে ইটভাটার মালিকরা জানান, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং বন বিভাগ থেকে শুরু করে প্রতিটি সেক্টর ম্যানেজ করেই ভাটা পরিচালনা করা হয়ে থাকে। আর এসব ম্যানেজ করে থাকেন উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি।
শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের আব্দুল মোমিন বলেন, উপজেলা সদর থেকে এই ইউনিয়নের দুরত্ব একটু বেশি হওয়ার জন্য এবং ভাটাগুলি দেখভালের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের গাফলতির কারণে ফসলের মাঠের ভিতরে নিয়মভর্হিভূত ভাবে ইটভাটাগুলো গড়ে উঠেছে। ইটভাটার কালো ধোঁয়ার কারণে প্রতিবছর আমাদের এলাকায় বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এলাকার কিছু হাতে গোনা দুচার জন ইটভাটার মালিকরা লাভবান হবে। কিন্তু শতশত ফসল উৎপাদনকারী চাষীরা ইটভাটার দ্বারায় ক্ষতির শিকার হচ্ছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইটভাটার মালিক বলেন, রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তর এবং উপজেলা প্রশাসনকে এক ভাটা প্রতি ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিলো। চলতি বছরে তারা ৮০ হাজার টাকা করে নিবেন। একটু দেরি হওয়াতে তিনদিন আগে উপজেলা সদরের দুই ভাটাতে পরিবেশ এবং উপজেলা প্রশাসন মিলে জরিমানা আদায় করেছেন।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক কবির হোসেন বলেন, ইটভাটার মালিকের সাথে রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনোরকম অর্থনৈতিক লেনদেন নেই।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম নুর হোসেন নির্ঝর বলেন, পরিবেশের স্বার্থে রাজশাহী পরিবেশের কর্মকর্তা এবং জেলা প্রশাসন মিলে দুইটি ইটভাটায় জরিমানা করা হয়েছে। আগামীতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।