কাজী আনিছুর রহমান,রাণীনগর (নওগাঁ) :
নওগাঁর রাণীনগরে শুরু হয়েছে আউশ ধান কাটা-মাড়াই। বর্তমান বাজারে ধানের দাম থাকলেও ফলন বিপর্যয়ের কারনে লোকসানে পরেছেন কৃষকরা। আবার ধান গাছে রোগ বালাইয়ের কারনে অনেকেই আগেই জমির রোপনকৃত ধান ভেঙ্গে ফেলে নতুন করে আমন ধান রোপন করেছেন।
রাণীনগর উপজেলায় আউশ মৌসুমে উপজেলা জুরে প্রায় ১ হাজার ২০৫ হেক্টর জমিতে ধান রোপন করা হয়েছে। কৃষকরা বলছেন,মৌসুমের শুরু থেকে আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় ধান গাছে রোগ বালাইয়ের কারনে অনেকেই আউশ ধান রোপন করেও মাঝা-মাঝি সময়ে জমির ধান গাছ ভেঙ্গে ফেলে নতুন করে আমন ধান রোপন করেছেন।
উপজেলার চকার পুকুর গ্রামের কৃষক হাফিজার রহমান জানান,তিনি ৪বিঘা জমিতে আউশ ধান রোপন করেছিলেন। কিন্তু ধান রোপনের পর হঠাৎ করেই ধান গাছ লাল হয়ে মরে যাচ্ছিল। উপাই অন্তর না পেয়ে সোয়া তিন বিঘা জমির ধান ভেঙ্গে নতুন করে আমন ধান রোপন করেছেন। তবে যে টুকু আছে তাতে ৫/৬ মন হারের বেশি ফলন হবেনা।
বিষঘড়িয়া গ্রামের কৃষক মুনছুর রহমান জানান,তিনি ৩বিঘা জমিতে ধান রোপন করেছিলেন। এর মধ্যে ১বিঘা জমির ধান ভেঙ্গে নতুন করে আমন ধান লাগাতে হয়েছে। কালীগ্রামের কৃষক আব্দুস সামাদ জানান,দেড় বিঘা জমিতে ধান রোপন করলেও পরে ভেঙ্গে ফেলে নতুন করে রোপন করতে হয়েছে।
কসবা পাড়ার কৃষক হান্নান ও শুকুর উদ্দীন জানান,তাদের জমিতে ৬ থেকে ৮ মন হারে ধানের ফলন হয়েছে। বাজারে ধানের দাম ভাল থাকলেও ফলনে না হওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে। কৃষকদের মতে,প্রতি বিঘা জমিতে ধান রোপন থেকে শুরু করে কাটা-মাড়াই পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬হাজার থেকে সাড়ে ৭হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
কিন্তু প্রতি বিঘা জমিতে ধানের ফলন ৫ থেকে ৯ মন হারে হচ্ছে। বর্তমান বাজারে ধানের রকম ভেদে ৮২০ টাকা থেকে ৮৪০ টাকা মন পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এতে বিঘা প্রতি গড় দেড় থেকে দুই হাজার টাকা করে লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের।
রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম বলেন,চলতি মৌসুমে প্রায় ১হাজার ২০৫ হেক্টর জমিতে আউশ ধান রোপন করা হয়েছে। তবে গত বছরের তুলনাই এবছর আউশ ধানের আবাদ একটু কম হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন দুই এক জায়গায় ধানের ফলন কম হতে পারে।
কিন্তু অধিকাংশ জমিতেই ধানের ফলন বেশি হয়েছে। দাম এবং ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।