আমান উল্লাহ প্রতিবেদকঃ
রাজধানীর রামপুরায় অনাবিল বাসের চাপায় নিহত রামপুরা একরামুন্নেসা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাঈনুদ্দিনের পরীক্ষার (এসএসসি) ফলাফল ছিল আজ (৩০ ডিসেম্বর)। সে জিপিএ ৪.১৭ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইটে মাঈনুদ্দিনের ফলাফল ঘেঁটে দেখা যায়, ইংরেজি, বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি, শারীরিক শিক্ষা ও ক্যারিয়ার শিক্ষা প্রত্যেক বিষয়েই তার ফলাফল ‘এ প্লাস’। অ্যাকাউন্টিংয়ে পেয়েছে ‘এ’। বাংলা, গণিত ও ব্যবসা এই তিন বিষয়ে তার ফলাফল ‘এ মাইনাস’। ফাইন্যান্স ও ব্যাংকিংয়ে গ্রেড ‘সি’। ইসলাম ও মোরাল এডুকেশনে পেয়েছে গ্রেড পয়েন্ট ‘বি’।
মাঈনুদ্দিনের ভাই মনির হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার ভাই ছাত্র ভালো ছিল। আমার কাছে আবদার করে বলতো ‘ভাই আমাকে ভালো কলেজে ভর্তি করে দিবা’। আমি কইছিলাম, দেখি ঢাকা কলেজে ভর্তির জন্য চেষ্টা করবো।
তিনি বলেন, “করোনার সময় ঠিকমতো আমার ভাই পড়াশোনা করতে পারে নাই। আম্মা রাগ করে ধমক দিয়া বলতো, ‘তুই তো ফেল করবি’। মাঈনুদ্দিন বলতো, রেজাল্ট বের হোক, দেইখো কী করি।”
ব্যাংকে চাকরি করার ইচ্ছে ছিল মাঈনুদ্দিনের। তাই একটা হাসপাতালে রিসিপশনে সাত হাজার টাকা বেতনে চাকরি পেয়েও করেনি বলে জানান তার মা রাশিদা বেগম। লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবার দোকানেও সময় দিতো মাঈনুদ্দিন।
আজ সন্ধ্যায় মোড়ের চায়ের দোকানের সামনে যেতেই দেখা যায় বসে আছেন মাঈনুদ্দিনের বাবা আব্দুর রহমান। কেমন আছেন জানতে চাইলে উত্তর দেন ‘ভালো’। আপনার ছেলে মাঈনুদ্দিনের রেজাল্ট জানেন, প্রশ্ন করতেই কিছুটা আবেগী হয়ে পড়েন তিনি। বলেন, ‘মনে নাই, কাগজে লেখা আছে’।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ নভেম্বর রাত ১১টার দিকে রাজধানীর রামপুরা এলাকায় অনাবিল সুপার পরিবহনের বাসচাপায় মাঈনুদ্দিন নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হয়। এ ঘটনায় রাতে সড়ক অবরোধ করে উত্তেজিত জনতা। এসময় আটটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয় আরও চারটি বাস। মাঈনুদ্দিন নিহতের ঘটনায় তার মা রাশিদা বেগম সড়ক দুর্ঘটনা আইনে মামলা করেন। একই ঘটনায় রামপুরা এলাকায় আটটি বাসে আগুন ও চারটিতে ভাঙচুর করায় পৃথক একটি মামলা করে পুলিশ। মামলায় অজ্ঞাত পাঁচ শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।