এস এম জীবন :
রিক্রুটিং এজেন্সির পরিচালক মোস্তাক’র বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ফারুক ও মহিবুল্লাহ নামের দুইজন ব্যক্তি । মতিঝিল থানা, বায়রা ও জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরো এর মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন তারা ।
উক্ত রিক্রটিং কোম্পানির নাম মুসলিম টুরস এন্ড ট্রাভেলস।
ফারুক নামের একজন অভিযোগ কারীর লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,গত প্রায় ৯ মাস পূর্বে তার আপন সহোদর মোঃ ইলিয়াস হোসেন সহ ৫/৬ জন কর্মী কে সৌদি আরবের পাঠানোর জন্য,মুসলিম ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেল’র পরিচালক মোঃ মোস্তাক আহাম্মদ (আর,এল-৭২৩ ) রহমানিয়া ইন্টারন্যাশনাল কমপ্লেক্স, ২৮/১ সি ,চতুর্থ তলা, টয়েনবি সার্কুলার রোড মতিঝিল ঢাকা-১০০০,এর মাধ্যমে পৃথক চুক্তি তে, সাড়ে চার লক্ষ টাকার বিনিময়ে ফাইভ স্টার হোটেলের ক্লিনার ভিসা দিয়ে সৌদি আরবে পাঠায় । ইলিয়াস সহ ৫/৬ জন কর্মীকে একটি বন্ধ ঘরে আটকিয়ে রেখে, বিভিন্ন সাপ্লাই কোম্পানীকে ও স্থানীয় দালাল চক্রকে দিয়ে কাজ করিয়ে বেতন তুলে নেয়, কিন্তু তাদের কোন রকম বেতন ভাতা দেওয়া হয়নি। ৩ মাসের মধ্যে আকামা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও আকামাও দেওয়া হয়নি। আকামা করার কথা বললে,তাদেরকে অমানসিক নির্যাতন করে আসছে। আকামা দেওয়ার কথা বলে, পাসপোর্ট আটকে রেখে আরো দুই লক্ষ টাকা বিকাশের মাধ্যমে নেওয়া হয়।পরবর্তীতে যে আকামার কাগজটা দেযওয়া হয় সেটা দেখা যায় ভুয়া।সৌদি আরবে মোস্তাকের ভাতিজা পরিচয় দানকারী আল আমিন নামে একজন সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন ভুক্তভোগীর স্বীকারোক্তিতে জানা যায়
লিখিত অভিযোগসূত্রে আরো জানা যায়,উক্ত কোম্পানীর মাধ্যমে ১৫/২০ জন বা তার অধিক শ্রমিক আজ এইভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে। কখনো কখনো খাবারের ব্যবস্থা না করে রুমে আটকে রেখে নির্যাতন করছে। দেশে ফিরতে চাইলে পাসপোর্ট, কাগজপত্র আটকে নির্যাতন করছে।
আমার ভাই ইলিয়াস নিরুপায় হয়ে ওখান থেকে পালিয়ে তাবুক শহরে নিজ দায়িত্বে পলাতক ও মানবেতর জীবনযাপন করছে ।বর্তমানে অন্যদেরকে মক্কা শহরের একটি নির্মানাধীন কন্ট্রাকশন বিল্ডিং এর আন্ডার গ্রাউন্ডে আটকে রেখে কাজ করাচ্ছে স্থানীয় গ্রুপ ও ভিনদেশী লোকেরা। যারা ২৪ ঘন্টা পাহারা দিয়ে সবাইকে বন্দি করে রেখেছে। উক্ত সাইট থেকে বের হতে চাইলে ৩/৪ লক্ষ টাকা দাবী করছে। কিছু লোক পালিয়ে গেলেও বর্তমানে বাকিদের কড়া পাহারায় রেখেছে।
রিক্রুটিং এজেন্সীর পরিচালক জনাব মোঃ মোস্তাক আহমেদের কাছে প্রতিকার চেয়ে বার বার অনুরোধ করলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি। বরং সৌদি আরবে তার ভাতিজা পরিচয় দানকারী আল আমিনের মাধ্যমে নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়ি দিয়েছেন বলে জানা যায় । তিনি বলেন কেউ আমার কিছু করতে পারবে না।
আমি ভাই কে নিয়ে মারাত্মক উদ্বিগ্ন। তার নিরাপত্তা নিয়ে মারাত্মক চিন্তিত। তাই নিরুপায় হয়ে আবেদন করেছেন বলে উল্লেখ করেন ।
আরেকজন লিখিত অভিযোগকারী মহিবুল্লাহ জানান, মোস্তাক আমাকে রোমানিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে গত ২৩/০২/২০২৩ ইং তারিখে সোনালী ব্যাংক মতিঝিল শাখা যার হিসেব নং-০০০২৬৩৪১০০৪০১ তে, ৫০ হাজার টাকা গ্রহন করে। পরবর্তীতে একই শাখায় গত ১৩/০৩/২০২৩ তারিখে আবারও ৫০ হাজার টাকা গ্রহন করে। ২০২৪ সালের জানুয়ারির ৩০ তারিখ মঙ্গলবার বিকেল ৫’টায় নগদ তার অফিসে বসে আরো ১ লাখ টাকা গ্রহণ করে । বিবাদী দীর্ঘদিন যাবত আমাকে বিদেশে নিবে, নিচ্ছে বলে প্রতারণা করে আসছে এবং তার অফিসে গেলেও সে আমার সাথে দেখা করছে না। সে আমার ব্যক্তিগত পাসপোর্ট ও আটকে রেখেছে,যার নং- A07009843 যা চাইলেও সে তা দিচ্ছে না,পাসপোর্ট দিতেও নানা তালবাহানা শুরু করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইলিয়াসের বোন জামাই কামাল হোসেন বলেন, মোস্তাক একজন প্রতারক লোক । প্রতারণা করেই বেড়ানো তার মূল ব্যবসা । আমার আত্মীয় কে তার মাধ্যমে সৌদি আরব পাঠাতে গিয়ে আমি প্রবাসী ব্যাংক থেকে লোন নিয়েছি, পরবর্তীতে ২ লক্ষ টাকা ধার করে টাকা দিয়েছি শুধু ইলিয়াসের ভালো থাকার জন্য ।
ইলিয়াস ভালো তো দূরে থাক এখন পালিয়ে জীবন পার করছে । মোস্তাকের কাছে ফোন দিলে সে বিভিন্ন হুমকি দেয়, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা নাকি তার বন্ধু,৫ আগস্ট এর আগে যত গণহত্যা হয়েছে সব মামলার দায়িত্ব নাকি সরকার তার ওপর দিয়েছে, বেশি কথা বললে আমাদেরকে সেই মামলায় ফাঁসিয়ে হুমকি দিয়েছে।তারা আরো জানায় নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে নাকি মোস্তাক সবমিলিয়ে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ।এ বিষয়ে জানতে তদন্তকারী কর্মকর্তা মতিঝিল থানার এস আই আজিজের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুসলিম ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস পরিচালক মোস্তাক আহমদ সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন । অবশ্য কিছুদিন আগেও তিনি সাংবাদিকের সাথে খুব দুর্ব্যবহার করেন ।
Like this:
Like Loading...
Related
এ জাতীয় আরো খবর..