আপেল মাহমুদ, রুহিয়া(ঠাকুরগাঁও)সংবাদদাতাঃ
ঠাকুরগাঁও সদরের রুহিয়া ডিগ্রি কলেজে ব্যবসায় শিক্ষা (বিএম) বিভাগের ইংরেজি প্রভাষক আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে নিবন্ধনের জাল সনদে চাকরি করার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।
অভিযুক্ত প্রভাষকের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় মামলা করার জন্য ২৯ সেপ্টেম্বর কলেজ কর্তৃপক্ষ কে চিঠি দিয়েছেন এনটিআরসিএ’র সহকারী পরিচালক তাজুল ইসলাম। চিঠির অনুলিপি ঠাকুরগাঁও সদর থানায় পাঠানো হয়েছে। কিন্তু চিঠি দেয়ার তিন মাস অতিবাহিত হলেও জাল সনদধারীর বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
জানা যায়, আতিকুর রহমান ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত পঞ্চম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দেখিয়ে ২০১২ সালের ১১ নভেম্বর ঠাকুরগাঁও জেলার রুহিয়া ডিগ্রি কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা (বিএম) বিভাগের ইংরেজী প্রভাষক পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় তার রোল নম্বর ছিল ৪০২১২৫৪০, রেজি. নং-৯০০০২৬৮৭।
এনটিআরসিএ’র সহকারী পরিচালক (পমূপ্র-৩) তাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে আতিকুর রহমানের সনদ পত্র যাচাইয়ের তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আতিকুর রহমানের সনদটি সঠিক নয় সনদটি জাল ও ভুয়া রােল নম্বরটি অন্য ব্যক্তির। প্রকৃত রােল নম্বর ধারীর নাম: মোঃ মিজানুর রহমান পিতা: মৃত আবুল হাসিম মাস্টার। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, তিনি আবশ্যিক বিষয়ে পেয়েছিলেন ৬৬ নম্বর ও ঐচ্ছিক বিষয়ে পান ৪১ নম্বর। তিনি নিবন্ধন সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছেন মর্মে দালিলিক ভাবে প্রমাণিত হয়েছে বিধায় আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে রুহিয়া ডিগ্রী কলেজের পক্ষ হতে থানায় মামলা দায়ের পূর্বক 'এনটিআরসিএ' অফিসকে অবহিত করার নির্দেশ ক্রমে চিঠি দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে চিঠির অনুলিপি দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জাল সনদ ধারী আতিকুর রহমানের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি কথা বলতে চাননি।
রুহিয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ জানান, এনটিআরসিএ’র চিঠি পেয়েছি। ব্যক্তির দায় অধ্যক্ষ কিংবা প্রতিষ্ঠান বহন করবে না। তবে, ২০২০ সালে অক্টোবরের ২১ তারিখে আতিকুর রহমানকে চাকুরী হতে চুড়ান্ত বরখাস্ত করা হয়েছে। বেতন হিসেবে সর্বমোট ১৭ লাখ ২১ হাজার ৭৯০ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে বলা হলেও টাকা ফেরত পাইনি। অভিযুক্ত প্রভাষকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়নি।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি মোঃ তানভিরুল ইসলাম জানান, জাল সনদের বিষয়ে এনটিআরসিএ’র চিঠি এখনও হাতে পাননি।
উল্লেখ, ২০১৫ সালের ২০ মে নিরীক্ষা দপ্তরের যুগ্ম পরিচালক বিপুল চন্দ্র সরকার ও অডিটর মাহমুদুল হক রুহিয়া ডিগ্রি কলেজ পরিদর্শন করেন। ওই নিরীক্ষায় আতিকুর রহমানের দাখিল কৃত বেসরকরি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার সনদ পত্র জাল বলে ধরা পড়ে। তিন বছর পর ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা দপ্তরের উপপরিচালক অধ্যাপক সাজ্জাদ রশিদ স্বাক্ষরিত প্রতিবেদন কলেজ অধ্যক্ষের কাছে পাঠানো হয়, যেখানে বলা হয়, আতিকুর রহমান অন্য ব্যক্তির সনদ পত্র সংগ্রহ করে জালিয়াতির মাধ্যমে চাকরিতে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছেন। এরপর রুহিয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ ২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি এ বিষয়ে সাত দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা চেয়ে নোটিশ দিলেও আতিকুর রহমান এর কোনো জবাব দেননি। এর পরিপ্রেক্ষিতে কলেজ পরিচালনা কমিটি জরুরি সভায় তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। সেই সঙ্গে ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বেতন হিসেবে নেওয়া ১৬ লাখ ৬০ হাজার ২৩৮ টাকা এবং কলেজ থেকে গৃহিত ৬১ হাজার ৫ শত ৫২ টাকা সর্বমোট ১৭ লাখ ২১ হাজার ৭৯০ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে বলা হয়েছিল।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy