বিজন কান্তি রায়,
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা সেটেলমেন্ট (জরিপ) অফিস এর রেকর্ড কিপার অবনী বাবুর বিরুদ্ধে ঘুষ-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। সেবা নিতে আসা লোকজনকে জিম্মি করে দীর্ঘদিন ধরে তিনি অর্থ আদায় করছেন বলে জানা গেছে। চাহিদা মতো টাকা না দিলে দিলে সেবা প্রার্থীকে দিনের পর দিন ঘুরতে হয় বলে অভিযোগ।
ভুক্তভোগীরা জানান, অবনী বাবু জমির আপত্তি কেস জমা নিতে ৫০ টাকা, আপিল কেস জমা বাবদ ২০০ টাকা, মৌজা রেকর্ড রুম থেকে দেখতে ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকা, আপত্তি কেসে নাম অন্তর্ভুক্ত করতে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা, তামাদি মওকুফ ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা, ছাপা নকশা ১ হাজার টাকা, কেস তল্লাশি ২০০ থেকে ৫০০ টাকা করে নিচ্ছেন।
মঠবাড়িয়ার গুলশাখালীর ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি বলেন, ‘জমি নিয়ে ওয়ারিশদের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের ঝামেলায় আছি। তারপর আবার অবনী বাবুকে ঘুষ না দিলে চিরতরে জমি হারাতে হবে অথবা কাগজের জন্য বছরের পর বছর ঘুরতে হবে।’
এক ব্যক্তির কাছ থেকে এক হাজার টাকা নিচ্ছেন অবনী বাবু
সংশ্লিষ্ট অফিসের এক কর্মচারী সমকালকে বলেন, ‘কাগজপত্র জমা রাখা বা গুদামঘর অবনী বাবুর দায়িত্বে। সেবা নিতে আসা লোকদের ঘুষ দিতে তিনি বাধ্য করেন।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রেকর্ড কিপার অবনী বাবুর কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘আমার কাছ থেকে অনেকেই সুবিধা নিতে আসছেন। সুবিধা দিতে না পারায় তাদের মধ্য থেকে হয়তো কেউ এ মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।’ তিনি এ কাজের পাশাপশি নিজেকে সাহিত্যিক পরিচয় দিয়ে আরও বলেন, ‘শিল্পীমনা মানুষরা অন্যায় করতে পারে না।’
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ বলেন, ‘ঘুষ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তারপরেও মনের অজান্তে কিছু ভুলত্রুটি হতে পারে।’
উপজেলা সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা মীর আবদুল মান্নান বলেন, ‘সরকারিভাবে কিছু কাগজ যেমন-রেপ, ফলিও, কোর্টফিসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাগজ বিক্রির বিধান আছে।’ তবে অবনী বাবুর ঘুষ গ্রহণের চিত্র দেখালে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব।’