রাজধানী মগবাজার এলাকায় রেলওয়ের ৭ ফিট জমি দখল করে ফারুক ও তার ভাই সাব্বিরের নেতৃত্বে চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। যুবসমাজকে ধ্বংসের প্রতিবাদ এবং ওই জায়গা উচ্ছেদে বিভাগীয় ভু-সম্পত্তি কর্মকর্তা (ডিইও) ডেপুটি কমিশনার নজরুল ইসলামের কাছে অভিযোগ করেন মাসুম বিল্লাহ। বাদীর করা অভিযোগে যুবসমাজকে রক্ষা এবং রেলের জমি উদ্ধারের দাবি জানানো হয়। মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় মাদক ব্যবসায়ী সাব্বির ধাড়ালো অস্ত্র নিয়ে মাসুম বিল্লাহকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁড়িয়ে আসে। নিরুপায় হয়ে রেলওয়ে ভুমি ও ইমারত কর্মকর্তার কাছে জীবন রক্ষার সহযোগিতা চেয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। নজরুল ইসলামের সাথে বাদী যোগাযোগ না করায় সম্প্রতি বাদীকে তলব করেন ভুমি কর্মকর্তা। তাঁর দপ্তরে ডেকে নিয়ে প্রতিবেদকের সামনে জমি উচ্ছেদ না করার নানা প্রতিবন্ধকতা দেখান। পরিশেষে শর্তস্বাপেক্ষে রাজি হন নজরুল। তাঁর দাবি রেলের সাত ফিট জায়গা উদ্ধারে দুটি ভেকু ভাড়া এবং ৩০০ পুলিশের খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে অভিযোগকারীকে। তাতে খরচ হবে ১ লাখ টাকা। গত বৃহষ্প্রতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এই 01711691611 থেকে অভিযোগকারীর আত্মীয় আমিনকে ফোন দেন ভুমি কর্মকর্তা। বাদীর মোবাইল নাম্বার চান নজরুল। তাঁকে বৃহষ্প্রতিবার সকাল ১০.৩৮ মিনিটে 01833349325 এই নাম্বারটি ডিইওর মোবাইলে এসএমএস দেয়া হয়। তিনি তাঁর মোবাইল নাম্বার থেকে ফোন না দিয়ে কানুনের 01915574016 উক্ত নাম্বার থেকে বাদীকে হুমকি দিয়ে কথা বলেন ঘুষখোর ডেপুটি কমিশনার নজরুল। অভিযোগকারি মাসুম বিল্লাহকে জানান,খরচ দিলে ওই জায়গা উচ্ছেদ হবে টাকা না দিলে হবে না। এর আগে বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভুমি কর্মকর্তা বাদী হয়ে জিআরপি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন রেলের জমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে। এজাহারের পর ওসির নির্দেশে সরেজমিন পরিদর্শনে জান এএসআই আনোয়ার হোসেন। মাদক ব্যবসা চলার ঘটনা সত্যতা পান তিনি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন পুলিশ । অভিযোগটি নিশ্চিত হতে পরিদর্শককে ফোন দেন রেলওয়ের ভুমি কর্মকর্তা কানুন ইকবাল হোসেন। মাদক ব্যবসা চলার কথা কানুনকে জানান পুলিশ। রেলের জমি দূর্ত্তরা দখলে নিয়েছে কি না তা যাচাই করতে কানুনকে সরেজমিন যাওয়ার নির্দেশ দেন ডেপুটি কমিশনার নজরুল। গত মাসে কানুন ইকবাল এবং তাঁর একসহযোগী মোমরাজকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন। পরের দিন রবিবার নজরুল ইসলামের দপ্তরে যাওয়া হয়। তাকে মাদক ব্যবসা চলার কথা বললে তিনি প্রতিবেদকের কোথা বিশ্বাস না করে কানুনের সহযোগী মোমরাজকে জিজ্ঞেস করেন। মোমরাজ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া শর্তেও উচ্ছেদ না করার পক্ষেই অনড় ছিলেন ভুমি কর্মকর্তা। তার অসহযোগিতার মনোভাব বুঝতে পেরে বাদী উর্দ্ধতন কর্মকর্তা এডিজি আইয়ের দারস্থ হন ভুক্তভোগী। বাদীর অভিযোগ পড়ে এডিজি আই পরির্দশন পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন গত ১ অক্টোবর । উপরের কর্মকর্তার আদেশও মানেনি ডেপুটি কমিশনার নজরুল। অনেক ঘুরাঘুরি করে প্রতিকার না পেয়ে আবারও এডিজি আইয়ের কাছে যান। পরে তিনি ডিআরএম সালাউদ্দিনকে ফোনে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন। ডিআরএমের কাছে গেলে তিনি বাদীকে উচ্ছেদ করার আশ্বস্ত করেন। পরিশেষে ১৫ নভেম্বর মগবাজার এলাকায় উচ্ছেদের নোটিশ দেন রেলওয়ের ভুমি দপ্তর। ওই এলাকায় দুই দফা মাইকিং করে রেলের দখল করা জায়গা ১৪ নভেম্ববরের মধ্যে ছেড়ে দিয়ে যার যার অবস্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয় । মগবাজার ১৯২ নাম্বার বাসার পাশে রেলওয়ের জমি দখল করে ছোট্ট টিন সেট রুম নির্মান করেছে মাদক ব্যবসায়ী আব্দুল গণি ওরফে সাব্বির তার ভাই ওমর ফারুক উভয়ের পিতা আব্দুল ওয়াহেদ মন্ডল। পুরো মগবাজার এলাকা মাদক নিয়ন্ত্রণ করে তারা দুই ভাই। গত ১৮ অক্টোবর নোটিশ দেন রেলওয়ে ভুমি অফিস। বাদীর আর্থিক সুবিধা না পাওয়ায় ১৪ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৪ টায় নজরুল ইসলাম প্রতিবেদকে মুঠো ফোনে জানান ১৫ নভেম্বর মগবাজার এলাকায় উচ্ছেদ করা যাবে না। গত বৃহষ্প্রতিবার রাজধানীতে বাসে নাশকতার ঘটনার কোথা উল্লেখ করে ওই দিন রেল সচিব সেলিম রেজার কাছে জান ভুমি কর্মকর্তা। সচিব মগবাজার এলাকায় উচ্ছেদ করতে নিষেধ করেছেন বলে জানান তিনি। নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা ১ টা ভেকুর ব্যবস্থা করেছি। বাকি ১ টা বাদীকে দিতে হবে। কানুন ইকবালের সাথে যোগাযোগ করার কথা বলেন তিনি। পরবর্তীর উচ্ছেদের তারিখ আগামী সোমবার জানানো হবে বলে জানান ভুমি ও ইমারত কর্তা। রেলওয়ের জমি উচ্ছেদে ডেপুটি কমিশনারের লাখ টাকা দাবির বিষয়ে রেলের মহাপরিচালক মো.শামসুজ্জামান বলেন, রেলের জায়গা সরকারি খরচে উচ্ছেদ হবে। একপ্রশ্নের উত্তরে ডিজি বলেন, অভিযোগকারীর আবেদন আমলে না নিলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এডিজি আই ডি এন মজুমদার বলেন, উচ্ছেদের ব্যবস্থা মন্ত্রণালয়ের আছে। রেলওয়ের জমি উচ্ছেদে অভিযোগকারী কেন খরচ দিবেন। অভিযোগকারী মাসুম বলেন, রেলের জমি দখল করে ফারুক এবং তার ভাই সাব্বির এই ছোট্ট রুমে বসবাস করে না। সারাদিন রুম তালাবদ্ধ থাকে। সন্ধ্যার পর দুই ভাই সারারাত মাদক সেবন করে এবং বেচা-কেনা করে ভোরে চলে যায়। ভুমি কর্মকর্তা নজরুলের আচরণে ক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারী। তারা বলেন, টাকা দিলে কাজ হয় না দিলে বছরের পর বছর ঘুরাবে।