জিহাদ হোসাইন,লক্ষীপুর প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলায় ৮নং দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নে চরলক্ষী গ্রামে আজ বুধবার(২৬ আগস্ট) সকালে নিজ বাড়ি থেকে রাসেল(২৫) নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে হাজীমারা ফাঁড়ি পুলিশ।
ঘটানাস্থলে হাজীমারা ফাঁড়ি পুলিশ পৌঁছানোর আগেই মাটিতে রাসেলের মরদেহ পাওয়া যায়।মৃত রাসেল সেকান্তর মাঝির দ্বিতীয় ছেলে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়,পারিবারিক সম্পত্তির ভাগ-ভাটোয়ারা নিয়ে ছোট মোখলেছুর রহমান(২০) ও পিতা সেকান্তর মাঝির(৬৫)সাথে গতকাল (২৪ আগস্ট) দুপুর আনুমানিক ১টায় ঝগড়া হয়।রাত ৯টা থেকে রাসেলকে খোজে পাওয়া যায়নি।পরে সকালে রাসেল মৃত্যুর খবর এলাকাবাসী জানতে পারে।
রাসেলের পিতা মো: সেকান্তর মাঝি(৬৫) বলেন,গত কয়েকদিন যাবত রাসেল জমি রেজিস্ট্রি লিখে দেয়ার কথা বললে আমি অস্বীকৃতি জানাই।গতকাল মঙ্গলবার (২৫আগস্ট) দুপুরে ১১টার কয়েকবার কথা কাটাকাটি হয়।রাত ৯টার পর থেকে রাসেলের কোনো খোজ-খবর পাওয়া যায়নি।সকালে আনুমানিক ৭টার দিকে তার লাশ বাগানে আমার ছোট মেয়ে দেখতে পায়।
এনিয়ে রাসেলের মা রেহানা বেগম(৫৫)
জানান,আমার ছেলের রাগ বেশী থাকায় গতকাল দুপুরে জমি-জমা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হয় আমার স্বামী ও ছোট ছেলের সাথে।
এদিকে রাসেলের স্ত্রী সুইটি(২১) বলেন,আমার সাথে ওনার দুই বছর আগে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়।স্বামীকে নিয়ে ভালোই দিন কাটছিল আমার।ওনী ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে কাজ করতেন।আমার স্বামীর সাথে জমি-জমা নিয়ে শ্বশুর ও দেবরের সাথে ঝগড়া হয় গত মঙ্গলবার(২৫ আগস্ট)।
রাসেলের বোনেরা জানান,আমরা আমাদের শ্বশুর বাড়িতে ছিলাম।ঘটনার সময় আমরা উপস্থিত ছিলাম না।পারিবারিকভাবে জানতে পারি ঘটনার আগে আমার বাবা ও ছোট ভাই মোখলেছুর রহমানের সাথে জমি নিয়ে ঝগড়া হয়েছিল।
স্থানীয় গ্রাম পুলিশ আব্দুল কাদের(৪০)জানায়,স্থানীয় জনসাধারণ আমাকে খবর দিলে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো:শাহজাহান মোল্লা'কে ফোন দিলে অতি দ্রুত মৃত রাসেলের বাড়িতে গিয়ে খোজ-খবর নেয়ার জন্য পরামর্শ দেন।সাথে সাথে স্থানীয় সময় আনুমানিক ৭টার দিকে সেকান্তর মাজীর বাড়িতে গিয়ে দেখি মৃত রাসেলের লাশ মাটিতে নামানো।তার বড় বোন ও মা লাশ নামিয়েছে বলে আমি জানতে পারি।
এনিয়ে স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য ফোকরুনেসা(৫৫) বলেন,রাসেলের গলায় ফাঁস দেয়ার কথা শুনতে পেরেছি।কেনো রাসেল ফাঁস দিয়েছে সেটা আমি জানিনা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো:শাহজাহান মোল্লা(৫৫)বলেন,কিছুদিন যাবত তার বাবার সাথে জমি লিখে দেয়ার বায়না করে রাসেল।এনিয়ে রাসেল তার বাবার সাথে গতকাল ঝগড়া করতে থাকে।পরে সকালে শুনি রাসেল গলায় ফাঁশ দেয়।
রাসেলের পরিবারের পক্ষ থেকে যদিও দাবি করা হয়,রাসেল গাছের সাথে গলায় দড়ি লাগিয়ে আত্নহত্যা করেছে।কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়, আজ বুধবার(২৬ আগস্ট) সকাল ১০টায় মৃত রাসেলের পায়ের গোড়ালি থেকে অঝড়ে রক্ত ঝড়তে দেখা যায়।সেই সাথে রাসেলের শরীরে বিভিন্ন ক্ষতের চিহ্ন স্পষ্টভাবে দেখা যায়।আশেপাশে গায়ের শার্ট,স্বল্প পরিমাণ লাইলনের চিকন দড়ি পরিত্যক্ত অবস্থায় দেখা যায়।শরীরের লজ্জা স্থানের পোশাক হিসেবে লুঙ্গি মুড়ানো ছিল,গাছের উচ্চতা,আর ফাঁসির দড়ির লক্ষণ বলে দেয় এটি আত্নহত্যা হত্যা নয়,পরিকল্পিত হত্যা।
রায়পুর থানার (ওসি) আব্দুল জলিল বলেন,লাশ ময়না তদন্তের জন্যে লক্ষীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy