মোঃ ইউসুফ, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরে মেঘনার ভয়াবহ ভাঙ্গন প্রতিরোধে স্বেচ্ছা-শ্রমের ভিত্তিতে বাঁধ নির্মান করছে স্থানীয় এলাকাবাসী। রামগতি ও কমলনগর এ দুই উপজেলার মেঘনার ভয়াবহ ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এসব ভাঙ্গন প্রতিরোধে প্রয়োজন বাঁধ নির্মাণের। কিন্তু উপায় না দেখে নিজেদের বসতভিটা রক্ষায় নদীতে জঙ্গলা বাধঁ নির্মান কাজ শুরু করেছে স্থানীয়রা। প্রতিদিন কয়েকশ মানুষ স্বেচ্ছায় শ্রমের ভিত্তিতে কমলনগর উপজেলার নাছিরগঞ্জ বাজারে এ বাঁধ নির্মান করা হচ্ছে। বর্তমানে প্রায় আধা কিলোমিটার বাঁধের কাজ চলছে। তিন কিলোমিটার পর্যন্ত এ বাঁধ নির্মান করবেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এ বাঁধ নির্মানের উদ্যোগ নিয়েছেন স্থানীয় স্বাস্থ্য র্কমর্কতা মো. জসিম উদ্দিন, রিয়াজ উদ্দিন, পল্লী চিকিৎিসক আবু তৈয়ব সবুজ, সমাজসেবক মাকছুদুর রহমান মানিক, আবু তাহের, ব্যবসায়ী বাহার হাওলাদার, মো. স্বপন, মো. মঞ্জু, আরিফ হোসেন, আনোয়ার হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ। আর এসব কাজে সার্বিক সহযোগিতা করছেন চরকালকিনি ইউপি চেয়ারম্যান মো.সাইফুল্লাহ। তাদের দাবী, তিন কিলোমিটার জঙ্গল বাধঁ দিতে ব্যয় হবে প্রায় ৫০ লাখ টাকা। ইতিমধ্যে আধাকিলোমিটার জঙ্গলা বাঁধ নির্মান করা হয়েছে। এ কাজে সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহবান জানান এ মেঘনার ভাঙ্গল কবলিত এলাকার হাজার হাজার মানুষ। এছাড়া নতুন করে ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে, কমলনগর উপজেলার সাহেবেরহাট, পাটওয়ারীরহাট, চরফলকন, মাতব্বরহাট, লুধুয়া ও রামগতি উপজেলার বাংলাবাজার, আসলপাড়া, জনতা বাজার,গাবতলী,বড়খেরী সদর উপজেলার চররমনী মোহনসহ ১০টি গ্রামের প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা। স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী মো. হুমায়ন কবির,স্বাস্থ্য র্কমর্কতা মো. জসিম উদ্দিন, রিয়াজ উদ্দিন, পল্লী চিকিৎিসক আবু তৈয়ব সবুজ, সমাজসেবক মাকছুদুর রহমান মানিকসহ অনেকে জানান,কেউ দিচ্ছেন নগদ অর্থ,কেউবা দিচ্ছেন বাঁশ-গাছ ও বেড়া। আবার যারা কিছুই দিতে পারছেনা। তারা দিয়ে যাচ্ছেন স্বেচ্ছায় শ্রম। এভাবে নির্মান করা হচ্ছে এ বাধঁ। প্রতিদিন প্রায় ১০০ যুবক প্রত্যক্ষভাবে বাঁধ নির্মাণ কাজে অংশ নিচ্ছেন। স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে যুবকেরা ব্যতিক্রমধর্মী এবং অনুকরণীয় এই উদ্যোগ গ্রহণ করায় এলাকাবাসী তাদের উৎসাহ দিতে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। চরলরেন্সের বাসিন্দা ও লক্ষ্মীপুর ভিআইপি গেষ্ট হাউজ এন্ড ট্যুরিজম এর পরিচালক মো. নিজাম উদ্দিন ও কমলনগর উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান ওমর ফাুরক সাগর জানান, গত কয়েক বছর ধরে ভাঙ্গছে তো ভাগছে নদী। বসতভিটা হারিয়ে কয়েক লাখ মানুষ নি:স্ব হয়েছেন। ভাঙ্গন প্রতিরোধে দ্বিতীয় প্রকল্পের কাজ শুরু করার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করেও কোন কাজের কাজ হয়নি। তাই নিজেদের বসতভিটা ও গ্রামকে রক্ষা করতে এলাকার যুবকেরা নিজেদের অর্থে ও স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে জঙ্গলা বাঁধের উদ্যোগ নেয়া হয়। তিন কিলোমিটার এ বাঁধের জন্য ব্যায় ধরা হয় প্রায় ৫০ লাখ টাকা। ইতিমধ্যে আধা কিলোমিটার বাঁধের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সবার সম্বলিত উদ্যোগে এ কাজ চলছে। সাড়াও পাওয়া গেছে ভালো। রামগতি-কমলনগর রক্ষা মঞ্চ কমিটির আহবায়ক সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি আবদুস সাত্তার পলোয়ান বলেন, সরকার দ্রুত দ্বিতীয় পর্যায় প্রকল্পের অনুমোদন দিয়ে নদী তীর রক্ষা বাধেঁর কাজ শুরু করার আহবান তিনি। নদী তীরের বাসিন্দারা ভাঙ্গন প্রতিরোধে মানববন্ধন,বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা কর্মসুচি পালন করে আসছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকায় ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। গত বছরে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।। রামগতি উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মেজবাহ উদ্দিন ভিপি হেলাল ও কমলনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও যুবলীগের আহবায়ক মেজবাহ উদ্দিন বাপ্পী এবং নির্বাহী কর্মকর্তাপ মো. মোবারক হোসেন জানান, ইতিমধ্যে জঙ্গলা বাঁধ পরিদর্শন করা হয়েছে। এ বাঁধ নির্মান করতে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। সরকার দ্রুত দ্বিতীয় পর্যায় প্রকল্পের কাজ শুরু করার দাবী জানান তারা। তবে জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল বলছেন,ইতিমধ্যে ভাঙ্গন প্রতিরোধে কাজ করা হচ্ছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকল্পের ১৬ কিলোমিটার বাধের জন্য ১৭শ ৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy