জিহাদ হোসাইন,লক্ষ্মীপুর:
বৈশ্বিক মহাদুর্যোগ করোনাকালীন সময়েও থেমে নেই লক্ষীপুরের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অনিয়ম ও দুর্নীতি।
অনুসন্ধানী রিপোর্ট জানা যায় যে, দালাল ছাড়া কোনভাবেই ব্যাক্তি উদ্যোগে পাসপোর্ট করা যায় না।অসম্পূর্ণ তথ্য, ফরম কাটাছেঁড়া, হাতের লেখা ভালো না।এমন অজুহাত দেখিয়ে ব্যাক্তি উদ্যোগে আসা পাসপোর্ট গ্রহীতাদের ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে।
এতে করে হয়রানি শিকার হচ্ছে সাধারণ পাসপোর্ট গ্রহীতারা। বৈদেশিক রেমিটেন্স যোদ্ধাদের পাসপোর্ট রিনিউতেও পোহাতে হচ্ছে নানা দুর্ভোগ। দিনের-পর-দিন ধর্ণা দিয়েও কাজ হচ্ছে না এইসব রেমিটেন্স যোদ্ধাদের। সকালে এসে সারাদিন পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্টের আবেদন নিয়ে এক রুম থেকে আরেক রুমে গিয়ে অপেক্ষা করে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে যেতে হয় সাধারণ পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের।
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস লক্ষ্মীপুরের নৈশ প্রহরী থেকে শুরু করে আনসার পর্যন্ত পাসপোর্ট দালালীতে সক্রিয় এই দালাল চক্র।জানা গেছে উপসহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম নিজেই টাকা ছাড়া আবেদন ফরমে সাক্ষর করেন না। যেসব দালালের কাছ থেকে এই কর্মকর্তা উপঢৌকন গ্রহণ করেন, সেইসব দালালের মাধ্যমে আসা আবেদন ফরমে গোপন সংকেত দেয়া থাকে। সেগুলোতে তিনি নির্দ্বিধায় স্বাক্ষর করেন।
দালাল বেষ্টিত আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস লক্ষ্মীপুর। উপসহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম যেসব দালালের আবেদন ফরম নির্দ্বিধায় স্বাক্ষর করেন তারা হলেন- পাসপোর্ট অফিসের পরিচ্ছন্নতাকর্মী বাবুল, আনসার সদস্যদের মধ্যে পি সি জসিম ও সাইফুল।রায়পুরের দালালদের মধ্যে হিমাংশু, সোহেল, কালা অহিদ। রামগঞ্জের দালালদের মধ্যে সাইফুল, রাব্বানী, বিল্লাল, গৌতম, মোহাম্মদ।কমলনগরের দালাল অনিমেষ ও আজাদ। চন্দ্রগঞ্জের দালাল ফয়েজ, মান্দারীর দালাল হারুন, দিঘলির দালাল আনোয়ার, লক্ষ্মীপুর সদরের দালাল কাশেম, আরিফ ও আবদুল খালেক।
এরা বিভিন্ন স্থান থেকে পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের আবেদন সংগ্রহ করে নির্ধারিত ফি'র চেয়ে দুইতিনগুণ বেশি টাকা হাতিয়ে নেয়। পাসপোর্ট প্রত্যাশীরা ঝামেলামুক্ত নির্দ্বিধায় সহজে পাসপোর্ট পাওয়ার আশায় দালালের খপ্পরে পা দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দালাল বলেন,'আমরা বিভিন্ন রেটে পাসপোর্ট করি। এতে নির্ধারিত ফি'র বাহিরেও টাকা নিতে হয় গ্রাহকের কাছ থেকে।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'সাড়ে ৫ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৯ হাজার, ১০ হাজার সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকি।গ্রাহক দ্রুত চাইলে আমরাও খরচ সেভাবেই চাই।
পাসপোর্ট প্রত্যাশী মহাদেবপুর থেকে আসা মোঃ শাহীন বলেন, '৯ মাস আগে আমি পাসপোর্ট আবেদন জমা দিয়েছি এখনো পাইনি। এর মাঝে বহুবার অফিসে গেছি।কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি।'
আরেক পাসপোর্ট প্রত্যাশী সিএনজি চালক আবুল হোসেন বলেন-' আমার ছেলের জন্য ১৫ হাজার টাকায় আনসার সাইফুল ইসলামকে দিয়ে পাসপোর্ট করেছি এই করোনার ভেতরে।'
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস লক্ষ্মীপুরের উপসহকারী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন -'আমি ও আমার অফিস দালালমুক্ত।আমার অফিসে দালালের প্রবেশ ককড়াকড়িভাবে নিষিদ্ধ।'
আরেক প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন- 'অফিসে কোন টাকা পয়সা লেনদেন হয় না।এটা আমি বিলবোর্ড আকারে তৈরি করে ঝুলিয়ে রেখেছি।'
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy