1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
লাগামহীন চালের বাজার,লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দাম
বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
রাজশাহীতে সরকারি জায়গা দখল করে বিএনপি নেতাদের অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ নড়াইলে ডিবির অভিযানে ১০০ পিস ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার সাভারে সান্তনা (৩৫) নামের একজন গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার শেখ হাসিনাস সহ পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে আনতে রেড অ্যালার্ট নোটিশ জারি করতে প্রসিকিউশনের চিঠি লোহাগড়ায় জয়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুমন গ্রেফতার সাতক্ষীরা জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত ডিবি পুলিশের অভিযানে দুই শ বোতল ফেন্সিডিল সহ আটক- দুই আরডিএ’কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে,অন্যের জায়গায় ইমারত নির্মাণের অভিযোগ পাটকেলঘাটা  বাজার বণিক সমিতির  উদ্যোগে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মত বিনিময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি সাবেক এমপি হাবিব

লাগামহীন চালের বাজার,লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দাম

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১০ আগস্ট, ২০২০, ১১.৪৩ এএম
  • ২৩৮ বার পঠিত

হুমায়ুন কবির:

বোরো মৌসুম শেষ হওয়ার পর দেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে চালের দাম। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম বস্তাপ্রতি পাইকারিতেই বেড়েছে ৭৫ থেকে ১০০ টাকা। খুচরা পর্যায়ে বেড়েছে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। তাহলে কি বোরো মৌসুমে উৎপাদিত ধান শেষ হয়ে গেছে?

কিন্তু বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) বলছে, দেশে চালের অভাব নেই। নভেম্বর শেষে চাহিদা মিটিয়েও সাড়ে ৫৫ লাখ মেট্রিক টন চাল উদ্বৃত্ত থাকবে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদ উপলক্ষে বেশ কয়েক দিন পরিবহন ও পাইকারি বাজার বন্ধ ছিল। বন্যার সুযোগ নিয়েও কৃষক ও আড়তদার পর্যায়ে ধান মজুদ করে রাখার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এসব কারণে চালের দাম বাড়ছে।

চালকল মালিকরাও বলছেন, বেশি দামের আশায় কৃষক ও আড়তদার পর্যায়ে ধান মজুদ হয়ে গেছে। বন্যার কারণেও অনেক হাটে ধান আসছে কম। এতে ধানের দাম বাড়ছে, যার প্রভাব পড়েছে চালের দামে।

চালকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাস্কিং মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুর রশিদ রবিবার গণমাধ্যমকে বলেন, মিল পর্যায়ে ঈদের সপ্তাহখানেক আগে চালের বস্তা (৫০ কেজি) ছিল দুই হাজার ৪৭৫ টাকা, ঈদের সময় তা বেড়ে হয় দুই হাজার ৫০০ টাকা। ঈদের পর কয়েক দিনে আরো ২৫ টাকা বেড়ে দুই হাজার ৫২৫ টাকায় উঠেছে। এই দাম এক-দুই সপ্তাহ পর্যন্ত আরো কিছুটা বাড়বে। কারণ এখন যাঁরা ধান কিনছেন, সেগুলোর দাম আগের চেয়ে আরো বেশি। এসব ধান থেকে প্রতি বস্তা মিনিকেট চাল করতে মিলারদেরই খরচ হচ্ছে দুই হাজার ৬০০ টাকার ওপরে।

বোরো মৌসুমে এত ধান উৎপাদন হয়েছে। সরকারি গুদামেও লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে ধান-চাল জমা হয়নি। তা হলে এত ধান গেল কোথায়? এমন প্রশ্নের উত্তরে চালকল মালিকদের নেতা রশিদ দাবি করেন, বোরো ধানের উৎপাদন কমপক্ষে ১০ শতাংশ কম হয়েছে। আগাম বন্যার আশঙ্কায় হাওরের ধান তোলা নিয়ে তড়িঘড়ি ছিল। এই কারণে ওই দিকে মনোযোগ দেওয়া হয় বেশি। করোনার কারণেও শ্রমিক সংকটে পঞ্চগড়, নওগাঁসহ অনেক এলাকায় সময়মতো ধান কাটতে পারেনি কৃষক। অনেক ধান নষ্ট হয়েছে।

তাঁর দাবি, বর্তমানে ভালো মানের প্রতি মণ (৩৭.৩২ কেজি) ধান কিনতে হচ্ছে এক হাজার ১৬০ টাকায়। তার সঙ্গে ৩০ টাকা গাড়িভাড়া ও ৫০ টাকা মিল খরচ দিয়ে ৪০ কেজি ধানের দাম পড়ে এক হাজার ৩২৯ টাকা। ৪০ কেজি ধান থেকে চাল হয় ২৪ কেজি। সে হিসাবে প্রতি কেজি চালের উৎপাদন খরচ পড়ে ৫৫ টাকার ওপরে।

কিন্তু ব্রি প্রতিবেদন বলছে ভিন্ন কথা। প্রতিষ্ঠানটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চাল উৎপাদন খরচের ক্ষেত্রে মৌসুমে বিদ্যমান সর্বনিম্ন দামে মিল মালিকরা যে ধান কেনেন সেটি থেকে কেজিপ্রতি চাল উৎপাদনে ২৭ দশমিক ৮৬ টাকা খরচ হয়। অন্যদিকে সর্বোচ্চ দাম বিবেচনায় কেজিপ্রতি চাল উৎপাদনে ৩৫ দশমিক ৮০ টাকা খরচ হয়। গড়ে এক কেজি চাল উৎপাদনে ৩২ দশমিক ৩৪ টাকা ব্যয় হয়। বিদ্যুৎ বিল, যানবাহন ও শ্রমিক খরচ বাড়ার কারণে এই বছর ৮.৩৫ শতাংশ খরচ বাড়লেও সরকার ঘোষিত দামে চাল বিক্রি করে মিল মালিকরা লাভবান হচ্ছেন। ব্রির এই জরিপ প্রতিবেদনটি গতকাল এক ভার্চুয়াল সেমিনারে প্রকাশ করা হয়।

পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদ উপলক্ষে কয়েক দিন গাড়ি ও পাইকারি বাজার বন্ধ থাকায় বস্তায় ২৫ থেকে ৫০ টাকা প্রতিবছর বাড়লেও পরে তা কমে যায়। বছরের শুরুতেই চালের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির তেমন কোনো কারণ নেই। তবে বন্যার একটি আতঙ্ক থাকতে পারে। কিন্তু বন্যা তো সারা দেশে হয়নি।

বাংলাদেশ রাইস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রনি রোববার গণমাধ্যমকে বলেন, ঈদের আগে ও পরে সরু ও মোটা সব ধরনের চালের দামই কেজিতে দুই টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মিনিকেট চাল ঈদের সপ্তাহখানেক আগে ছিল প্রতি কেজি ৪৯-৫০ টাকা; পরে তা বেড়ে ৫০-৫১ টাকা হয়েছে। এখন ৫১-৫২ টাকা। ব্রি-২৮ চাল আগে ৪০-৪২ টাকা ছিল। কয়েক দফায় বেড়ে এখন ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পাইকারিতে।

রনি বলেন, সরকারি গুদামে ধান-চাল ওঠেনি। তার ওপর মাস দুয়েক পর আমন উঠবে। ফলে ধানের সংকট থাকার কথা নয়।

খুচরা বাজারে গত শুক্রবার মাঝারি মানের মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে দুই হাজার ৬০০ থেকে দুই হাজার ৭০০ টাকা বস্তা (৫০ কেজি) বা ৫৩-৫৪ টাকা কেজি। ঈদের আগে তা দুই হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা ছিল বলে মানিকনগর বাজারের মরিয়ম স্টোরের বিক্রেতা আলমগীর জানান। তিনি বলেন, ঈদের পর চালের দাম বেড়েছে। ভালো মানের ব্রি-২৮ চাল ঈদের আগে ছিল কেজি ৪৬-৪৮ টাকা, আর এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ৪৮-৫০ টাকা দরে। ৫৪ টাকার নাজিরশাইল এখন ৫৮ টাকা কেজি। মোটার মধ্যে স্বর্ণা দুই টাকা বেড়ে ৪০ টাকা কেজি। অন্যদিকে পাইজাম ৪৬ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুসারে, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট আউশ, আমন ও বোরো মিলে প্রায় তিন কোটি ৮৭ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি বছর প্রায় দুই কোটি চার লাখ ৩৬ হাজার টন বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, যা মোট উৎপাদন লক্ষ্যের ৫৩ শতাংশ।

ব্রির জরিপ তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর শেষে দেশে চাহিদা মিটিয়ে সাড়ে ৫৫ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত থাকবে। এই বছর (২০১৯-২০) সারা দেশে ধানের ফলন গড়ে ৮.৪ শতাংশ বেড়েছে। গত বছর (২০১৮-১৯) মোট ধান উৎপাদন হয়েছিল তিন কোটি ৭৩ লাখ ৬৩ হাজার মেট্রিক টন। এবার চালের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৩.৫৪ শতাংশ। এর মধ্যে বোরো মৌসুমে চালের উৎপাদন ৩.৫৮ শতাংশ বেড়ে দুই কোটি দুই লাখ ৬০ হাজার টনে দাঁড়িয়েছে।

বোরো মৌসুমে ২০ লাখ মেট্রিক টন ধান-চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। ৩৬ টাকা কেজি দরে মিলারদের কাছ থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল, ৩৫ টাকা কেজিতে দেড় লাখ টন আতপ চাল এবং সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ২৬ টাকা কেজিতে আট লাখ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা আছে। কিন্তু দামসহ নানা অজুহাতে মিলাররা সরকারি গুদামে চাল না দেওয়ায় আমদানির ঘোষণা দেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়। খাদ্যমন্ত্রী গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন যে ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদনও দিয়েছেন।’

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Comments are closed.

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews