গত ২০১১ সালের ৫ জুন কলেজ শাখার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ শহিদুর রহমান অবসর গ্রহণ করলে পরদিন সহকারী অধ্যাপক শরওয়ার আলম প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহন করেন। উক্ত সময় গঠিত প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের হলে নিম্ন আদালত ও মহামান্য হাইকোর্ট পরিচালনা পর্ষদের কার্যক্রম স্থগিতাদেশ প্রদান করেন।
আদালতের নির্দেশ অমান্য করে উক্ত পরিচালনা পর্ষদের স্বাক্ষরে পুর্বের পদে ইস্তেফা না দিয়ে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে একাধিক তৃতীয় বিভাগের শরওয়ার আলম অতিগোপনে গত ২০১২ সালের ২১ জানুয়ারী অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। অধ্যক্ষ হিসেবে ২০১২ সালের ২১ জানুয়ারি যোগদান দেখালেও একই সালে আগস্ট মাস পর্যন্ত পুর্বের পদের বেতন ভাতাদি উত্তোলন করে আতœসাৎ করেন। বিরতিহীন ভাবে সহকারী অধ্যাপক হতে অধ্যক্ষ পদে বেতন ভাতাদি গ্রহণ করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অধ্যক্ষ পদের ১২ বছরের এমপিওভুক্তের অভিজ্ঞতা থাকা আবশ্যক হলেও তার অভিজ্ঞতা ১১ বছরের নিচে। এ ছাড়াও পরিপত্র অনুযায়ী অধ্যক্ষ পদে কোন ভাবেই তৃতীয় বিভাগ গ্রহন যোগ্য নয়। কিন্তু শরওয়ার আলম এসএসসি ও স্নাতকে তৃতীয় বিভাগ নিয়েও অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ বাগিয়ে নেন। এভাবে সরকারী পরিপত্রকে বৃদ্ধাঙ্গালী দেখিয়ে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ নিয়ে সরকারি বেতনভাতাদি আতœসাৎ করেন।
অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগের পরে যুক্তিবিদ্যা বিষয়ের প্রভাষক সতীশ চন্দ্র দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকলেও দুই লাখ টাকার বিনিময়ে ওই প্রভাষককে সম্পুর্ন বেতন প্রদান করেন অধ্যক্ষ শরওয়ার আলম। একই সাথে মর্জিনা পারভিন নামের একজনের কাছে ৯ লাখ টাকা নেয়ার পরেও অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ দেননি। রবিউল ইসলাম নামে একজনকে ১২ লাখ টাকায় অফিস সহকারী পদে নিয়োগ দিয়ে আরও ২ লাখ টাকা দাবি করেন অধ্যক্ষ শরওয়ার আলম। দাবিকৃত টাকা না দেয়ায় তার বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট বন্ধ করেন অধ্যক্ষ। নিয়োগের নামে অধ্যক্ষ শরওয়ার আলমের বিরুদ্ধে অর্থ বাণিজ্য এবং স্বেচ্ছারীর অভিযোগ তুলে স্থানীয় ও ভুক্তভোগিরা পরিচয় গোপনের শর্তে দুর্নীতি দমন কমিশনে একাধিক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের উপ পরিচালক মাসুদুর রহমান স্বাক্ষরীত ০০.০১.০০০০.১০৯.৩৮.০০১.২০-৩৩ নং স্মারকে ৭ জানুয়ারী একটি পত্র পাঠিয়ে লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত করে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ই-মেইলে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।
দুদকের নির্দেশনা পেয়ে তদন্ত শুরু করেন জেলা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। ২৭ জানুয়ারি আদিতমারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নিজ দফতরে অভিযোগের সপক্ষে একাধিক ব্যাক্তির স্বাক্ষ্য গ্রহন করেন।
নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টি অস্বীকার করে মহিষখোচা বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ শরওয়ার আলম বলেন, আমার এসএসসি ও স্নাতক তৃতীয় বিভাগ হলেও নিয়োগ তৎকালীন বিধি সম্মত ভাবে হয়েছে। কয়েকবার অডিট হয়েছে, কোন আপত্তি ছিল না। এখন শিক্ষ অফিস তদন্ত করছে। নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টি প্রমান করতে পারবে না বলেও দাবি করেন তিনি।
আদিতমারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আরিফ মাহফুজ বলেন, দুদকের পত্রের আলোকে তদন্ত শুরু করেছি। যথাসময়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম আজাদ বলেন, দুদকের প্রধান কার্যালয়ের পত্রের নির্দেশনা মোতাবেক সনদ জাল ও জালিয়াতির মাধ্যমে অধ্যক্ষ নিয়োগের বিষয়টি জেলা শিক্ষা অফিস তদন্ত করছে। অধ্যক্ষ শরওয়ার আলমের বিরুদ্ধে অনেকগুলো অভিযোগ এসেছে। তাই ওই অধ্যক্ষের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উপজেলা শিক্ষা অফিসকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। যথাসময়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy