প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ১৯, ২০২৪, ৭:৩৩ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জানুয়ারী ১৬, ২০২১, ৮:৫৯ পি.এম
লালমনিরহাট কালীগঞ্জের বাঁশের সাকোই যেন ভরসা চার গ্রামের মানুষের!
রেখা মনি,নিজস্ব প্রতিবেদক
কবি শেখ ফজলল করিমের স্মৃতি বিজরিত কাকিনা ইউনিয়ন।এই ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছেন।
একটি সেতুর অভাবে তিন মুক্তিযোদ্ধার পরিবারসহ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষেরর দুর্ভোগ আজ চরমে। সেতুটি নির্মাণ হবে সেই অপেক্ষায় আছেন সূর্যসন্তানেরা।
জানা যায়,লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের পূর্ব রুদ্রেশ্বর মন্ডল পাড়া এলাকায় প্রবাহিত তিস্তার শাখা নদীর উপর বহুবছর পূর্বে নির্মিত একটি বাঁশের সাঁকো। দেশ স্বাধীনের পর থেকে এই শাখা নদীর ওপর এলাকাবাসি নিজ অর্থায়নে প্রতিবছর বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেই যাতায়াত করে আসছেন। সেই বাঁশের সাঁকোটিও এখন নড়বড়ে অবস্থা।এই সাকো দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে অনেকে ক্ষতিগ্রস্তও হয়েছেন।
শনিবার ১৬জানুয়ারী সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদী পারাপারে একমাত্র মাধ্যম একটি পুরাতন বাঁশের সাঁকো। সাঁকোটির ছবি তুলতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে থেকে বলা হচ্ছিল ছবি তুলে কি করবেন? আমাদের দুঃখ দুর্দশা দেখার মত কেউ নেই। সাঁকোটির ছবি তোলা অবস্থায় কাছে এসে দাঁড়িয়েছেন ৭০/৭৫ বয়সের এক বৃদ্ধ।
তার সঙ্গে কথা বলতেই তিনি আক্ষেপ করে বলেন,দেশ স্বাধীন করেছি ঠিকই কিন্তু স্বাধীন দেশের স্বাদ পেলাম না। পরিচয় জানতে পেলাম তিনি একজন দেশের সূর্যসন্তান। নাম তাঁর ক্বারি মোঃ আব্দিল কুদ্দুস। তিনিসহ অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক আজাহারুল ইসলাম ও জানু মন্ডল তিন জনে একই গ্রামের বাসিন্দা এবং তিনজনই মুক্তিযুদ্ধে অংশহণ করেছিলেন । বীর মুক্তিযোদ্ধারা আরো বলেন,সৃষ্টিকর্তা আমাদের তিনজনকেই এখনো বেঁচে রেখেছেন।
এই বৃদ্ধ বয়সে এসেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হতে হয়। জানি না আমাদের জীবদ্দশায় এখানে একটি সেতু হবে এবং তা দেখে যেতে পারবো! এলাকাবাসি সূত্রে জানা যায়, ৪ গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রায় কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। ঐ এলাকার সওদাগর মন্ডল, নুর ইসলাম,মোজাম্মেল হক সোনা মিয়াসহ আরও অনেকে বলেন, নির্বাচনের সময় ব্রিজ করে দিবে বলে সবাই আশ্বাস দিয়ে ভোট নিয়ে যায়। এলাকাবাসি ভোট দেয় প্রতিনিধি নির্বাচিত হয় কিন্তু ব্রিজ আর হয় না! জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করে শুধু প্রতিশ্রুতিই পাওয়া গেছে কিন্তু বাঁশের সাঁকোটির পরিবর্তে এখানে আজ পর্যন্ত একটি সেতু নির্মান করা হয়নি। কবে নির্মাণ হবে তার কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারেননি কেউই। তবে এখানে একটি সেতু নির্মাণ করার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের বার বার ডেকে এনে দেখানোর পরেও সেতু র্নির্মানের নেওয়া হয়নি কোনো পদক্ষেপ। তারা শুধু প্রতিশ্রুতিই দিয়ে গেলেন কিন্তু কেউ কথা রাখলেন না।
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আহমেদ সাংবাদিকে বলেন, বিষয়টি জানা ছিলো না তবে যেহেতু আপনার মাধ্যমে জানতে পেলাম দু-একদিনের মধ্যে সরেজমিনে গিয়ে দেখে সেতু নির্মাণের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহাবুবুজ্জামান আহমেদ বলেন, যত দ্রত সম্ভব জনগনের কষ্ট লাঘবে দ্রুত সেখানে ব্রিজ নির্মাণ করে দেওয়া হবে।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy