1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
শহীদদের সুনির্দিষ্ট তালিকা নেই'৫০ বছরেও মেলেনি স্বীকৃতি'শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের
শনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ০৯:৩৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
চট্টগ্রামে ১৪ পিছ বিদেশী স্বর্নের বার সহ আটক ১ সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ছেড়ে দিয়েছে আদালত আওয়ামীলিগের সময়ে আওয়ামীলিগের নেতা , বিএনপির সময়ে বিএনপির নেতা সেজে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা ! নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে এলজিইডি কুমিল্লার মতবিনিময় কলেজ ছাত্র আব্দুল আলীম হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ! সাভারে বিরুলিয়ায় নিহত নারী ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা : স্বামী গ্রেফতার । ফেসবুকে মানহানিকর লেখা প্রচারের অভিযোগ এনে এক কোটি টাকার মানহানি এবং হত্যা চেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়েছে। কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ সংবাদ সম্মেলন এক নারী। চোর সদস্যকে পুলিশে দেয়ায় কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার মাধবপুর ইউপি সদস্যের বাড়িতে পালতক চোরদের হামলা ও মারধর, সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে গুরুতর আহত এক সাংবাদিক। জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস ২৮ এপ্রিল 

শহীদদের সুনির্দিষ্ট তালিকা নেই’৫০ বছরেও মেলেনি স্বীকৃতি’শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৩ মার্চ, ২০২১, ৮.৩১ পিএম
  • ২৯৯ বার পঠিত
নিরেন দাস,জয়পুরহাটঃ-
শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পায়নি জয়পুরহাটের অনেকেই। জেলায় সর্ব স্বীকৃত শহরের জিরো পয়েন্টে অবস্থিত শহীদ ডাঃ আবুল কাশেম ময়দান। সেখানে সরকারি-বেসরকারি,
জাতীয়, স্থানীয় বিভিন্ন কর্মসূচী পালন হলেও রাষ্ট্রীয় ভাবে কোথাও নেই তাঁর নাম, ছবি বা পরিচয়। শহীদ ডাঃ আবুল কাশেম মুক্তিযুদ্ধে সংগঠক, বুদ্ধিজীবি হওয়ায় তাকে হত্যা করে পাকসেনারা।
কিন্তু স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছরেও তাঁর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি হয়নি। এমনই অনেক শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধারা স্বীকৃতি না পাওয়ায় ক্ষুদ্ধ জয়পুরহাটের মুক্তিযোদ্ধারাসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। শহীদদের সুনির্দিষ্ট তালিকা নেই বলে জানান স্থানীয় প্রশাসন।
১৯৭১ সালে ২৬ শে জুলাই মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও বুদ্ধিজীবি শহীদ ডাঃ আবুল কাশেমকে হাত-পা বেঁধে স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকাররা জয়পুরহাট শহরের দেবীপুর এলাকার বাড়ি থেকে সকালে জয়পুরহাট রেলস্টেশনে নিয়ে যায়। সেখানে গাছের সাথে বেঁধে ভোর রাত পর্যন্ত নির্যাতন করে।
পরে মাথায় কাপড় বেঁধে সদরের কুঠিবাড়ি ব্রীজ এলাকায় নিয়ে গিয়ে চোখ, হাতের নখ, দাঁত তুলে নির্যাতনের পর নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে। একইভাবে সদর উপজেলার দোগাছীর ইয়াকুব আলী মন্ডলকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে শেখ মুজিবের দল করার কারণে পাকসেনারা তাদের জীপের পেছনে দড়ি দিয়ে বেঁধে ছেঁচড়ায়ে প্রায় ১৭ কি.মি ঘুরে ভারত সীমান্তের
চকবরকতের পাগলা দেওয়ান এলাকায় বন্দুকের বেয়নেটের খোঁচায় খোঁচায় মৃত্যু নিশ্চিত করে এবং সেখানে অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের লাশের সাথেই গণকবর দেয়।
শহরের খনজনপুর মিশনের সাইকেল মেকার অমর সরকার বুড়ো, নিজে লোহার কামান তৈরি করে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। তার পরিবার জানান, সেই কামানটি রাজধানীর জাতীয় জাদু ঘরে সংরক্ষণ আছে। কিন্তু তিনি বেঁচে থাকা অবস্থায়,এমনকি মৃত্যুর পরও মেলেনি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি।
তারা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। শহীদ ডাঃ আবুল কাশেম সহ অনেক শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের কবরগুলোও রাষ্ট্রীয়ভাবে সংস্কার না করায় জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। শহরের দক্ষিণ দেওয়ান পাড়ার মৃত আনজীর হোসেন চাঁদ মুক্তিযুদ্ধের সময় তার গ্রামের বাড়ি বগুড়া এলাকার বিভিন্ন অঞ্চলে সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানান, আ’লীগের দুর্সময়ে ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জয়পুরহাট জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
কিন্তু তিনিও স্বীকৃতি পাননি। তার এতিম সন্তানরাও মানবেতর জীবনযাপন করছেন। শহীদ ডাঃ আবুল কাশেমের পরিবারের পক্ষে কাজী আসাদুজ্জামান জয় শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতির জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করলেও এখনও মেলেনি তাঁর স্বীকৃতি। এমনই অভিযোগ অনেক শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের।
শহীদ ডাঃ আবুল কাশেমের মেয়ে লাইলী বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার বাবা যুদ্ধের সময় শেখ মুজিবের আ’লীগ করতো। আ’লীগ করা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করায় পাকবাহিনীরা আমার বাবাকে মেরে ফেলে। সরকারের কাছে আমার বাবার স্বীকৃতি চাই।
শহীদ ইয়াকুব আলী মন্ডলের নাতী আরিফুর রহমান রকেট বলেন, ১৯৭১ সালে পাকসেনারা আমার দাদাকে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। কিন্তু এখনও শহীদের স্বীকৃতি পায়নি। যারা শহীদ হয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোক এবং মুক্তিযুদ্ধ করা লোক এদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃত বা তালিকা নেই। তাঁদের সকলের তালিকা হওয়া দরকার।
অমর সরকার বুড়োর ছেলে পুলন সরকার বলেন, আমার বাবা যুদ্ধের সময় লোহা দিয়ে কামান বানিয়ে যুদ্ধ  করেছিল। সেই কামান জাতীয় যাদু ঘরে সংরক্ষিত আছে। কিন্তু এখনো মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃতি পায়নি। বাবার মৃত্যুর পর আমাদের পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে।
মৃত আনজীর হোসেন চাঁদের ছেলে সাব্বির হোসেন বলেন, বাবার মৃত্যুর আগে শুনেছি, আমার দাদার বাড়ি বগুড়া জেলায়। সেখানে থেকে মুক্তিযুদ্ধ করেছিল বাবা। সবাই বাবাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেই জানে। কিন্তু আজও তাঁর স্বীকৃতি হয়নি। আমার মা-বাবা মৃত্যুর পর খুব কষ্টে টিনের আছরার ঘরে জীবনযাপন করছি।
সাংস্কৃতিক কর্মী টপি এনামুল হক বলেন,ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি, শহীদ ডাঃ আবুল কাশেম ময়দান। আমরা এখানে চেতনার চাষ করি।সরকারি-বেসরকারি, স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক,
সাংস্কৃতিক সংগঠনের নানা কর্মসূচী এখানে হয়।
শহীদ  ডাঃ আবুল কাশেম একজন বুদ্ধিজীবি। তাঁর স্মৃতি ধরে রাখার জন্য এই ময়দানে কিছুই নেই। তাঁর জীবনী স্থাপন সহ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া দরকার।
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা জাকারিয়া হোসেন মন্টু, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহাফুজাল হক বাসুনিয়া সহ অনেকেই আক্ষেপের সাথেই বলেন, শহীদ ডাঃ আবুল কাশেম, ইয়াকুব আলী মন্ডলকে পাকবাহিনীরা নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। কিন্তু তাঁদের স্বীকৃতি হয়নি। এছাড়াও অনেকেই শহীদ হয়েছে, যুদ্ধ করেছে তারা স্বীকৃতি পায়নি, তাদের স্বীকৃতি দেওয়া হোক।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আফসার আলী জানান, অনেক শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধারা এখনো স্বীকৃতি পায়নি। শহীদ ডাঃ আবুল কাশেম, শহীদ ইয়াকুব আলী সহ অনেকের স্বীকৃতি পাওয়ার দরকার ছিলো। জয়পুরহাট জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর  মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ আলী জানান, যারা শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ আছে, আমার অন্তরে অন্তস্থল থেকে দাবি করবো এই মানুষগুলোর শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মূলায়ন হোক।
জয়পুরহাট সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মিল্টন চন্দ্র রায় দৈনিক সূর্যোদয় কে বলেন, শহীদদের তালিকার ব্যাপারে সরকারি ভাবে কোন নির্দেশনা পেলে অবশ্যই তা বাস্তবায়ন করা হবে এবং শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রাষ্ট্রের যেকোন নির্দেশনা পেলেই স্থানীয়ভাবে দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews