আবুল কালাম আজাদ (রাজশাহী) :
করোনার কারণে দীর্ঘ ১৭ মাস বন্ধ থাকার পর রোববার খুলেছে প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত না হলেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীর পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে। এ কারণে শিক্ষার্থীরা রাজশাহীমুখী হয়েছেন। অনেকে চলেও এসেছেন। আর এতে সচল ও মুখরিত হতে শুরু করেছে শিক্ষানগরী রাজশাহী।
রাজশাহী নগরের সাহেব বাজার এলাকার ফুটপাতে প্লাস্টিকের জিনিসপত্র বিক্রি করেন নগরের ভাটাপাড়া এলাকার রাজন। রোববার সকালে শুভর দোকান থেকে মেসের খাবারের প্লাস্টিকের বাটি কিনছিলেন দুজন শিক্ষার্থী। তাদের একজন বললেন, ‘মামাদের (ব্যবসায়ীদের) আর চিন্তার কারণ নেই। আমরা এসে গেছি।’
বাইরের মানুষ ছাড়া রাজশাহী শহর অচল। এটা গত দেড় বছর ধরেই অচলই ছিল। কয়েক দিন ধরে শিক্ষার্থীরা রাজশাহীতে আসছেন। মেসও খুলে যাচ্ছে।
রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলীর মতে, দেড় বছর ধরে রাজশাহীর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা খুবই অসহায় জীবন যাপন করেছেন। বিধিনিষেধের মধ্যে দোকানপাট খোলার সুযোগ এলেও এখানকার ক্রেতাদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী।শিক্ষার্থীনির্ভর এই শহরে তাঁরা না থাকায় ব্যবসায়ীরা আর ব্যবসা করতে পারেননি। এবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আয়োজনে শিক্ষার্থীরা রাজশাহীতে আসছেন। তাঁরা কেনাকাটাও শুরু করেছেন।
রাজশাহী নগরের সোনাদীঘির সমবায় মার্কেট। এখানে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় লেখাপড়ার সামগ্রী বিক্রি হয়। রোববার সকালে এই মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় খাতা-কলম, জ্যামিতি বক্স, প্র্যাকটিক্যাল খাতা, রংপেনসিল কিনছেন। সঙ্গে তাঁদের অভিভাবকেরাও এসেছেন।
এই মার্কেটের ব্যবসায়ী আয়নাল হক বলেন, তাঁরা বিক্রি করেন শিক্ষাকার্যক্রমে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। দেড় বছরে খুব বেশি বিক্রি হয়নি। গত সপ্তাহ থেকে বিক্রি বেশ বেড়ে গেছে। গ্রামের ছোট ছোট দোকানের জন্যও ব্যবসায়ীরা কলম-খাতা বেশি করে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
অটোরিকশাচালক লিটন মিয়ার (৪০) বাড়ি নগরের কাজলা এলাকায়। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা না থাকায় গত দেড় বছর অটোরিকশা চালিয়ে খুব বেশি আয় করতে পারেননি। সংসার চলেছে খুব কষ্টে। বিধিনিষেধে রাস্তায় বের হতে না পারলেও কারও কাছে তিনি হাত পাতেননি। তবে প্রচুর ধারদেনা করে ফেলেছেন। এবার সেগুলো শোধ করবেন। কারণ, এবার শিক্ষার্থীরা ফিরছেন