ওয়াকিল আহমেদ, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষ্ণনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, রায়হান আলম বলেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি ও লুটপাটের জন্য নয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে উন্নয়ন ও মানসম্মত শিক্ষার বিস্তার ঘটানো।
একান্ত সাক্ষাৎকারে সভাপতি রায়হান আলম বলেন, কৃষ্ণনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়া আমার কাছে একটা স্বপ্ন। আমি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নিয়েছি মাত্র কয়েক মাস আগে দায়িত্ব নিয়েই আমার স্বপ্ন গুলো নিজ দায়িত্ব পালন করতে শুরু করেছি। প্রতিষ্ঠান পরিচালনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়, শিক্ষার মানোন্নয়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতাসহ প্রতিষ্ঠানের নানাবিধ কর্মকাণ্ডে আমি সর্বোচ্চভাবে সম্পৃক্ত থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি। বিশেষ করে কোমলমতি, প্রাণোচ্ছল শিশু কিশোররাই আমাকে বারবার প্রতিষ্ঠানে ছুটে আসতে উৎসাহ যুগিয়েছে। কৃষ্ণনগর উচ্চ বিদ্যালয় একটি গ্রামের স্কুল কিন্তু এই স্কুলটি কে আমি জেলার মধ্যে একটি মানসম্মত আধুনিক মডেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ এটা আমার স্বপ্ন।
আমাদের জয়পুরহাটের উন্নয়নের রুপকার শিক্ষা অনুরাগী নেতা মাননীয় হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি আমাদের বিদ্যালয়ে একটি নতুন বিল্ডিং উপহার হিসেবে দিয়েছেন। এর জন্য আমি তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
আমি জানি শিক্ষা সম্পর্কে আপনাদের সবারই বেশ ভালো ধারণা আছে। শিক্ষা হচ্ছে মানুষের বহুমুখী প্রতিভা ও অনুরাগের সুষম বিকাশ এবং নৈতিক চরিত্র গঠন।” প্রতিটি শিশুর মধ্যেই অপার সম্ভাবনা সুপ্ত অবস্থায় থাকে। শিশুর এই সম্ভাবনাকে প্রকাশ ও বিকাশের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি এবং বিজ্ঞানভিত্তিক যথাযথ শিক্ষা ব্যবস্থার উপরই নির্ভর করে শিশুর সফলতা ও ব্যর্থতা। শিক্ষা প্রক্রিয়ায় একটি শিশুর অন্তর্নিহিত গুণাবলির পূর্ণ বিকাশের জন্য উৎসাহ দেওয়া হয় এবং রাষ্ট্রের একজন উৎপাদনশীল নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভের জন্য যে সকল দক্ষতা প্রয়োজন সেগুলো অর্জনে সহায়তা করা হয়।
একই সমান্তরালে শিশুর আবেগ, অনুভূতি, অনুরাগের বিষয়গুলোও অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখতে হয়। কারণ আবেগের বশবর্তী হয়ে তারা এমন কোনো বড় ভুল করে ফেলতে পারে, যেটা শিক্ষার্থীদেরকে জীবনের লক্ষ্য থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিবে। এই প্রেক্ষাপটে নৈতিক চরিত্র গঠনের দিকটি চলে আসে। একজন মানুষ কর্মক্ষেত্রে অনেক সফল, কিন্তু নৈতিকতা বা মানবীয় গুণাবলি গুলো তার মধ্যে অনুপস্থিত, সেরকম মানুষকে আমরা পরিপূর্ণ বা পূর্ণাঙ্গ সফল মানুষ বলতে পারি না। তাই শিক্ষার্থীকে কর্মক্ষম যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি নৈতিক চরিত্র গঠনেও অত্যন্ত জোর দিতে হবে। তাই আমি স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ
সম্মানীত শিক্ষকমণ্ডলি কে বিনয়ের সাথে বলেছি।
বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের সাথে সাথে শিক্ষার্থীকে মানবীয় গুণাবলি অর্জন এবং কর্মদক্ষ সুন্দর মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার পথে শিক্ষকরা হচ্ছেন পথিকৃৎ। আপনাদের কথা বলার ধরন থেকে তারা সুন্দর বাচনভঙ্গি শিখবে। আপনাদের স্নেহপূর্ণ আচরণ থেকে তারা মানবিকতা শিখবে। আপনাদের কর্মদক্ষতা থেকে তারা উদ্যমী কর্মচঞ্চল মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করবে। শিক্ষক হচ্ছেন এমন একজন অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব , যিনি শিক্ষার্থীর শিখন প্রক্রিয়ায়, জ্ঞান অন্বেষণ ও আহরণে, মেধা বিকাশ ও উন্নয়নে , শিক্ষার্থীর চরিত্র গঠনে, নৈতিক ও মানসিক গুণাবলী বিকাশে এবং সমাজ বিবর্তনের অনুঘটক হিসেবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একজন শিক্ষককে হতে হয় জ্ঞান তাপস, বুদ্ধিদীপ্ত, ব্যক্তিত্ববান, চৌকস, শ্রেণিকক্ষে আন্তরিক পাঠদানকারী ও সঠিক পথের দিশারী। আমি জানি, আপনারা যথেষ্ট জ্ঞানী, দক্ষ এবং আন্তরিক। আসলে ভালোর তো কোনো শেষ নেই। তাই বলছি, আধুনিক গতিশীল বিশ্বে নতুনত্ব আসবে, আসবে অনেক চ্যালেঞ্জ। শিক্ষাক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়। তাই আপনাদেরকেও প্রতিনিয়ত জ্ঞান চর্চার মধ্যে থাকতে হবে। নিজেদেরকে আরও শাণিত করতে হবে। যুগের চাহিদা অনুযায়ী নিজেদেরকে পরিমার্জন করে আপনারা নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সাথে শিক্ষার্থীদের মনোদৈহিক বিকাশে সচেষ্ট থাকবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। কৃষ্ণনগর স্কুল কে ভালো মানসম্মত পড়ালেখার পরিবেশ বান্ধব মডেল হিসেবে করতে আমি যতকিছু করতে হয় আমি করবো সভাপতি নয় একজন অভিভাবক হয়ে স্কুলের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম করে যাব ইনশাআল্লাহ।
সরেজমিনে কৃষ্ণনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষক স্কুলে মিটিংয়ের জন্য বাহিরে থাকায় মুঠোফোনে তার কাছে জানতে চাওয়া হয় কৃষ্ণনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন সভাপতি রায়হান আলম দায়িত্ব নিয়ে স্কুলের কি ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ করছেন এবং স্কুলে পড়ালেখার মান কেমন এমন প্রশ্নের উত্তর প্রধান শিক্ষক আরমান আলী বলেন সভাপতি রায়হান আলম একজন ভালো উদার মনের মানুষ। উনি দায়িত্ব নিয়ে স্কুলের লেখাপড়ার মান অত্যান্ত ভালো এবং সবসময় স্কুলের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বিষয়ে তদারকি করে যাচ্ছেন স্কুলের সকল ছাত্রছাত্রীদের জন্য গাইড,খাতা,কলমসহ শিক্ষা উপকরণ ফ্রি দিচ্ছেন।
সহকারী শিক্ষক মোঃ সাজ্জাদুর রহমান বলেন, সভাপতি রায়হান আলম দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এযাবৎ পর্যন্ত প্রায় দুই লক্ষ টাকার বেশি উনি ব্যক্তিগত তহবিল হইতে স্কুলে খরচ করেছেন। যার মধ্যে ছিল স্কুলের চেয়ার টেবিল, স্কুল রুমে সিলিং, ডিজিটাল বোর্ড, চার্টার বোর্ডসহ স্কুলের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম সে চালিয়ে যাচ্ছে এমন কি স্কুলে যে মিটিংয়ে হয় সেই মিটিংয়ের নাস্তার বিল সে নিজের পকেট থেকে বহন করে স্কুলের একটি টাকাও সে খরচ করতে দেন না। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য সে খাতা কলম দেওয়ার ঘোষণা দেন এবং প্রধান শিক্ষকে চাহিদা দিতে বলেন। তিনি এটাও বলেছেন যে স্কুল ড্রেস ও শিক্ষা উপকরণ আমি সকল ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিনা মূল্যে দিবো।
স্কুলের আয়া নার্গিস বেগম ও দপ্তরি বায়জিদ মিয়া বলেন আমরা দোয়া করি সভাপতি সাহেব খুব ভালো মনের মানুষ উনি যতদিন বেঁচে থাকবেন এই স্কুলের সভাপতি উনিই থাকুন এই কামনা করি উনার মতো উদার মনের মানুষ পাওয়া খুব কষ্টকর।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy