অনলাইন ডেস্ক: বারবার চেষ্টা সত্ত্বেও পৈত্রিক নিবাসে ঢুকতে না দেওয়ার ঘটনায় সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল কেএস নবীর দুই নাতিকে বাড়িতে ফিরিয়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ধানমন্ডি থানার ওসিকে এই নির্দেশ বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
শনিবার দিবাগত রাতে বিচারপতি আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন। পরে আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
জানা গেছে, রাজধানী ধানমন্ডির একটি চারতলা বাড়ির মালিক সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল কেএস নবী। উত্তরাধিকার সূত্রে ওই বাড়িতে গত কয়েকদিন ধরে ঢুকতে পারছে না কেএস নবীর ছোট ছেলে সিরাতুন নবীর দুই পুত্র কাজী আদিয়ান নবী ও কাজী নাহিয়ান নবী।
এর আগে গত ১০ আগস্ট সিরাতুন নবীর মৃত্যুর পর তার দুই ছেলেকে গত কয়েকদিন আগে বাসা থেকে বের করে দেন ওই শিশুদের আপন চাচা কাজী রেহান নবী। আগেই শিশু দুটির বাবা-মায়ের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটনা ঘটে। এরপর বাবার মৃত্যুর পর শিশু দুটি কিছু দিনের জন্য তার মায়ের আশ্রয়ে থেকে যায়। এরপর মায়ের কাছ থেকে নিজ পিত্রালয়ে ফেরার চেষ্টা করে ওই দুই শিশু। কিন্তু তাদেরকে আর বাড়িতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। এরপর কয়েক বারের চেষ্টা করেও শিশু দুটি ওই বাসায় প্রবেশ করতে পারে নি। তবে বিষয়টি ধানমন্ডি থানাকে জানানো হলেও পুলিশের কথা আমলে নেননি শিশুদের চাচা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কাজী রেহান নবী।
শিশু দুটির ফুফু (কেএস নবীর বোনের মেয়ে) মেহরীন আহমেদ জানিয়েছেন, বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য ওদের বাবা-মা আলাদা থাকতেন। ওরা ওদের বাবার সঙ্গেই দাদার বাড়িতে থাকতো। কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর শিশু দুটি খুব বেশি বিষন্ন হয়ে পড়ে এবং ওদের মায়ের কাছে কিছুদিন থেকে আবার গতকাল বাড়িতে ফেরে। কিন্তু তারা বাসার গেইট খোলে নি। আমরা পরিবার থেকে যোগাযোগ করি। শিশুদের বড় চাচা কাজী রেহান নবীকে ফোন করি। কিন্তু তিনি শরীর অসুস্থ তার অযুহাতে পরে বাড়িতে আসতে বলেন। এরপর আমরা ধানমন্ডি থানায় বিষয়টি অবহিত করি। এরপর পুলিশ এসে তাকে ফোন করে অনুরোধ করে। এরপর ধানমন্ডি থানার ওসি (ইকরাম হোসেন মিয়া) আমাদেরকে পরের দিন আসতে বলে। কিন্তু পরের দিন বাসায় গিয়ে শিশু দুটো দেখলো আগের দিন তারা বাড়ির কম্পাউন্ডে ঢুকতে পারলেও পরের দিন বাইরের দরজাটিই বন্ধ দেখে এবং ভেতরে কুকুর ছেড়ে দেওয়া থাকে। এরপর আমরা আবার পুলিশকে জানাই। কিন্তু পুলিশ বললো- আমরা কিছু করতে পারবো না আপনারা কোর্টের আশ্রয় নেন।
ঘটনাটি নিয়ে শনিবার দিবাগত রাত ১২টায় একাত্তর টিভির একাত্তর জার্নালে একটি প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। এসময় একাত্তর জার্নালে শিশু দুটির সঙ্গে তাদের ফুফু, সাংবাদিক রেজওয়ানুল হক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ ভার্চুয়ালি আলোচনায় যুক্ত ছিলেন।
এদিকে একাত্তর জার্নালের অনুষ্ঠানটি প্রচার চলাকালীন সময়েই বিষয়টি নজরে আসে বিচারপতি আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের। এরপর একাত্তর টিভিতে প্রচারিত প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে মাঝরাতে হাইকোর্টের বেঞ্চ বসিয়ে আদেশ দেন বিচারপতি আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের আদালত।
আদেশের বিষয়ে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, আমি বাচ্চা দুটির অধিকার সম্পর্কে কথা বলতে একাত্তর জার্নালের লাইভে যুক্ত ছিলাম। ওই লাইভ অনুষ্ঠান চলাকালে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমটো) হয়ে আদেশ দেন। পরে আদেশের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত জানতে পারি। আদালত তার আদেশে বলেছেন, ধানমন্ডি থানার ওসিকে ওই দুই শিশুকে তাদের বাসায় (দাদা বাড়ি) রাখতে, শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং আদেশ বাস্তবায়ন করে সকালে প্রতিবেদন দাখিল করতে।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy