1. admin@surjodoy.com : Main : Admin Main
  2. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  3. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
শুঁটকিতে বিষ!
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১৭ অপরাহ্ন

শুঁটকিতে বিষ!

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৩ জুলাই, ২০২০, ৮.২৯ এএম
  • ২৫০ বার পঠিত

বাঙালি ও শুঁটকির গল্প অনেক পুরোনো। মাছের পচন ঠেকাতে রোদে শুকানো হয়। এই শুকনো মাছই বহু বছর ধরে বাঙালির খাদ্য তালিকার একটি প্রিয় উপাদান হয়ে আছে। যা শুঁটকি নামে পরিচিত।

দেশের উপকূলীয় এলাকার প্রায় ৭.৩ মিলিয়ন মানুষ শুঁটকির ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করে। আমাদের বার্ষিক ১৮.৯৪ কেজি মাছের চাহিদার ৫ শতাংশ আসে শুঁটকি থেকে।

দেশে বছরে প্রায় ১.০৯ লাখ মেট্রিক টন শুঁটকি প্রক্রিয়াজাত করা হয়। ২০১৬ সাল থেকে শুঁটকি রফতানি করে ১৫০ কোটি টাকার বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে। এ কারণে বাণিজ্যিকভাবে উপকূলীয় শহরগুলোতে গড়ে উঠেছে শুঁটকি পল্লী। বর্তমানে সিন্ডিকেটের ফাঁদে পড়েছে লাভজনক এ ব্যবসা। দালালদের কবলে পড়ে দিশেহারা শুঁটকি কারিগররা।

কক্সবাজারের টেকনাফের শুঁটকি কারিগর আব্দুল কাদের ডেইলি বাংলাদেশকে জানান, শুঁটকির সেই স্বাদ আর পাওয়া যায় না। কৃত্রিম উপায়ে শুঁটকি তাজা রাখতে ও পোকামাকড় থেকে রক্ষা করতে ব্যবহৃত হচ্ছে কীটনাশক। আর দ্রুত শুঁটকি তৈরির জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে লবণ।

সরেজমিনে টেকনাফের শাপলাপুর শুঁটকি পল্লীতে দেখা গেছে, শীতকাল শুঁটকির জন্য উপযুক্ত মৌসুম হলেও এই বর্ষায় এখানে শুঁটকি তৈরি হচ্ছে হরদম। কিভাবে সম্ভব? উত্তরে জানা গেল- বর্ষা মৌসুমে শুঁটকি উৎপাদন ও রক্ষায় ব্যবহার করা হচ্ছে অতিরিক্ত লবণ। এতে শুঁটকির মান ও স্বাদ পাল্টে যায় এবং সুস্বাদু খাবারটি হয়ে ওঠে বিষাক্ত। মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর এসব শুঁটকি অসাধু ব্যবসায়ীর হাত ধরে বাজারে ছড়ায়। এসব শুঁটকি থেকেই শরীরে দেখা দেয় ক্যানসার, চর্মরোগ, লিভারের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগ।

রোদে শুকানো হচ্ছে শুঁটকি

রোদে শুকানো হচ্ছে শুঁটকি

শাপলাপুর শুঁটকি পল্লী ঘুরে আরো জানা গেল- যারা বহু বছর ধরে এ পেশায় রয়েছেন, শুধু তারাই মাছ আহরণ ও শুঁটকি উৎপাদনের পুরনো ও উপযুক্ত পদ্ধতি আঁকড়ে ধরে আছে। তারা শুধু রোদে শুকিয়ে শুঁটকি তৈরি করে। এতে ব্যবহার করা হয় না লবণ বা কীটনাশক।

কথা হয় উখিয়ার সোনারপাড়ার শুঁটকি উৎপাদনকারী খাদিজা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, শুধু নিজেরা খাওয়ার জন্যই শুঁটকি উৎপাদন করি। শুঁটকি ব্যবসা এখন সিন্ডিকেটের দখলে চলে গেছে। বাজারে নিরাপদ শুঁটকি পাওয়া যায় না।

খাদিজা বেগম বলেন, আমাদের আয় অনেক কম। বাড়ির পুরুষরা সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে কিছু মাছ পরিবারের জন্য নিয়ে আসে। অতিরিক্ত মাছ থেকে কিছুটা শুকিয়ে নিজেরা খাই। কিছু বাজারে বিক্রি করি। স্থানীয় কিছু মানুষ আমাদের কাছ থেকে শুঁটকি নিয়ে যায়।

প্রাকৃতিক উপায়ে শুঁটকি উৎপাদনকারীরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হন। লবণ কীটনাশক দেয়া শুঁটকি বাজারে বেশী দামে বিক্রি হলেও সেসব শুঁটকির উৎপাদন খরচ খুবই কম।

খাদিজা বেগম বলেন, আমরা ছুরি, লইট্টা, চিংড়ি, কাচকি, চ্যাপা ও ফাইস্যা মাছের শুঁটকি তৈরি করি। এরমধ্যে বাজারে ছুরি, লইট্টা ও চিংড়ি শুঁটকির চাহিদা বেশি।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা- অসাধু সিন্ডিকেটের কারণে ঘরোয়াভাবে উৎপাদিত শুঁটকি বাজারজাতকরণের উদ্যোগ নেয়া হয় না। স্থানীয় বাজারেও শুঁটকি কারিগররা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত। শুঁটকি শিল্প বাঁচাতে বৃহৎ উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই।

এ জনগোষ্ঠীকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিনিয়োগ করে আরো উন্নত শুঁটকি উৎপাদন ও রফতানির পথ খুলে দিতে হবে। প্রান্তিক শুঁটকি উৎপাদনকারীদের হাত ধরেই বৈদেশিক মুদ্রা আয় ১৫০ কোটি থেকে হাজার কোটিতে পৌঁছানো সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews