পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
সনদ জালিয়াতি করে চাকরিতে যোগদান, অভিযোগেও ফল মেলেনি
সত্য গোপন করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সরকারি চাকরিতে যোগদান এবং সরকারি অর্থ আত্মসাতের ঘটনার দুই বছর অতিবাহিত হলেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এর ফলে মিথ্যা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার আশংকা করা হয়েছে।
দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের সরকারপাড়া গ্রামের মো. আব্দুস সামাদের পুত্র মো. তাজরিয়ান বাবু বলেন, দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত সিনিয়র নার্স মোছা. সানোয়ারা আক্তারের বাড়ি একই জেলার কাহারোল উপজেলার রণগাঁ গ্রামে। তার বাবার নাম মো. সামসুদ্দিন আহমেদ ও মায়ের নাম মোছা. রেজিয়া খাতুন।
তাজরিয়ান বাবু অভিযোগ করেন, সানোয়ারা আক্তার প্রকৃত সত্য গোপন করে ২০০৮-২০০৯ শিক্ষাবর্ষে সরকারি কুড়িগ্রাম নার্সিং ইন্সটিটিউটে ভার্তি হন। ওই সময় ভর্তির জন্য তার শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন ছিল এসএসসি ও এইচএসসি মিলে ৭.৫ গ্রেড পয়েন্ট।
কিন্তু তার এসএসসিতে ছিল ২.৭৫ এবং এইচএসসিতে জিপিএ গ্রেড পয়েন্ট ছিল ৩.১০। মোট গ্রেড পয়েন্ট ছিল ৫.৮৫। এ সময় সে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে এসএসসি সনদ পত্রে ২.৭৫ এর স্থলে কম্পিউটারে টেম্পারিং করে ৪.৭৫ দেখায়। এর ফলে তার ওই নার্সিং ইন্সটিটিউতে ভর্তি হতে আর কোনো বাধা থাকে না।
তাজরিয়ান বাবু বলেন, যে প্রতারক সে সব ক্ষেত্রেই, সবার সাথে প্রতারণা করতে পারে। সানোয়ারা আক্তারের সাথে আমার বিয়ে হয়েছিল সরকারি কুড়িগ্রাম নার্সিং ইন্সটিটিউটে পড়ার সময়। ২০১৬ সালে সে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চাকরিতে যোগদান করেন। এর আগে আমি জানতে পারি সনদ জালিয়াতি করে সে নাসিং ইন্সটিটিউটে ভর্তি হয়।
আমি তাকে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে প্রাপ্ত চাকরিতে যোগদানে নিষেধ করি। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে ডিভোর্স দিয়ে শিশু ছেলেকে ফেলে রেখে চলে যায়। আমি এ অন্যায়, মিথ্যাচার ও প্রতারণার বিরুদ্ধে একাধিকবার আবেদন নিবেদন করি। ২০১৮ সালে ঢাকাস্থ বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিল ও নার্সিং ইন্সটিটিউটে লিখিত অভিযোগ প্রদান করি।
পরে ২০২০সালের ২৫ আগস্ট অনুরূপভাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, কুড়িগ্রাম নার্সিং ইন্সটিটিউটসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করি। ২০২০ সালের ১৬ নভেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাখালী, ঢাকার পরিচালক (প্রশাসন) ডা. শেখ মোহাম্মদ হাসান ইমাম মহাপরিচালক নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেন। চিঠিতে উল্লেখ করেন এতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন রয়েছে।
অন্যদিকে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. শাহ মোজাহেদুল ইসলাম ভুক্তভোগী ও অভিযোগকারী তাজরিয়ান বাবুকে লিখিতভাবে জানান,
এ বিষয়ে নিয়োগদানের ক্ষমতা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নেই। মোছা. সানোয়ারা আক্তার, সিনিয়র স্টাফ নার্স এর এসএসসি সনদ এর সত্যতা যাচাইয়ের বিষয়টি ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হতে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরকে অবগত করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি চলমান রয়েছে।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy