সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের সরকারি জমি দখলের মহোৎসব
মিহিরুজ্জামান জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরাঃ
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা সদরে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী নাজিমগঞ্জ বাজারে চলছে সরকারি জমি দখলের মহোৎসব। বাজারে গেলেই দেখা যাবে দখলদারিত্বের এই দৃশ্য। স্থানীয়দের দাবি কতিপয় দখলদার প্রকাশ্য নদীর জমি দখল করে সেখানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ঘর-বাড়ি নির্মাণ করছে। উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় এই দখল প্রক্রিয়া চললেও প্রতিরোধের উদ্যোগ না নেওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন সাধারণ ব্যবসায়ীসহ সচেতন মহল।সরেজমিন বাজারে গেলে দেখা যায়,
বাজারের প্রভাবশালী কাপড় ব্যবসায়ী এম রহমান বস্ত্রলয়ের মালিক হাফিজুল ইসলাম তার দোকারের পেছনে টিন দিয়ে ঘিরে রেখে সরকারি খাসজমি দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছে। ওই সময়ে সংবাদকর্মীরা নির্মাণাধীন ভবনের ভিতরে প্রবেশ করতে চাইলে বাঁধা প্রদান করে অসৌজন্যমূলক আচারণ করে ব্যবসায়ী হাফিজুলের মেঝো ভাই। এছাড়াও ওই দোকানের কর্মচারি রুহুল আমিন বিশ্বাস নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পরিচয় দিয়ে দম্ভের স্বরে বলেন, সরকারি জমি দখল করছি তাতে সাংবাদিকদের সমস্যা কোথায়। ভিতরে যেতে হলে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অফিসার নিয়ে আসেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কাপড় ব্যবসায়ী জানান, ভারত থেকে অবৈধভাবে কাপড় পাচার করে নিয়ে এসে বাজারে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা আয় করছে এম রহমানের মালিক।
ওই দোকানের পেছনে গোডাউনে ভারতীয় পণ্য ছিলো বলে সংবাদকর্মীদের প্রবেশ করতে দেয়নি বলে জানান তারা।জানা যায়, হাফিজুল ইসলাম এলাকার প্রভাবশালী ব্যবসায়ী হওয়ায় সরকারি খাস খতিয়ান ভুক্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখল করে স্থায়ী দোকান নির্মাণ করে দীর্ঘদিন যাবত ব্যবসা বাণিজ্য করে আসছে।স্থানীয় ভূমি অফিস দায়-সারা বাঁধা দিলেও থেমে নেই সরকারী জমি দখল করে ভবনের নির্মাণ কাজ এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন অনুমোদন না থাকলেও দখলদারদের বিরুদ্ধে কোন আইনী পদক্ষেপ না নেয়ায় সরকারি সম্পত্তি দখল করে নিচ্ছে এম রহমান বস্ত্রলয়ের মালিক।বাজারের কয়েকজন দোকন কর্মচারি জানান, এম রহমানের মালিক যেখানে ভবন নির্মাণ করছে ওর পাশে বাজারের পাবলিক টয়লেট।
বাজারের ব্যবসায়ী-কর্মচারি থেকে শুরু করে অনেক কাস্টমার প্রকৃতির ডাকে টয়লেটে যায়। কিন্তু ভবন নির্মাণ করায় এখন অনেক ভোগান্তির স্বীকার হতে হচ্ছে। ওই স্থানে সবসময় লোকসমাগম থাকায় বেশি ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে নারীরা।এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার খন্দকার রবিউল ইসলামের কাছে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ হয়নি। তবে জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবির বলেন, দখলের বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম।
অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে অতিদ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।এদিকে এম রহমান বন্ত্রালয়ের মালিক হাফিজুল ইসলাম সরকারি জমি দখল করে দোকান নির্মাণের কথা স্বীকার করে বলেন, আমি একা সরকারি জমি দখল করিনি। আমার মত অনেকেই করেছে। ভারতীয় অবৈধ কাপড় বিক্রির বিষয়ে তিনি অস্বীকার করেন।এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট বাজারের ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সচেতন মহলের দাবি অতিদ্রুত সরকারি জমি দখলমুক্ত হোক।