মিহিরুজ্জামান জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরাঃ সাতক্ষীরার শ্যামনগরে উপকূলীয় জনবহুল ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলনকারিরা অবৈধ জেনেও বালু উত্তোলন করছে বলে জানা যায়। স্বার্থন্বেষী মহল সরকারি নিষেধ না মেনে অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এ অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।সরেজমিনে দেখা যায়, প্রকাশ্যে দিনের বেলায় দ্বীপ ইউনিয়ন পদ্মপুকুরের বিভিন্ন এলাকায় কৃষি জমি ও মাছের ঘের থেকে বোরিং মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।পদ্মপুকুর বাজার থেকে পাতাখালির রাস্তার পাশ দিয়ে বসানো হয়েছে ৭-৮টা বোরিং মেশিন। অবৈধভাবে বসানো এসব মেশিন দিয়ে তোলা হচ্ছে বালু।খোঁজ নিয়ে জানা গেল, পদ্মপুকুর চন্ডিপুরে গ্রামের শফিকুল, বাবু, আতাউর ও মেহেদীর ২টি বোরিং মেশিন দিয়ে বালি তোলা হচ্ছে। ব্রিজ মোড়ে একটি মেশিন, বাইনতলায় হযরতের ২টি মেশিন, ইউনিয়ন পরিষদের পাশে আবু তালেব ও রজব আলীর ২টি বোরিং মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছে। অবৈধভাবে লোকালয় থেকে বালু উত্তোলনের কারণে ব্যাপক ঝুঁকিতে সেখানকার পরিবেশ ও প্রতিবেশে।এতে করে কৃষি জমি হারাতে বসেছে স্থানীয়রা। সরকারি রাস্তা, স্কুল-কলেজ, ইউনিয়ন পরিষদ ধসে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। খোঁজ-খবর নিয়ে আরও জানা গেল, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, কিছু মিডিয়া ব্যক্তি ও প্রশাসনের কিছু কর্তা ব্যক্তি এ অপকর্মের জন্য নজরানা পেয়ে থাকেন। এদিকে পদ্মপুকুর একটি দ্বীপ ইউনিয়ন। নদী ভাঙনের ভয়ে সব সময় বুক দুরু-দুরু করে স্থানীয়দের।তারপরও প্রতিনিয়ত যেভাবে বোরিং করে বালু উত্তোলন শুরু হয়েছে তাতে করে ঝুঁকির মধ্যে ইউনিয়নটি। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে নিজেদের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন কেউ কেউ। কেউ কেউ বসত ভিটা ভরাট করছেন, আবার কেউ মাঠ ভরাট করছেন। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করা না গেলে অচিরেই হারিয়ে যেতে পারে দ্বীপ ইউনিয়ন পদ্মপুকুর।এলাকাবাসী জানান, যে ভাবে আমাদের এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন শুরু হয়েছে যদি দ্রুত বালু উত্তোলন বন্ধ না করা যায় তাহলে আমাদের ঘর বাড়ি ধ্বস নেমে বিলীন হয়ে যাবে।পরিবেশ নিয়ে কাজ করা লির্ডাসের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মন্ডল বলেন,পদ্মপুকুর যে ভাবে অপরিকল্পিতভাবে কৃষি জমিতে থেকে বালু উত্তোলন শুরু হয়েছে তাতে করে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া দ্বীপ ইউনিয়নটি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।সেভ দ্যা ন্যাচারের সাতক্ষীরার সভাপতি আব্দুল হালিম বলেন, দ্বীপ ইউনিয়ন পদ্মপুকুরকে বাঁচাতে হলে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে। এবিষয় জানতে চাইলে বালু উত্তোলনকারি আবু তালেব বালু উত্তোলনের বিষয়টা অবৈধ স্বীকার করে বলেন, ‘সবাইকে ম্যানেজ করে বালু উত্তোলন করি’।পদ্মপুকুর ইউনিয়ান ভূমি কর্মকর্তার সাথে কথা বলার জন্য তার অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠো ফোনে বলেন, বালু উত্তোলনের বিষয়টি তার জানা নেই। তারপরও যদি কেউ বালু উত্তোলন করে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শ্যামনগর সহকারি কমিশনার (ভূমি) শহিদুল ইসলাম বলেন, শ্যামনগরে অবৈধভাবে ভূমি থেকে বালু উত্তোলন করার সুযোগ নেই। তালিকা অনুযায়ী অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Like this:
Like Loading...
Related
এ জাতীয় আরো খবর..