প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৮, ২০২৪, ২:৪২ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ নভেম্বর ৫, ২০২১, ৪:২৭ পি.এম
সাতক্ষীরার সুন্দরবনে ও দুবলারচরে হচ্ছে র্যাবের দু’টি স্থায়ী ক্যাম্প
মিহিরুজ্জামান জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরাঃ
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) তৎপরতায় দস্যুমুক্ত হয়েছে পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন। এ অরণ্যে এখন কোনো দস্যু বাহিনীর বিচরণ নেই। সুন্দরবন উপকূলের বনজীবী ও মৎস্যজীবী আর মৌয়ালদের মনে এখন দস্যুভীতি একেবারেই নেই।তবে নতুন করে আর কোনো দস্যু বাহিনী যাতে এ বনে বিচরণ বা অবস্থান করতে না পারে, সে জন্য সুন্দরনের নজরদারিতে র্যাবের সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে।এর জন্য স্থায়ীভাবে দু’টি ক্যাস্প স্থাপনের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন এলিট এ ফোর্সের কর্মকর্তারা।এতে নজরদারি ও টহলের মাধ্যমে সুন্দরবনের নিরাপত্তায় আরও সক্ষম হবে র্যাব।ইতিমধ্যে সুন্দরবনে নজরদারি ও নিয়মিত টহলের জন্য র্যাবের দুটি অস্থায়ী ক্যাম্প চালু রয়েছে। এর একটি সুন্দরবনের দুবলারচরে এবং অপরটি সাতক্ষীরার মুন্সিগঞ্জে। তবে স্থায়ীভাবে ক্যাম্প স্থাপন হলে জলদস্যু ও বনদস্যু সহ বন্যপ্রাণী চোরাচালালিরা তাদের তৎপরতা চালাতে পারবে না।এবিষয়ে মঙ্গলবার (০২ নভেম্বর) সুন্দরবনের কটকার বাদামতলা ওয়াচ-টাওয়ার স্পটে উপস্থিত থেকে র্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সুন্দরবনে নজরদারির জন্য র্যাবের দু’টি অস্থায়ী ক্যাম্প রয়েছে। তবে এ দুটি পর্যাপ্ত নয়। সুন্দরবনকে নিরাপত্তা দিতে ও দস্যুমুক্ত রাখতে হলে স্থায়ীভাবে আরও দু’টি ক্যাম্প স্থাপন করা প্রয়োজন।তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অতিসম্প্রতি র্যাবকে দুইটি ক্যাম্প দেওয়া হবে। যার মাধ্যমে র্যাব সুন্দরবনে নিয়মিত নজরদারি করতে পারবে।পাশাপাশি এখন সুন্দরবনে অনেক পর্যটক আসেন, জেলেরা মাছ ধরেন। তারা আরো নিরাপদে সুন্দরবনে আসতে পারবেন এবং এটি তাদের জন্য অভয়ারণ্য হবে।কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সুন্দরবন দস্যুদের অভয়ারণ্য ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গঠিত র্যাবের টাস্কফোর্সের বিচক্ষণ কর্মকর্তাদের তৎপরতায় ও গণমাধ্যমের সহায়তায় আজ দস্যুমুক্ত হয়েছে সুন্দরবন।প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালের ০১ নভেম্বর সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেছেন। তিন বছর পরে এখনও সুন্দরবন দস্যুমুক্ত। নতুন করে দস্যুরা যাতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে জন্য নিয়মিত গোয়েন্দা নজরদারি করা হচ্ছে, যোগ করেন তিনি।র্যাব মুখপাত্র বলেন, সুন্দরবনে দস্যুতা বন্ধে যা যা করা প্রয়োজন,সবাই আমরা করছি।এ জন্য যার যার সঙ্গে সমন্বয় করা প্রয়োজন,সবাই আমরা করে যাচ্ছি।নিয়মিত অভিযানিক দল প্রস্তুত রয়েছে। হেলিকপ্টার দিয়ে এখন টহল দেওয়া হচ্ছে।স্থায়ী ক্যাম্প হলে এসব কাজ করতে সুন্দরবনে র্যাবের সক্ষমতা আরো বৃদ্ধি পাবে বলেও জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ খ্যাত পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন উপকূলের বনজীবী ও মৎস্যজীবীদের এ জিম্মি দসা থেকে বেরিয়ে আনতে র্যাবের তৎপরতায় সফল হয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত সুন্দরবন ঘোষণা করেন। দস্যুমুক্ত সুন্দরবনের তৃতীয় বর্ষপূর্তি হয়েছে।২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) মহাপরিচালককে প্রধান সমন্বয়কারী করে সুন্দরবনে জলদস্যু দমনে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। এরপর থেকে বনদস্যু ও জলদস্যু মুক্ত করতে কাজ শুরু করে র্যাব। ২০১২ সাল থেকে র্যাবের জোড়ালো অভিযানে কোণঠাসা হয়ে পড়ে বনের গহীনে থাকা জলদস্যুরা।র্যাবের তৎপরতায় দস্যু বাহিনীগুলো ফেরারি জীবন শুরু করে।এরপর দস্যুতার অবসান ঘটিয়ে আত্মসমর্পণের পথ বেছে নেয় দস্যু বাহিনীগুলো।২০১৬ সালের ৩১ মে থেকে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর পর্যন্ত সুন্দরবনের মোট ৩২টি দস্যু বাহিনীর ৩২৮ জন সদস্য ৪৬২টি অস্ত্র ও ২২ হাজার ৫০৪ রাউন্ড গোলাবারুদ সহ আত্মসমর্পণ করেন।এর মাধ্যমে সম্পূর্ণভাবে দস্যুমুক্ত হয় সুন্দরবন।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy