প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৮, ২০২৪, ৬:৫৪ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ নভেম্বর ২১, ২০২১, ৭:৫২ পি.এম
সাতক্ষীরায় রায়হান হত্যার ৮ বছর অতিবাহিত হলেও উদঘাটন হয়নি হত্যার রহস্য
মিহিরুজ্জামান জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরাঃ
জামাত-শিবিরের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের নির্মম ও নারকীয় হত্যাযজ্ঞের শিকার সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদ আবু রায়হানের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ রবিবার।২০১৩ সালে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির রায় ঘোষণার পর সরকার বিরোধী আন্দোলনের নামে সারা দেশের ন্যায় সাতক্ষীরার দেবহাটাতেও নারকীয় তান্ডব চালায় বিএনপি ও জামাত-শিবিরের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।সে সময়ে ধর্মান্ধ জামায়ত-শিবির ক্যাডাররা একের পর এক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলা,দলীয় কার্যালয় ও নেতাকর্মীদের বাড়ীঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, মিছিল-পিকেটিংয়ের নামে গাছ কেটে সড়ক অবরোধ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল করে দেওয়া
গণপরিবহন ভাংচুর এমনকি রাস্তার প্রতিকী কবরও তৈরী করে।তৎকালীন সময়ে বিএনপি ও জামায়ত-শিবিরের কাছে মূর্তিমান এক আতঙ্ক ছিলেন দেবহাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু রায়হান।সরকারের উচ্চ পদস্থ মন্ত্রী-এমপি এবং প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথেও আবু রায়হানের ছিল ব্যাপক সখ্যতা। ফলে দেবহাটাতে আবু রায়হানের কারনে একের পর এক ভন্ডুল হতে থাকে বিএনপি ও জামাত-শিবিরের নাশকতার পরিকল্পনা।এক কথায় আওয়ামী লীগের ঢাল হিসেবে বিএনপি ও জামায়ত-শিবিরের নাশকতা কর্মকান্ডে অন্যতম বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছিলেন আবু রায়হান।এতে করে নিজেদের পথের কাঁটাকে সরাতে আবু রায়হানকে হত্যার পরিকল্পনা শুরু করে বিএনপি ও জামায়ত-শিবির।পরিকল্পনার একপর্যায়ে ২০১৩ সালের ২১ নভেম্বর সন্ধ্যায় পারুলিয়া বাস স্ট্যান্ডের পাশে উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের সাথে অবস্থানকালে অতর্কিত হামলা চালিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্রভাবশালী নেতা আবু রায়হানকে প্রকাশ্যে জনসম্মুখে নির্মম ও নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে বিএনপি ও জামায়ত শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডাররা। নির্মম ও নৃশংস এ হত্যাযজ্ঞের ঘটনার ৮বছর অতিবাহিত হলেও হত্যাকান্ডের নানা বিষয় এখনও আঁধারেই রয়ে গেছে।এমনকি হত্যাকান্ড কিংবা মুল পরিকল্পনাকারী ও কিলিং মিশনে অংশ নেয়া সন্ত্রাসীদের সম্পর্কে সুনির্দ্দিষ্ট কোন ক্লু উদঘাটিত হয়নি বলে দাবী নিহত আওয়ামী লীগ নেতা শহীদ আবু রায়হানের পরিবারের।শহীদ আবু রায়হানের স্বজনরা জানান, হত্যাকান্ডের একদিন পর আবু রায়হানের মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে দেবহাটা থানায় পেনাল কোডের ৩০২/৩৪ ধারায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।যার মামলা নং-০৫,তাং- ২৩-১১-১৩। হত্যার পর প্রায় মাসব্যাপী দেবহাটাতে চিরুনী অভিযান চালিয়ে বহু জামায়ত-শিবিরের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।এসকল গ্রেপ্তারকৃত ছাড়াও হত্যাকান্ডের পর থেকে মামলার তদন্ত শেষ হওয়ার আগপর্যন্ত নাশকতায় সংশ্লিষ্ট ও কিলিং মিশনের সন্ধিগ্ধ বহু আসামীকে রায়হান হত্যা মামলার আসামী দেখিয়ে আদালতে প্রেরন করা হয়।ফলে গ্রেপ্তারকৃত লম্বা লিষ্টের আসামীদের কারণে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের প্রকৃত মোটিভ, পরিকল্পনাকারী ও কিলিং মিশনে অংশ নেয়া হত্যাকারীদের চিহ্নিতের বিষয়টি দিনদিন ঝাপসা হয়ে ওঠে।এমনকি আবু রায়হান হত্যাকান্ডের অন্যতম মাস্টার মাইন্ড হিসেবে দেবহাটার কয়েক ডজন মামলার পলাতক আসামী এবং সর্বোচ্চ হিংসা ও উগ্রপন্থী সশস্ত্র জামায়ত নেতা জিয়াউর রহমান ওরফে আফগান জিয়ার নাম বারবার সামনে উঠে আসলেও চাঞ্চল্যকর এ মামলাটির চার্জশিটে সেই আলোচিত আফগান জিয়া সহ শীর্ষ জামায়ত-শিবির ক্যাডারদের নাম লিস্টের শেষের দিকে রেখে দায়সারা অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে বলেও দাবী আবু রায়হানের পরিবারের।গেল সাত বছরে তদন্ত চলাকালে দেবহাটা থানার এক তদন্ত কর্মকর্তার হাত থেকে অপর কর্মকর্তার হাতে বদল হয় রায়হান হত্যার ফাইল। সর্বশেষ ২০১৭ সালের শেষের দিকে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলাটির তদন্ত শেষ হয়েছে দাবী করে প্রায় ১০০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ।এরপর থেকে অদ্যাবধি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে রায়হান হত্যা মামলাটি। রায়হান হত্যার পর থেকে সেই আফগান জিয়া সহ তার নিকটতম হাতে গোনা কয়েকজন শীর্ষ জামায়ত ও শিবির ক্যাডার এখনও পলাতক থাকলেও,চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলাটির অন্যান্য অধিকাংশ আসামীরাই বর্তমানে জামিনে থেকে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শহীদ আবু রায়হানের পরিবার।একই সাথে এ হত্যাযজ্ঞের মুল মোটিভ উদঘাটন করে হত্যার পরিকল্পনা ও কিলিং মিশনের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন আবু রায়হানের পুত্র ছাত্রলীগ নেতা তন্ময় সহ পরিবারের সদস্যরা।এবিষয়ে মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষে থেকে কোন অনুষ্ঠান আছে কি না তা জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারমান মুজিবর রহমান বলেন,কাল যে রায়হানের মৃত্যুবাষির্কী তা তো আমার জানা নেই। আর আমাকে তো কেউ কিছু বলেনি।সাধারণ সম্পাদক আয়োজন করে থাকে,সে বছর কি করবে তা জানি না।এদিকে সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির কাছে জানতে চাইলে,তিনি বলেন আমি ব্যক্তিগতভাবে দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করবো।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy