1. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  2. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
সাতক্ষীরায় লাইসেন্সবিহীন চলছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রমরমা ব্যবসা
শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০২:৫৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
অবশেষে রাজধানিতে  দেখা মিলল  বৃষ্টির যে কারণে যৌনতার প্রতি আগ্রহ কমে যায় টেকনাফ সীমান্তে  ভেসে আসছে মর্টার শেল ও ভারি গোলার বিকট শব্দ,  দেখা যাচ্ছে  আগুনের কুণ্ডলী বৈদেশিক ঋণনির্ভর প্রকল্প বাস্তবায়নে বাড়তি পরিশ্রমের  নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর  সিনিয়র সহকারী সচিব পদে পদোন্নতি পেলেন মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী লক্ষ্মীপুরে বিনামূল্যে সার বীজ বিতরণ বরুড়ায় বই ও কসমেটিক বিক্রেতাকে হত্যার দায়ে স্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড,  স্বামী’র কারাদণ্ড বদলগাছীতে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত কাঠ মিস্ত্রিকে সহায়তা দিলেন সংসদ সদস্য সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী দেবীদ্বারে আনোয়ারাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনের ফ্লাইওভারে গাড়িতে আগুন

সাতক্ষীরায় লাইসেন্সবিহীন চলছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রমরমা ব্যবসা

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৬.৪৫ পিএম
  • ২০২ বার পঠিত

মিহিরুজ্জামান, সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরায় অনলাইন লাইসেন্স না থাকলেও বছরের পর বছর ধরে বাধাহীনভাবে চলছে সাতক্ষীরা জেলায় ১৩৩ টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার। অভিযোগ রয়েছে, ধার করা টেকনিশিয়ান ও ডাক্তার দিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানগুলো চালিয়ে যাচ্ছে রমরমা ব্যবসা। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে এসে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০১৮ সাল থেকে লাইসেন্স নবায়নের প্রক্রিয়াটি ডিজিটালাইজড করার কার্যক্রম শুরু করেছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর। যে কারণে তখন থেকেই লাইসেন্স নবায়ন ধীর গতিতে হচ্ছে এবং বৈধ লাইসেন্স না থাকলেও, তেমন কোনো ঝামেলা তাদের প্রতিষ্ঠানের মালিকদের পোহাতে হয়নি। এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকে নোটিশ দেয়া ছাড়া এগুলোর বিরুদ্ধে আর কোনো উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা নেয়নি স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। প্রতি বছর ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর লাইসেন্স নবায়নের জন্য পরিবেশগত ছাড়পত্র, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিস্তারিত বিবরণ, পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, কর সার্টিফিকেট এবং অন্যান্য নথি প্রয়োজন হয়। এসব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে পারে না বলে তারা তাদের প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নবায়ন করতে পারে না বলে জানা যায়।
তারা আরও বলছেন, জেলায় ডিগ্রীধারী এমবিবিএস চিকিৎসকের নাম ব্যবহার করে মেডিকেল টেকনোলোজিষ্টদের মাধ্যমে ডায়াগনিষ্টিক স্টোরের মালিকরা রমরমা ব্যবসা করছে। এতে প্রতিনিয়ত সর্বশান্ত হচ্ছে শহর-গ্রামের সাধারণ ভুক্তভোগী রোগীরা। কোনো ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারের নিবন্ধন নিতে গেলে একজন ডিগ্রীধারী এমবিবিএস চিকিৎসক ও একজন মেডিকেল টেকনোলোজিষ্ট দেখাতে হয়। জেলার অধিকাংশ ডায়াগনিষ্টিক স্টোরের মালিকরা তা দেখালেও রোগীদের প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট দেওয়ার সময় ঐ চিকিৎসকের স্বাক্ষর ব্যবহার না করে মেডিকেল টেকনোলোজিষ্টরা স্বাক্ষর করে সাধারণ রোগীদের হাতে দিয়ে দিচ্ছেন। ফলে এমবিবিএস চিকিৎসকরা তা দেখে তাদের প্রেসক্রাইব করে দিচ্ছেন এবং ঐ প্রেসক্রিপশনের লেখা ঔষধ খেয়ে রোগীদের অবস্থা আশঙ্কজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকি দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স-১৯৮২’র অধীনে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোও পরিচালিত হয়। এই আইন অনুযায়ী, জেলার অধিকাংশ ডায়াগনিষ্টিক স্টেন্টারগুলোর কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই; তবুও আইনের মার প্যাচে তারা দেদাচ্চে ব্যবসা কাযক্রম চলমান রেখেছেন। এতে করে সরকার বছর বছর লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যা দেশের প্রচলিত আইনের পরিপন্থী।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ৯০’ এর দশকে জেলায় ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারের ব্যবসা শুরু হলেও ২০০৮ সালের পর থেকে তা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। এভাবে বাড়তে বাড়তে জেলায় এখন ১৩৩ টি ডায়াগনিষ্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। এসব প্রতিষ্ঠানে নেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ, দক্ষ মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট, চিকিৎসক ও পর্যাপ্ত জনবল। এদিকে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে দেশের ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারগুলোকে অনলাইন লাইসেন্স এর আওতায় আনার কার্যক্রম শুরু করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেই প্রেক্ষিতে জেলার ৪৬ টি ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারের মালিকরা তাদের প্রতিষ্ঠানের অনলাইন লাইন্সেস নবায়নের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আবেদন করেছিলেন। এর মধ্যে ৪৪ টি ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারকে অনলাইন লাইন্সেস নবায়নের সনদ দেন কর্তৃপক্ষ। তবে ২ টি ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারকে নবায়ন সনদ দেননি। অপরদিকে ২৩ আগস্টের মধ্যে দেশের প্রত্যেকটি জেলার ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারগুলোর কাগজপত্র আপডেট করার নির্দেশ নিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। এর প্রেক্ষিতে সাতক্ষীরায় ২৮ টি নিউ ও ২৫ টি রিনিউ এর জন্য ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারের মালিকরা অনলাইন লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করেন। এদিকে সরকারের বিভিন্ন বিভাগ বছরের পর পর রাজস্ব থেকে বঞ্চিত।
সিভিল সার্জন অফিস ও সাতক্ষীরা পৌরসভা থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, দেবহাটা উপজেলায় ২ টি-কুলিয়ার আশু মার্কেটের হাবিবা সার্জিকাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনিষ্টিক সেন্টার, পারুলিয়া বাজারে মোমেনা ডায়াগনিষ্টিক সেন্টার, আশাশুনি উপজেলায় ৯ টি-বুধহাটার কুল্যার মোড়ে মা সার্জিকাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কাকবাসিয়া বাজারে ফয়েজউদ্দিন মেমোরিয়াল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, উপজেলা মোড়ে রাশিদা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, আনুলিয়ায় মায়ের দোয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টার, তেঁতুলিয়া বাজারে আয়ুব আলী ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বুধহাটা বাজারে ফেমাস ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ডক্টরস পয়েন্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নিবেদিতা নাসিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, জনসেবা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কলারোয়া উপজেলায় ১৭ টি-হাসপাতাল রোডে মিতালী ডায়াগনস্টিক সেন্টার, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, আছিয়া মেমোরিয়াল ক্লিনিক এন্ড নাসিং হোম ডায়াগনস্টিক,ই-ল্যাব ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ষ্টার প্যাথলজি সেন্টার, কলারোয়া নাসিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শিশু ও জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মুন্না ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সুরক্ষা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কলারোয়া ডক্টরস ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ রোডে হাসান প্যাথলজি সেন্টার, সততা প্যাথলজি সেন্টার, শাওন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কাজিরহাটে জননী ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, রহিমা নাসিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সোনাবাড়িয়া বাজারে সোনাবাড়িয়া নাসিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, গয়ড়া বাজারে মায়ের হাসি ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কালিগঞ্জ উপজেলায় ১১ টি- নলতা শরীফে নলতা হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, আহছানিয়া মিশন চক্ষু ও জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নলতা চৌমুহনীতে খায়রুনন্নেছা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শেরে বাংলা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নারায়নপুরে কালিগঞ্জ সার্জিক্যাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ডাঃ মোঃ হযরত আলী ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফুলতলায় ঝরণা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, পাউখালীতে এ আলী ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নাজিমগঞ্জ বাজারে যমুনা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বাজার গ্রামে হক ডায়াগনস্টিক সেন্টার, লাইফ কেয়ার ডিজিটাল ল্যাব এন্ড হাসপাতাল, তালা উপজেলায় ১০ টি-সার্জিকাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, জে.এস ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সততা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, এস কে ডায়াগনস্টিক সেন্টার, লাইফ কেয়ার ল্যাব এন্ড কনসালটেশন সেন্টার, পাটকেলঘাটা পল্লী বিদ্যুৎ মোড়ে স্বাগতা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ডক্টরস ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, লোকনাথ নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মর্ডাণ পপুলার ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শ্যামনগর উপজেলায় ১২ টি- শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়কে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, আল মদিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শ্যামনগর প্যাথলজি, বিসমিল্লাহ প্যাথলজি, এম আরএ ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, তট প্যাথলজি, শান্তি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফাতিমা ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, রিডা প্রাইভেট হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মেডিকেল সাইন্স্ ল্যাব, প্রযুক্তি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শ্যামনগর শহরে শ্যামনগর ন্যাশনাল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ২ টি-মাগুরা গ্রামে খেয়া হাসি খুসি হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ঝাউডাংগা বাজারে ঝাউডাংগা সার্জিক্যাল এন্ড পাইলস ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক, সাতক্ষীরা পৌরসভার অভ্যন্তরে৭০টি- ডক্টরস পয়েন্ট এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সুস্থি ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফাতিমা ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টার, মুক্তা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ইউনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নাফ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বাঁকাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ইবনেসিন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, পঙ্গু ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মনজু মেমোরিয়াল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ক্রিস্টাল ডায়াগনস্টিক সাতক্ষীরা, সুরক্ষা ডিজিটাল ল্যাব, বিসমিল্লাহ ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নাহার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক এন্ড সিটি স্ক্যান সেন্টার, ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নওয়াব ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মেডিগার্ডেন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সাতক্ষীরা ন্যাশনাল ডায়াগনস্টিক, স্বপ্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মেডি কেয়ার এন্ড প্যাথলজি সেন্টার, সোনালী ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মোহিনী ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টার, ডা: মাহতাবউদ্দিন মেমোরিয়াল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, একতা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শেফা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফারজানা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, এভিএএস সমবায় হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ডক্টরস ল্যাব এন্ড হসপিটাল (প্রা:) লি: আকসা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কপতাক্ষ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ঢাকা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নিরাময় ডায়াগনস্টিক সেন্টার, স্বপ্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মাদার তেরেসা ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, একতা ডায়াগনস্টিক, শফি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নাজমুল ক্লিনিক প্যাথলজি বিভাগ, সিরাজ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, এম আলী পলি ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, আনোয়ারা মেমোরিয়াল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মেসার্স রেটিনা ডায়াগনস্টিক সার্ভিসেস, ম্যাসেঞ্জার ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টার, আল নুর ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মেঘনা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ডিজিটাল মেডিকেল সেন্টার, বুশরা হাসপাতাল প্যাথলজি, ফাহিম ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সানজানা নাসিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ল্যাব এইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সাতক্ষীরা ডায়াগনস্টিক কমপ্লেস, সাতক্ষীরা ট্রমা অর্থোপেডিক কেয়ার সেন্টার, কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সাউদা ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টার, মেসার্স পপুলার ডায়াগনস্টিক ল্যাব, সততা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সি,বি ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিমিটেড, ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতাল সাতক্ষীরা লিমিটেড, সংগ্রাম ডায়াগনস্টিক সেন্টার,, ব্রাক ডায়াগনস্টিক সেন্টার, রেহান ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, আল-কাওসার হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শিমুল মেমোরিয়াল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ডা: কিউ এ সিদ্দিকী মেমোরিয়াল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শাপলা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সূর্যের হাসি ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, হার্ট ফাউন্ডেশন এন্ড ইনসেনটিভ কেয়ার হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সিটি ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামের প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
জেলার সচেতন মহল জানান, চিকিৎসার নামে অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো অনিয়ম করছে, তার জন্য জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরেরও দায়বদ্ধ হতে হবে। এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে প্রতিনিয়ত খেলছে। তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে রোগীরা পরীক্ষার জন্য গেলে ভূয়া রিপোর্ট দিচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। এমনকি রিপোর্টে কোনো এমবিবিএস চিকিৎসকের স্বাক্ষরও থাকে না। তবে প্রতিনিয়ত রোগীরা আর্থিকভাবে হচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত এবং চিকিৎসকরাও ভুল ঔষধ প্রেসক্রাইব করছেন। তারা জানান, এসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে বড় পোস্টার, ব্যানার ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে বেশ জোরেসোরে প্রচার করে রোগীদের আকৃষ্ট করতে থাকেন মালিক পক্ষ। তারা আরও জানান, জেলার স্বাস্থ্যসেবার মান নিয়ে অনেক আগে থেকে ব্যাপক প্রশ্ন রয়েছে। হাসপাতালে আসা রোগীকে দালালদের মাধ্যমে বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে পাঠানোর অভিযোগও পুরোনো। এছাড়া যে প্রক্রিয়া ও সক্ষমতায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো চালানোর কথা, সে প্রক্রিয়া ও সক্ষমতার ধারে কাছেও নেই ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো। জেলার ২৫ লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা তাই বারবারই হুমকির মধ্যে ছিল ও এখনো আছে। এসকল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যে ধরণের প্রশাসনিক তৎপরতা থাকার কথা,তা বরাবরই উদাসিনতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকেছে। এ অবস্থা থেকে জেলা বাসিকে উদ্ধার করা আশু আবশ্যক। যখন সারাদেশে স্বাস্থ্য সেবাদানকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্বে শুদ্ধি অভিযান চলছে, সে সময়ে জেলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর নুন্যতম বৈধতা নেই, ভাবতেই গাঁ শিউরে ওঠে। জেলাবাসির স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে এসমস্ত অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হবে, এটাই প্রত্যাশিত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক রোগীর স্বজনরা জানান, সরকারি হাসপাতালে যে সব চিকিসক রোগী দেখে থাকেন তাদের অনেকেরই নিজস্ব চেম্বার রয়েছে। অনেকে সরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি নামে-বেনামে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক ও প্যাথলজি সেন্টারে রোগী দেখেন। এরাই প্রয়োজন ছাড়া কমিশনের লোভে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পছন্দের প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে পাঠাচ্ছেন। আর প্রেসক্রিপশন লেখার বিনিময়ে ল্যাবগুলোর কাছ থেকে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমিশন নিচ্ছেন। অথচ সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার সব ব্যবস্থা থাকলেও বলা হয়, মেশিন নষ্ট।
সিভিল সার্জন ডা: হুসাঈন সাফাওয়াত জানান, জেলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোকে লাইসেন্স ও নবায়নের আওতায় নিয়ে আসার জন্য কাজ চলছে। বিভিন্ন দিক থেকে তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করছি। সরকারও এই বিষয়ে অনেক গুরুত্ব দিচ্ছে। ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় নবায়ন না হলে কিছু দিনের মধ্যে এগুলো বন্ধ করা হবে।
বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনিষ্টিক ওনার্স এসোশিয়েশনের সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি ডা: হাবিবুর রহমান জানান, লাইসেন্স নবায়নের ফি ১ হাজার টাকার পরিবর্তে যখন ৪০ হাজার টাকা করা হলো তখন থেকেই লাইসেন্সবিহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা বাড়তে থাকল। কারণ এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশই ছোট। যাদের অনেকেই সব খরচ মিটিয়ে আয় করতে পারে না। তাদের পক্ষে ৪০ হাজার টাকা ফি দিয়ে লাইসেন্স নবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া ২০১৮ সালের পর থেকে ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলো নিবন্ধন ও নবায়ন করতে হয় অনলাইনে। সেখানে যেসব শর্ত দেয়া আছে তা পূরণ করতে পারে না ডায়াগনস্টিক সেন্টার। তথ্যগুলো নির্দিষ্ট ফরমেটে পূরণ করতে হয়। কোনো তথ্য বাদ থাকলে সফটওয়্যার তা নেয় না। এমন আরো কিছু কারিগরি ঘাটতির কারণে অনেকেই ওই ফরমেট পূরণ করতে পারে না। এছাড়াও ফরম পূরণের ক্ষেত্রে ঠিকানার জায়গায় গিয়ে অনেকে আটকে যাচ্ছে। ফলে তারাও নবায়ন এড়িয়ে যাচ্ছে। আর নিবন্ধনও নবায়ন করতে পারছে না। সেজন্য জেলার অধিকাংশ ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারের মালিকদের কোনো নিবন্ধন নেই। তারা বছরের পর বছর সাধারণ রোগীদের বিভিন্ন টেস্টের নামে সাধারণ রোগীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিচ্ছেন লুপে। এসব ঘটনা স্বাস্থ্য বিভাগের অধিকাংশ কর্মকর্তারাও জানেন। কিন্তু তাদের প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের জন্য কোনো উদ্যোগ আজও পর্যন্ত গ্রহন করেননি তারা।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এর সভাপতি পল্টু বাসার জানান, জেলার প্রাইভেট হাসপাতালের মালিক ও ডাক্তারদের সাথে সমন্বয় রয়েছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের। রোগী প্রতি তাদেরকে দেয়া হয় বড় অংকের কমিশন। আবার কিছু কিছু ডাক্তার ও প্রাইভেট হাসপাতালের মালিকরা নির্ধারিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রিপোর্ট না হলে এটা হাতে নেন না তাহারা।এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে রোগীদের। পূণরায় টাকা খরচ করে তাদের ফরমায়েশি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে টেস্ট করাতে হয়। এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর অধিকাংশেরই স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এসব ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারগুলো অবিলম্বে চিহ্নিত করে দ্রুত তাদের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করতে ব্যর্থ হলে আবারও সরকার লক্ষ লক্ষ টাকার হারাবে রাজস্ব এবং সাধারণ রোগীরাও তাদের দ্বারা প্রতারিত হবে। সেজন্য সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মকর্তাদের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য নিত্যানন্দ সরকার জানান, সাইনবোর্ডসর্বস্ব ওসব প্রতিষ্ঠানে নিয়মনীতির বালাই নেই, হাতুড়ে টেকনিশিয়ান দিয়েই চালানো হয় রোগ নির্ণয়ের যাবতীয় পরীক্ষা এবং দেয়া হয় মনগড়া রিপোর্ট। একই রোগ পরীক্ষায় একেকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে একেক রকম রিপোর্ট পাওয়ার অনেক ঘটনা রয়েছে। অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠা শতাধিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার স্বাস্থ্যসেবার জন্য চরম হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন ঘটনা শুধু জেলার ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারগুলোতে নয়; সরকারি হাসপাতালগুলোতে দেখা যায়। আমরা মানুষকে সচেতন করার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের অনিয়ম নিয়ে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনও করেছি। এরপরে কিছুদিন তারা ভালো কাজ করলেও পূর্বের ন্যায় একই কাজ শুরু করেন মেডিকেল টেকনোলজিষ্টরা।
নাগরিক কমিটির ফাহিমুল হক কিসলু জানান, কমিশনের কারণে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সহ বেশিরভাগ সরকারি হাসপাতালের প্যাথলজিক্যাল বিভাগকে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে দেয়া হয় না। সেখানে সবচেয়ে দামী দামী আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হলেও অজ্ঞাত কারণে দ্রুততম সময়েই সেগুলো অকেজো হয়ে পড়ে থাকে। আর ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর মালিকরা সরকারি অনুমোদন নেয়ারও প্রয়োজনবোধ করে না। কেউ কেউ লাইসেন্সের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরে আবেদন পাঠিয়েই বড় বড় ডায়াগনস্টিক সেন্টার, রোগ নিরাময় কেন্দ্র খুলে বসেছে। ভুঁইফোড় ওসব ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোর বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছে সরকারের স্বাস্থ্য অধিদফতরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। এগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব হলে দুর্নীতি ও সাধারণ রোগীদের অর্থের অপচয় বন্ধ হবে। আর অভিযুক্তদের সহজেই চিহ্নিতকরণ এবং শাস্তির আওতায় আনা যাবে।
ভুক্তভোগী পায়রাডাঙ্গা গ্রামের মোমেনা খাতুন জানান, অসুস্থতার জন্য গত মাসের ১৩ তারিখে আমার স্বামী সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছিল। এরপরে ঐ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার আমাকে দেখে কয়েকটি টেস্ট তার প্রেসক্রিপশনে লিখে দিয়ে ডিজিটাল ডায়াগনিষ্টিক এন্ড সিটি স্ক্যান সেন্টার ও সাতক্ষীরা ডায়াগনিষ্টিক কমপ্লেস এ পাঠিয়েছিল। টেস্টগুলো করতে আমার স্বামী ঐ প্রতিষ্ঠানে গিয়েছিল এবং টেস্টও করছিল। তবে প্যাথলজিক্যাল রিপোর্টে কোনো এমবিবিএস চিকিৎসকের স্বাক্ষর বাদে ঐ প্রতিষ্ঠানের টেকনোলজিষ্টরা স্বাক্ষর করে রিপোর্ট দেয়। ঐ রিপোর্টটি আদৌ সত্য কিনা তা বলতে পারবো না। তাদের শাস্তি দাবি করেন ভুক্তপরিবারের সদস্যরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Comments are closed.

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews