সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনার টিকাগ্রহণ ও করোনা পরীক্ষার নমুনা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা মানুষের ভিড় বেড়েছে। একই সঙ্গে চলছে কঠোর বিধিনিষেধ। কিন্তু এর মধ্যেও জগন্নাথপুরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। প্রতিদিন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। জগন্নাথপুর পৌরশহর থেকে গ্রামেও ছড়িয়ে পড়েছে সংক্রমণ। যারা জ্বর, গলা ও মাথা ব্যথা, সর্দি-কাশি নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা পরীক্ষা করাচ্ছেন, তাদের অনেকের রিপোর্ট পজিটিভ আসছে।
জগন্নাথপুর পৌর এলাকা ও উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে জ্বর, গলা ও মাথা ব্যথা, সর্দি-কাশি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন অনেকে। চিকিৎসকের মতে, নিশ্চিত করোনার উপসর্গ থাকলেও নমুনা পরীক্ষা করেননি অনেকে।
জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মধু সুধন ধর বলেন, এখন অনেক লোকজন করোনার টিকা নিচ্ছেন।
এদিকে করোনা নিয়ে অনেকের মাঝে রয়েছে ভুল ধারণাও। জ্বরে আক্রান্ত স্থানীয় বাসিন্দা লায়েক মিয়া বলেন, এ তো সিজনাল জ্বর, করোনা না! করোনা তো শহরের রোগ! গ্রামে ঢুকবে কেন?
তিনি আরও বলেন, ঠান্ডা জ্বর তো প্রতিবছরই হয়। স্বাভাবিক নিয়মেই আমার এই রোগ হয়েছে। আমার বাড়িসহ আশপাশের প্রায় সব বাড়িতেই জ্বর, ঠান্ডা ও সর্দি-কাশিতে ভুগছেন অনেকে। জগন্নাথপুর বাজারে এখন করোনার উপসর্গ নিয়ে ঘুরছেন গ্রামের অসংখ্য মানুষ।
অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জগন্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দারা করোনার উপসর্গকে ‘সিজনাল অসুখ’ বলেই মনে করছেন। জ্বর, সর্দি-কাশি, গা ব্যথা ও ডায়রিয়া দেখা দিলেও বেশিরভাগ মানুষ ডাক্তার দেখাতে অনীহা প্রকাশ করছেন।
এতে সচেতনদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, সংক্রমণের শৃঙ্খল ভেঙে দিতে না পারায় এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। আর জগন্নাথপুর স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, জেলার অন্য উপজেলায় হঠাৎ বেড়ে গেছে সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। উপসর্গ থাকলেও অধিকাংশ মানুষ করোনা পরীক্ষায় তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ফলে দিনকে দিন করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়েই চলেছে।
জগন্নাথপুরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে এ পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্যমতে, জগন্নাথপুর উপজেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আরও ৭ জন কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছে ৪০১ জন, হোম আইসোলেশনে আছেন ৫৩ জন, হাসপাতালে আইসোলেশন আছেন ৪ জন ও মোট সুস্থ হয়েছেন ৩৩৮ জন।
Leave a Reply