নিজস্ব প্রতিবেদক
সাবেক প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলামের ছেলে মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে গ্যাস-সংযোগ স্থানান্তর ও নতুন সংযোগ দেওয়ার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালত গ্রহণ করেননি। এ মামলায় মন্ত্রীপুত্রসহ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১০ এপ্রিল) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ জেবুননেসা এ আদেশ দেন। আদালতে দায়িত্বরত দুদকের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) আবদুল লতিফ এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মন্ত্রীপুত্রসহ পাঁচ আসামিকে অব্যাহতির সুপারিশ করে আদালতে দুদকের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণের বিষয়ে গত রোববার শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত গতকাল আদেশের জন্য দিন রাখেন। সে অনুযায়ী, গতকাল আদেশ দেন আদালত।
আদেশের পর দুদকের জিআরও আবদুল লতিফ বলেন, ‘আদালত চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি গ্রহণ করেননি। মামলার এজাহারে থাকা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়েছেন আদালত।’
আইনজীবীরা জানান, উপযুক্ত কারণ ছাড়া মামলা থেকে কোনো আসামি বা সব আসামিকে বাদ দিয়ে তদন্তকারী চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিলে আদালত তা গ্রহণ না করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আদালত এজাহারে থাকা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সরাসরি আমলে নিতে পারেন।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী বলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পেলে দুদক মামলা করে। ফলে, দুদকের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার সুযোগ থাকে না। এ ধরনের ঘটনায় দুদকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়।
গত ৩০ মার্চ মন্ত্রীপুত্রসহ পাঁচজনকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল দুদক।
পাঁচ ব্যক্তি হলেন কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) সাবেক মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ারিং ও সার্ভিসেস) মো. সারওয়ার হোসেন, তৎকালীন দক্ষিণ জোনের টেকনিশিয়ান (সার্ভেয়ার) মো. দিদারুল আলম, ব্যবস্থাপক মজিবুর রহমান, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) মোহাম্মদ আলী চৌধুরী ও গ্রাহক মন্ত্রীর ছেলে মুজিবুর রহমান।
মুজিবুর রহমানের পক্ষে তাঁদের প্রতিষ্ঠান সানোয়ারা গ্রুপের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান দেলোয়ার হোসেন আগে বলেছিলেন, তাঁরা নিয়ম মেনে গ্যাস-সংযোগ নিয়েছিলেন। এখানে কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি হয়নি।
দুদক সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ১০ জুন দুদকের তৎকালীন উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন। পরে শরীফকে চাকরিচ্যুত করে দুদক।
মামলার এজাহারে বলা হয়, চট্টগ্রাম নগরের হালিশহর এলাকার বাসিন্দা এম এ সালামের নামে বরাদ্দ করা ১৮টি অব্যবহৃত দ্বৈত চুলার গ্যাস-সংযোগ ছিল। এর মধ্যে ১২টি নগরের চান্দগাঁও সানোয়ারা আবাসিক এলাকার গ্রাহক মুজিবুর রহমানের নামে স্থানান্তর করা হয়। এ কাজে সালামের স্ত্রীর নামে ভুয়া চুক্তিনামাও করা হয়। সালাম ও মুজিবুরের গ্রাহক সংকেত পৃথক হওয়ায় সংযোগ স্থানান্তরের কোনো আইনগত বৈধতা নেই। এ ছাড়া ২০১৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে গ্যাস-সংযোগ দেওয়া বন্ধ থাকলেও এ সিদ্ধান্ত অমান্য করে মুজিবুরের নামে আরও ১০টি সংযোগ দেওয়া হয়।
মামলা হওয়ার তিন দিন পর ২০২১ সালের ১৩ জুন অবৈধ ২২টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে কেজিডিসিএল। কেজিডিসিএলের তিন কর্মকর্তাকেও গ্রেপ্তার করে দুদক। পরে অবশ্য তাঁরা জামিনে বেরিয়ে যান।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy