আনোয়ার হোসেনর্আন্নু বিশেষ প্রতিনিধিঃ
সাভার আশুলিয়ার ড্রামে পঁচা লাশের পরিচয় করেছে পুলিশ এবং হত্যাকান্ডে জড়িত আসামীদের গ্রেফতার করেছে র্যাব-১। বন্ধুর সা ভয়থে স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের সন্দেহে তাকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে র্যাব।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করে র্যাব ১ এর সহকারী পুলিশ সুপার নোমান আহমেদ। সোমবার লাশের পরিচয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম।
হত্যাকান্ডে জড়িত আসামীরা হলো- নাটোরের গুরুদাসপুর থানার আব্দুস সুকুর এর ছেলে মোঃ সাব্বির হোসেন (২২), চাঁন প্রমানিকের ছেলে মোঃ আনোয়ার হোসেন(২০), রায়হানের ছেলে মোঃ সুরুজ আলী(১৮)। সাব্বিরকে লালমনিরহাট থেকে এবং বাকিদুজনকে মানিকগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং কঙ্কালপ্রায় গলিত মৃতদেহটি জয়নালের বলে নিশ্চিত করে। তারা পরস্পর পূর্ব পরিচিত এবং বন্ধু।
আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার ইদ্রিস কাজীর ৫ম তলা বাসার ৩য় তলায় ০২ রুমের একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতো সাব্বির ও সাথী নামে এক দম্পতি। সাব্বিরের বাসায় পূর্ব পরিচিত জয়নালকে সাবলেট ভাড়া দিলে সাথীর সাথে জয়নালের সখ্যতা গড়ে উঠে, যা সাব্বির পরকীয়া মনে করে।
এ ঘটনায় মনোমালিণ্যের জের ধরে সাথীকে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দেয় সাব্বির। পরে সন্দেহের পরকীয়ার শাস্তি দিতে জয়নালকে তার বাসায় পুনরায় ডেকে নিয়ে আসে চাকরি দেয়ার কথা বলে। জয়নাল ও সাব্বিরের গ্রামের বাড়ি একই এলাকায়। পরবর্তীতে জয়নাল সাব্বিরের বাসায় এলে পূর্ব পরিকল্পনাঅনুযায়ী আরো দুই সহযোগী আসে সাব্বিরের বাসায়।
পরবর্তীতে গত ১৪ আগস্ট ২০২১ তারিখ রাত ১১ টার দিকে সাব্বির ভুক্তভোগী জয়নালকে তার ভাড়া বাসায় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী দুই বন্ধু আনোয়ার এবং সুরুজের সহায়তায় গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যা করার পর লাশ গুম করার জন্য একটি পানির ড্রামের মধ্যে জয়নালের মৃতদেহ রেখে দরজা বন্ধ করে বাসায় তালা দিয়ে পালিয়ে যায়।
নাটোরের গুরুদাসপুরে আনোয়ারের প্রতিবেশী ভুক্তভোগী জয়নালের সাথে গত ১৪ আগস্ট হতে তার বাবা-মা মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। খোঁজ নিয়ে জয়নালের পিতামাতা জানতে পারে জয়নাল সাব্বিরের সাথে সাবলেট হিসেবে ভাড়া থাকে।
জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবের কাছে আসামীরা আরো জানায়, তারা টিভি এবং মোবাইল ফোনে অপরাধ সংক্রান্ত বিদেশী সিরিয়াল দেখে এই হত্যাকান্ডের পরিকল্পনা করে এবং গ্রেফতার এড়ানোর লক্ষ্যে তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও বন্ধ রাখে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
আশুলিয়া থানার তদন্ত ওসি জিয়াউল ইসলাম বলেন, সোমবার তার পিতামাতা লাশের পরিচয় সনাক্ত করেছে। লাশটা যে জয়নালের এমন তথ্য আমাদের হাতে আসার পর জয়নালের পিতামাতাকে খবর দেয়া হলে তারা গুরুদাসপুর থেকে ঢাকায় এসে লাশের পরিহিত কাপড় দেখে লাশ সনাক্ত করেন।