সিলেটে প্রেমে করে পালিয়ে বিয়ে, ১১ মাসের মধ্যেই লাশ হলেন রোকসানা
জুয়েল খাঁন(সিলেট প্রতিনিধি)
Facebook Twitter share
মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার রোকসানা বেগম (১৮) বিয়ের ১১ মাসের মধ্যেই লাশ হলেন শ্বশুরবাড়িতে। গত বৃহস্পতিবার ১০ জুন সিলেটের এয়ারপোর্ট থানার মুড়ারগাও ( ধুপাগুল) গ্রামে স্বামীর বাড়ি থেকে রোকসানার লাশ উদ্ধার করে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ। এ বিষয়ে থানায় অপমৃত্যু মামলা হলেও পরিবারের পক্ষ থেকে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে।
Surjodoy.com
আদালতের মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আত্মীয়তার সূত্রে রাজন মিয়া ও রোকসানা বেগম এর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সম্পর্ক রোকসানার পরিবার থেকে মেনে না নেওয়ায় গত বছরের ২৬ জুন দুজনে পালিয়ে বিয়ে করেন। একপর্যায়ে দুই পরিবার বিষয়টি মেনে নেয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী রাজন বিভিন্ন সময়ে ব্যবসার কথা বলে রোকসানাকে ২ লক্ষ টাকার জন্য চাপ দেয়। যৌতুকের টাকা না পেয়ে প্রায় সময় রাজন সহ তার পরিবারের লোকজন রোকসানাকে নির্যাতন করতো। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ১০ জুন দুপুরে রোকসানা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে খবর দেওয়া হয় তার পরিবারকে।
The Daily surjodoy
রোকসানা বেগমের মা দাবি করেন, বিয়ের পর থেকে আমার মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজন যৌতুক দাবি করে আসছিল। যৌতুকের জন্য প্রায় দিন আমার মেয়েকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন অসহ্য নির্যাতন করত। অবশেষে যৌতুকের টাকা চেয়ে না পেয়ে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার মেয়ে রুকসানা বেগম কে নির্যাতন করে হত্যা করেছেন। এই হত্যার ঘটনাকে আড়াল করতে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালানো হচ্ছে। ঘটনার দিন তার স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার মেয়েকে প্রচন্ড মারধর করে।
The Daily surjodoy
মেয়েকে হত্যার পর ঘাতক স্বামী রাজন মিয়া ফোন করে আমাদের কে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে খবর দেয়। ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি আমার মেয়ের লাশ দাফনের জন্য স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন খুব তাড়াহুড়ো করছে। আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মামলা দায়ের করি।
The Daily surjodoy
সরোজমিনে শুক্রবার ( ১৮ জুন ) নিহত রোকসানার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় পরিবারটিতে চলছে শোকের মাতন। প্রতিবেদককে দেখে রোকসানা বেগম এর মা ন্যায় বিচারের দাবিতে কান্নায় ভেঙে পড়েন। ইতিমধ্যে রোকসানার মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার বোন রিনা বেগমের একটি ভিডিও পোস্ট ভাইরাল হয়। ভিডিওটিতে নিহত রোকসানার মুখ ও কপালে কালো আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যায়।
The Daily surjodoy
হত্যার অভিযোগের বিষয়ে রোকসানার বেগমের স্বামী রাজন মিয়ার সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, ঘটনার দিন ১ টার পর বাড়িতে এসে খোঁজাখুঁজি করে আমার স্ত্রীকে পাচ্ছিলাম না। কিছু সময় পর হঠাৎ আমাদের পুরনো একটি গোয়াল ঘরে গিয়ে আমার স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাই। যৌতুকের দাবিতে আমার স্ত্রীকে নির্যাতন করার বিষয়টি মিথ্যা।
The Daily surjodoy
সিলেটের এয়ারপোর্ট থানার ওসি মাইনুল জাকির মুঠোফোনে রোকসানা বেগমের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর এটা হত্যা না আত্মহত্যা বলা যাবে। বর্তমানে এ ব্যাপারে এয়ারপোর্ট থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy