ফারহানা বি হেনা, বিশেষ প্রতিনিধি
সিলেটে দিনের পর দিন বাড়ছে ধর্ষণের ঘটনা। এত আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন মেয়ে শিশু ও নারীরা। এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের ঘটনার পর একাধিক ধর্ষণের ঘটনা বেরিয়ে আসছে। এসব ঘটনার আসামিরা এতদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলেও তীব্র আন্দোলনের মুখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ধর্ষকদের গ্রেফতার করছেন। পৃথক ধর্ষণের ঘটনায় গত শনি ও রবিবার তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলায় এক ছাত্রলীগ কর্মীকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেছে পুলিশ। অপর এক আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
সিলেট নগরীর দাঁড়িয়াপাড়ায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে গ্রেফতার ছাত্রলীগ কর্মী রাকিব হোসেন নিজুকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেছে পুলিশ। রবিবার বেলা ৩টার দিকে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিজুকে হাজির করে তিনদিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এর আগে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গোলাপগঞ্জ থেকে মিজুকে গ্রেফতার করে র্যাব-৯। রবিবার এসএমপির কোতোয়ালি থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
অপরদিকে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে রবিবার (৪ অক্টোবর) ভোরে সিলেট শহরতলির কালাপাহাড় এলাকা থেকে একজনকে এবং সুনামগঞ্জের আক্তাপাড়া এলাকা থেকে অপরজনকে গ্রেফতার করে এসএমপির জালালাবাদ থানা পুলিশ।
তারা হল- জালালাবাদ থানা এলাকার রায়েরগাঁওয়ের নাসির উদ্দিনের ছেলে জসিম উদ্দিন (২২) ও একই এলাকার তজম্মুল আলীর ছেলে মো. এখলাছ মিয়া (২০)। ৬ সেপ্টেম্বর শহরতলির রায়েরগাঁও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। পরদিন স্থানীয় মুরুব্বি আশিক আলী, হারুন, ইমদাদ আলী ও জালাল ছাত্রীর বাবাকে মামলা করতে নিষেধ করেন এবং বিষয়টি তারা সালিশের মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দেন। কিন্তু ঘটনার ছয়দিন পর বিচার না পেয়ে জালালাবাদ থানায় মামলা করেন। এর ১৯ দিন পর চার মুরুব্বি ও দুই আসামিকে গ্রেফতার করে এসএমপির জালালাবাদ থানা পুলিশ। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় চার মুরুব্বিকে ছেড়ে দেয়া হয়।
জালালাবাদ থানার ওসি অকিল উদ্দিন আহমদ বলেন, তারা মামলায় অভিযুক্ত নয়। বিষয়টি সালিশে সমাধান করতে চেয়েছিলেন তারা। তাদের সহযোগিতায় আমরা আসামিদের গ্রেফতার করেছি। তাই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দিয়েছি।
এদিকে ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেট নগরীর শিবগঞ্জ লামাপাড়ার শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের তৃতীয় তলার পরিত্যক্ত কক্ষে ১৬ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে স্থানীয় যুবক মোহাম্মদ আলী (১৮)। এ ঘটনায় শনিবার মেয়েটির মা বাদী হয়ে এসএমপির শাহপরাণ (রহ.) থানায় মামলা করেন। পরে একই দিন লামাপাড়া থেকে পুলিশ মোহাম্মদ আলীকে গ্রেফতার করে। আলী লামাপাড়ার সাকু মিয়ার কলোনির বাসিন্দা সোহেল মিয়ার ছেলে। তাকে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে সে ধর্ষণের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। তাকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।