1. dailysurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
সুন্দরবন রক্ষার উদ্যোগ নিন
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৪:২৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
“বাংলাদেশ সূফী ফাউন্ডেশন পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে রমজান মাসে যাত্রা শুরু করবে” নীলফামারীতে উৎসবমুখর পরিবেশে চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। নীলফামারী টেলিভিশন ক্যামেরা জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের আহবায়ক কমিটি গঠন এস আই আল মামুন এর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হয়েছে – ভুক্তভোগী সজল কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন ৭ই মার্চ সাংবাদিক নয়নের উপর হামলার প্রতিবাদে সারাদেশে মানববন্ধন  নওগাঁর সাপাহারে ৫৯ জন ভূয়া দাখিল পরীক্ষার্থী বহিষ্কার, প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বিরুদ্ধে মামলা ২১শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ভাষা শহীদদের স্বরনে শ্রদ্ধাঞ্জলি : মোঃ লিটন মাদবর বিল্লাল  ২১শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ভাষা শহীদদের স্বরনে শ্রদ্ধাঞ্জলি : আনোয়ার হোসেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২১শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ভাষা শহীদদের স্বরনে শ্রদ্ধাঞ্জলি : হাসান মন্ডল 

সুন্দরবন রক্ষার উদ্যোগ নিন

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২০ অক্টোবর, ২০২১, ৫.৪৫ এএম
  • ১২৭ বার পঠিত

বিজন কান্তি রায় প্রতিবেদকঃ

সুন্দরবন রক্ষার উদ্যোগ নিন

সুন্দরবন নামটি শুনলে আমাদের মনে আসে ‘সুন্দর জঙ্গল’ বা ‘সুন্দর বনভূমি’। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিস্তৃত বিশ্বের সর্ববৃহৎ এ ম্যানগ্রোভ বন পৃথিবীর অরক্ষিত ভূখণ্ডগুলোর মধ্যে একটি। গঙ্গা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার ব-দ্বীপ এলাকায় অবস্থিত প্রায় দশ হাজার বর্গকিলোমিটার অপরূপ বনভূমি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনা ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলাজুড়ে বিস্তৃত। ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কোর ঘোষণায় সুন্দরবন বিশ্বে ঐতিহ্যবাহী একটি স্থান হিসেবে স্বীকৃত। দুঃখজনক হলেও সত্য, সুন্দরবনের সার্বিক পরিস্থিতি বিবিধভাবে বিপন্ন। এই ধারায় রয়েছে নদী বিনষ্টকরণ ও জলবায়ু পরিবর্তন, জলোচ্ছ্বাস, চিংড়ি চাষ ও স্থায়ী জলাবদ্ধতা, পশু শিকার, গাছকাটা, বন্যপ্রাণী বিলুপ্তি, নৌপথ অব্যবস্থাপনা, জনপদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা সংকট ও ধ্বংসাত্মক উন্নয়ন। ধরাবাহিকতার সর্বোচ্চ ধাপ হচ্ছে বন দখল। অমূল্য বন সম্পদের এই হাল হওয়ায় পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এর ফলে আছড়ে পড়ছে একের পর এক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়। আবহাওয়ার পরিবর্তনের জেরে জলোচ্ছ্বাস বাড়ছে। সুন্দরবনের নাম সমগ্র বিশ্বের কাছে সুপরিচিত ও আকর্ষণীয়। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এখানকার পরিবেশ-পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে!

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ১৯ শতকের প্রথম দিকে সুন্দরবনের আয়তন ছিল ৯৬৩০ বর্গকিলোমিটার। যার বিস্তার দক্ষিণবঙ্গের নিম্ন প্রান্তে। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কাকদ্বীপ থেকে উত্তর চব্বিশ পরগনার বসিরহাট পর্যন্ত। দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় জনবসতি গড়ে ওঠায় এখানকার আদি বনভূমির অনেকটাই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ৫৩৬৬ বর্গকিলোমিটার বনভূমি আগেই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। বাদবাকি ৪২৬৪ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে ৪১ ভাগ পানি। সাম্প্র্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, পানির এলাকার অনুপাত বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে। অর্থাৎ, বনভূমি আছে মাত্র ২০০০ বর্গকিলোমিটারের কিছু বেশি অংশে।

জানা যায়, প্রতি বছর সুন্দরবন থেকে কাঠ কাটার জন্য প্রায় ৩৪০টি নৌকাকে লাইসেন্স দেওয়া হয়। প্রদত্ত লাইসেন্স সাপেক্ষে ১০ থেকে ১২ হাজার টন কাঠ কাটার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে নির্দিষ্ট এই পরিমাণ থেকে একশ গুণ বেশি কাঠ চোরাইপথে কেটে নিয়ে আসছে অসাধু চক্র। এ চক্রগুলো ধ্বংস করছে বিরল প্রজাতির বিভিন্ন গাছ। যদিও ওইসব গাছ কাটা আইনত নিষিদ্ধ। ‘দেশের প্রথম ম্যানগ্রোভ চিড়িয়াখানা সুন্দরবনে হতে চলেছে’- এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। সম্প্র্রতি বাপা আয়োজিত এক সমাবেশে বলা হয়েছে, ‘সুন্দরবন কেবল বাংলাদেশের নয়, বিশ্ববাসীর সম্পদ। আমরা এই বনের গর্বিত অভিভাবক। এই গর্বের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বন রক্ষায় আমাদের দায়িত্ব। আমাদের সম্পদ, গর্ব, রক্ষাবর্ম ও ঐতিহ্যের প্রতীক সুন্দরবনকে রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’

ব্রাজিলের চিরসবুজ বিস্তৃত অ্যামাজন গহিন বনকে বলা হয় বিশ্বের ফুসফুস, তেমনি সুন্দরবনও বাংলাদেশের শ্বাস-প্রশ্বাসের এক অঙ্গ। এই বন প্রাকৃতিক দুর্যোগেরও এক প্রতিরোধক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন আমাদের সচেতন হওয়ার সময় এসেছে। এখন যদি সচেতন হওয়া যায়, তাহলে হয়তো কিছুটা হলেও প্রাকৃতিক সম্পদ বাঁচানো সম্ভব। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আমাদের বন্ধু সুন্দরবনকে রক্ষা করার বড় রকমের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং এই অঞ্চল ঘিরে বাড়ছে মানুষের বসতি। বাড়ছে ট্যুরিস্ট রিসোর্টের সংখ্যা।

আইলা, বুলবুল এবং আম্পানের ধ্বংস থেকে রক্ষাকারী সুন্দরবনকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষার প্রতিরোধ। প্রাকৃতিক দুর্যোগে বনের প্রতিরোধ ক্ষমতা হয়ে যাচ্ছে দুর্বল। ক্রমাগত সংকুচিত হয়ে আসা বনে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে প্রাণিকুল। ভেঙে পড়ছে শত বছরের ইকোসিস্টেম। সুন্দরবনের সবকিছুই সারা পৃথিবীতে অদ্বিতীয়। এর গাছ ও পশুপাখি অন্য কোনো বনে বা স্থানে বংশানুক্রমিকভাবে বাঁচবে না। এই বন আর কৃত্রিমভাবে তৈরি সম্ভব নয়। সুন্দরবন ধ্বংস হলে শুধু আমরা নই, সমগ্র বিশ্ব চিরদিনের মতো অমূল্য সম্পদ হারাবে। সুতরাং অবিলম্বে সুন্দরবনকে রক্ষা করার উদ্যোগ নিতে হবে। আশা করি সরকার বিষয়টি যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Comments are closed.

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews