বিশেষ প্রতিনিধিঃ-

সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধ ভাবে তিন ফসলী জমি বিনষ্ট করে মাটি,বালু উত্তোলন কারী,ভূমিদস্যু, বেনাপোল পোর্টথানাধীন বাহাদুরপুর গ্রামের কুখ্যাত সন্ত্রাসী আশা বাহিনী’র আক্রমনে লাঞ্চিত হয় বেনাপোলের স্থানীয় ১০-১২ সাংবাদিকরা। এই ঘটনাটি ৩ নং বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ধাণ্যখোলা গ্রামের মেন্দেরটেক এলাকায় ঘটে। উক্ত ঘটনার বিষয়টি জাতীয় দৈনিক সূর্যোদয় পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক তৌহিদ আহম্মেদ রেজার অদৃষ্টিগোচর হলে সম্পাদকের নির্দেশে কুখ্যাত সন্ত্রাসী আশা বাহিনীর দ্বারা সাংবাদিক লাঞ্চিতের সংবাদটি জাতীয় দৈনিক সূর্যোদয় পত্রিকায় প্রকাশিত করা হয় এবং বিষয়টি নিয়ে সম্পাদক নিজেই স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে ও হামলাকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেন। সম্পাদক তৌহিদ আহম্মেদ রেজার হস্তক্ষেপে ভূমিদস্যু কুখ্যাত সন্ত্রাসী আশা ও তার সহযোগী বাবলু কে আটক করেছে পুলিশ।

প্রকাশিত সংবাদ ও ঘটনাসূত্রে জানাগেছে গত বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে ৩ নং বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ধাণ্যখোলা গ্রামের মেন্দেরটেকে তিন ফসলী জমি বিনষ্ট করে ভূমিদস্যু এবং ঐ এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী আশা তার বাহিনী নিয়ে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে দেদারছে প্রায় শতবিঘা জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি এবং বালি উত্তোলন করছিল।

অবৈধ মাটি,বালু উত্তোলনের কাজে প্রায় ২০ থেকে ২৫ টি ট্রাক এবং ট্রলি ব্যবহৃত হয়। মাটি,বালু ক্রয়-বিক্রয়ের কাজে ব্যবহৃত ঐ সকল ট্রাক,ট্রলির চলাচলে রাস্তার ধুলি কণায় ঐ এলাকার উঠতি ইরি-বোরো ধানের ব্যপক ক্ষতি সাধন হচ্ছে এবং ঐ এলাকার পাকা,আধাপাকা রাস্তা ভেঙ্গে খানাখন্দে পরিণত হচ্ছে,সেইসাথে গাড়ীর শব্দ দূষনে বাসা বাড়ীতে স্কুল,কলেজের শিক্ষার্থীরা ঠিকমত লেখাপড়া করতে পারে না, এমনকি

মসজিদ,মাদ্রাসা গুলোয় নামাজিরা ঠিকমত আল্লাহর ইবাদত করতে পারে না,এমন একটা পরিস্থিতিতে এলাকার মানুষ অতিষ্ট হলেও সন্ত্রাসী আশা বাহিনীর ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেতো না। খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, উত্তোলনকৃত মাটি গুলো পার্শ্ববর্তী অর্নব ব্রীকস ফিল্ড আরো অন্যান্য ব্রীকস ফিল্ডে বিক্রয় করা হচ্ছিল।

বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের কানে গেলে প্রায় ১০-১১ জন সাংবাদিক তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে মাটি,বালু উত্তোলনের স্থান ৩ নং বাহাদুরপুর ধাণ্যখোলা গ্রামের মেন্দেরটেক বাওড় সংলগ্ন কৃষি জমি এলাকায় সংবাদ সংগ্রহের জন্য যায়। মাটি,বালু উত্তোলনের দৃশ্য ভিডিও ধারনের সময় কুখ্যাত সন্ত্রাসী মাটি খেকো আশা এবং তার সন্ত্রাসী বাহিনী সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।

হামলার বিবরন জানিয়ে সাংবাদিক সুমন জাতীয় দৈনিক সূর্যোদয় কে জানান, দুপর সাড়ে ১২ টার দিকে সংবাদ সংগ্রহের জন্য বাহাদুরপুর বাওড় সংলগ্ন মেন্দের টেকের পাশ থেকে কৃষি জমি থেকে মাটি উত্তোলন করছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে আমি এবং আমার সহকর্মী ৩ জন সাংবাদিক সহ সেখানে গিয়ে মাটি উত্তোলনের ছবি তুলি!

এবং মাটিবাহী ট্রাক্টর চালকের নিকট জিজ্ঞাসা করি কে বা কারা মাটি উত্তোলন করছেন তখন দূর হতে খালি গায়ে এক ব্যক্তি সহ ৩ জন আমাদের কাছে এসে বলে “ছবি তুললি কেন তোদের ছবি তোলার অনুমতি কে দিছে” বলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে এবং বলে আমার এলাকায় তোদের ঢোকার পারমিশন কে দিয়েছে।

তোদের মত সাংবাদিকদের মাটিতে পুতে রাখবো এসব বলে আমাদের সাথে থাকা ক্যামেরা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয় আশা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর অন্যতম কুখ্যাত সন্ত্রাসী বাবলু,সুমন, সহ অরো ৬ থেকল ৭ জন। তারপর তারা আমাদেরকে শারিরিক ভাবে নির্যাতন ও মারধর করে এবং ধারণকৃত ভিডিও মুছে ফেলার জন্য সাথে থাকা ক্যামেরা ও স্ট্যান্ড অস্ত্রের মুখে ছিনতাই করে নেয়।

এদিকে একই নিউজের সংবাদ সংগ্রহে সেখানে উপস্থিত হন সাংবাদিক সাহিদুল ইসলাম শাহিন সহ তার সহযোদ্ধা ৬ জন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে আশা বাহিনী তাদেরকেও মাছের ঘেরে আটক করে নির্যাতন চালিয়ে তাদের নিকট থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে রেখে ভয়ভীতি ও হুমকী দিয়ে বলে আর কখনো এই এলাকায় দেখলে তোদের গুলি করে মাথার খুলি উড়িয়ে দেব। এরপর সকল সাংবাদিক কে তারা মাঠের একটি ঘরে তালা বদ্ধ করে রাখে।

এ অবস্থায় সাংবাদিকদের আত্মচিৎকারে ঐ এলাকার মানুষ বেনাপোল পোর্টথানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে পোর্টথানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুুন খান তার পুলিশ ফোর্সের মাধ্যমে আটকে রাখা সাংবাদিকদের উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে সাংবাদিক সাহিদুল ইসলাম জাতীয় দৈনিক সূর্যোদয় কে বলেন, নিউজের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে কুখ্যাত সন্ত্রাসী আশা বাহিনী কর্তৃক সাংবাদিকদের যে লাঞ্ছিত করা হলো, এই সন্ত্রাসীদের খুটির জোর কোথায় সেটা বের করতে প্রশাসন ব্যর্থ হলে আমরা কঠোর থেকে কঠোরতর পদক্ষেপ হাতে নেব।

অবিলম্বে সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু আশা সহ তার সন্ত্রাসী বাহীনিকে আটক সহ সাংবাদিকদের ক্যামেরা উদ্ধার করে দিতে হবে, অন্যথায় সকল সাংবাদিক সংগঠনের সমন্বয়ে কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।

স্থানীয়রা জানান আশা বাহিনীর কবলে কৃষি তিন ফসলি জমি বিলীন হলেও নির্যাতনসহ গুম খুনের ভয়ে মুখ খোলে না কেউ। সন্ত্রাসী আশা মাদক,গরু পাচার, জমি জবর দখল,নারী নির্যাতন সহ নানা অপকর্ম করে এলাকায় একটা ত্রাস সৃস্টি করে রেখেছে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করা হলেও তার বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

উক্ত ঘটনা উল্লেখ করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করে সাংবাদিকরা। বিষয়টি জানাজানির পর শার্শা উপজেলার সংবাদ কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।

কুখ্যাত সন্ত্রাসী মাটি খেকো আশা ও বাবলুর বিষয়ে ওই এলাকার সাংবাদিকরা থানায় অভিযোগ সহ তীব্র ক্ষোভ, প্রতিবাদ সহ বিভিন্ন পত্রিকায় তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করে কোন প্রতিকার না হলে। বিষয়টি নিয়ে জাতীয় দৈনিক সূর্যোদয় পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক তৌহিদ আহম্মেদ রেজা নির্যাতিত সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগ করে তিনি নিজেই ওই ঘটনার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলীফ রেজা কে জানিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন।

এমনকি এ ব্যাপারে দৈনিক সূর্যোদয় পত্রিকার সম্পাদক তৌহিদ আহম্মেদ রেজা  বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুন খান কে বারবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করে দ্রুত মাটি খেকো কুখ্যাত সন্ত্রাসী আশা, বাবলু সহ তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বললে,সম্পাদক তৌহিদ আহম্মেদ রেজার হস্তক্ষেপে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাটি খেকো কুখ্যাত দুই সন্ত্রাসী আশা ও বাবলু কে আটক করেছে পুলিশ।

আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মানুন খান জাতীয় দৈনিক সূর্যোদয় কে বলেন, আমার চাকরি জীবনে এ প্রথম দেখলাম যে কোন জাতীয় পত্রিকার সম্পাদক নিজে এমন জোড় পদক্ষেপ নেয়। যে পদক্ষেপের কারণে আমরা দুইজন কে কুখ্যাত সন্ত্রাসীকে মাটি খেকো আশা আর বাবলুকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। এবং তাদের পলাতক সহযোগী সদস্যদের আটকের জন্য পুলিশি জোড়  তৎপরতা চলছে।