নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে অবৈধভাবে জমি দখল করার চেষ্টায় বাঁধা দিলে দোকানপাট, বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে নগদ অর্থ সহ মালামাল লুট এবং কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় মামলা দায়েরে করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে দুধঘাটা হয়ে ইউনিক পাওয়ার প্লান্টের (কুরবানপুর) সংযোগ রাস্তা প্রশস্ততা করার জন্য টেন্ডার হলে উক্ত প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণ কাজের স্থানে অভিযোগকারী মোঃ বজলুল হক ও তার স্বজনদের জমি ও দোকানপাট পড়ে। পরে দোকানপাট ও জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ ইউনিক পাওয়ার প্লান্টের সাথে বর্তমান বাজার মূল্য দরদাম চুড়ান্ত করা হয়। ইউনিক পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানী তাদের সম্পত্তির টাকা প্রদান করবে বলে আশ্বস্ত করে।
গত শনিবার (২০ জুন) দুপুরে কাউকে কিছু না বলে পিরোজপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি দুধঘাটা গ্রামের মোঃ সিরাজুল হক ভূঁইয়ার ছেলে রাসেল ভূঁইয়া নিজেকে ওই কাজের সাব কন্ট্রোলার দাবী করে তার পিতা সিরাজুল হক ভূঁইয়া,ভাই মামুন, সুমন লোকবল ও
ধারালো ছোঁয়া,চাকু, রামদা, চাপাতি, হকিস্টিক,রব,কাঠ ও বাস লাঠিসোটা সহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রাস্তার পাশের উক্ত দোকানপাট ভাংচুর করে সম্পত্তি জবর দখল করে সম্পত্তির উপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করতে যায়।
এ সময় জমির ক্ষতিপূরণের টাকা না দিয়ে জোর পূর্বক রাস্তা নির্মাণে বাঁধা দেওয়ায় ইউপি বিএনপির সভাপতি সিরাজুল হক ভূঁইয়া, সিরাজুল হকের ছেলে ও তাদের লোকজন বাদী ও তার স্বজনদের উপর আচমকা লাঠিসোটা দিয়ে মারধর ও এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ৫/৬ জনকে মারাত্মক জখম করে।
স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার নিয়ে গেলে।
হামলাকারীরা তাদের বসতবাড়িতে জোরপূর্বক প্রবেশ করে বাড়িঘর আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। নগদ টাকা ও মালামাল সহ প্রায় অর্ধকোটি টাকার বেশী মালামাল লুট সহ প্রায় ৭০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে।
গতকাল সোমবার রাতে ভুক্তভোগী উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামের মৃত্যু শরাফত আলীর ছেলে বজলুল হক বাদী হয়ে
পিরোজপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও পিরোজপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সিরাজুল হক ভূঁইয়া, তার ছেলে রাসেল, মামুন, সুমন সহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে ও আরোও ১৫/ ২০ কে অজ্ঞাত আসামি করে সোনারগাঁও থানায় এই মামলার দায়ের করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী বলেন, সিরাজুল হক ভূঁইয়ার ছেলে এই রাস্তার কাজের কোনো সাব কন্ট্রোলার নয়। সিরাজুল হক ভূঁইয়া ও তার ছেলে রাসেল, মামুন ও সুমন টাকার বিনিময়ে এই সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করার দেওয়ার জন্য হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে এবং দোকানপাট ও বাড়িঘর ভাঙচুর চালিয়ে মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়।
তারা আরোও বলেন, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সিরাজুল হক ভূঁইয়া ও তার ছেলেরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, জুয়া, জবরদখল, নারী ব্যবসাসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে।
যারা এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করলে অপরাধীরা মিথ্যা মামলা সহ মারধর ও হত্যার হুমকি প্রদান করে বলে জানায়। তাই
তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে
সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান মনির জানান, মারামারি ও লুটপাটের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপরাধীদের গ্রেফতারে বিভিন্ন
স্থানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।