প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৭, ২০২৪, ১:৫৬ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুলাই ৯, ২০২১, ৭:১১ পি.এম
সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি প্রত্যাখান করে সংবাদ সম্মেলন
সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি প্রত্যাখান করে সংবাদ সম্মেলন
সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির ৬১টি সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি প্রত্যাখান করেছে যুবদল, শ্রমিক দল, সেচ্ছাসেব দল, ওলামা দল, জাসাস সহ দলিয় নেতাকর্মীরা। গতকাল ৮ই জুলাই বৃহস্পতিবার রাতে সৌদি আরবের জেদ্দায় স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সৌদি আরব বিনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সাবেক সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নুরুল আমিন। তিনি সহ সৌদি আরবের পঞ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৮০ শতাংশ নেতাকর্মীরা এই আহ্বায়ক কমিটি প্রত্যাখান করেন। সংবাদ সম্মেলনে সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ সহ সকল আঞ্চলিক কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদ সম্মেলনে ইঞ্জিনিয়ার নুরুল আমিন তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ৯০ দশকের ঘোড়ার দিকে সৌদি আরবের জেদ্দায় ভিন্ন ভিন্ন নামে বিভাজনের মধ্যদিয়ে বিএনপির রাজনীতি শুরু হয় এবং ২০০৮ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বর্তমান সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় নিবার্হী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব আব্দুর রহমান ও বর্তমান সভাপতি আহমেদ আলী মকিব এর দুই গ্রুপের বিভেদ চরম রুপ নিলে এই অঞ্চল সহ সৌদি আরবে বিভিন্ন সংগঠন সর্ব মহলে নানান সমালোচনার মুখে পড়ে। এই অবস্থায় দুই গ্রুপের ঐক্যের কোন বিকল্প নাই এই চিন্তা চেতনাকে সামনে রেখে নিজেদের মধ্যে আলোচনা ও পরে ঐক্যের সম্মিলিত প্রকাশ করেন আলহাজ্ব আব্দুর রহমান। উনার সরাসরি পদক্ষেপ ও তদারকিতে এবং নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় ২০১৫ সালে ৩১ ডিসেম্বর রাতে ঐতিহাসিক ঐক্যের উদাহরণ সৃষ্টি করে। ঐক্যবদ্ধ হবার পর থেকে আজ অবধি প্রবাসের মাটিতে নানা রকম কর্মসুচী পালন সহ জাতীয় রাজনীতিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন, দলিয় কার্যক্রমে নানান পদক্ষেপ চালিয়ে যাচ্ছে এই সংগঠন।
সংবাদ সম্মেলনে সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, ২০১৫ সালের সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির দুই গ্রুপের ঐক্য হবার পর সমস্ত বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং ২০১৬ সালে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন আসে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য ২০১৬ সালের ঐক্য ও কমিটি অনুমোদনের পর থেকেই গত চার বছর যাবত নানারকম অসাংগঠনিক কার্যক্রম, ক্ষমতার অপব্যবহার সহ নানাবিধ ইস্যু নিয়ে সাধারণ কর্মীদের মাঝে নানাবিধ চাঁপা ক্ষোভের সৃষ্টি পরিলক্ষিত হয়ে আসছিল। এরই মধ্যে উল্লেখ যোগ্য মহানগর কমিটি পাঁচ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি, ৮/১০ বছর পূর্বে অনুমোদিত প্রাদেশিক কমিটি গঠন /পূর্ণগঠন ও অনুমোদন দিয়ে উৎসাহিত করার কোন উদ্যোগ না নেওয়ায় অসন্তোষ চরম রুপ নিয়েছে। ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে কেন্দ্র করে নির্বাচনী তহবিল ও সদস্য ফরমের প্রায় ১.৫ লাখ রিয়াল, বাংলাদেশ টাকায় ৩৫ লাখ টাকার কাছাকাছি আদৌ নির্বাচনী তহবিলে বা দলীয় ফান্ডে জমা হয়েছে কিনা, নির্বাচনের ৩ বছর গত হলেও তা সাধারণ সভার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়নি।
এছাড়াও বই বিতর, সদস্য ফরম বিক্রি নবায়নের বাস্তব চিত্র আজো কোন সভায় আলোচিত না হওয়া। নেতৃবৃন্দরা মনে করেন সৌদি আরবে ২৫ লাখ বাংলাদেশীরা অবস্থান, সঠিক উদ্যোগ নিয়ে সদস্য ফরম বিলি /নবায়ন এর মাধ্যমে নতুন সদস্য সংগ্রহের মাধ্যমে দলকে বিপুল পরিমাণ আর্থিক সহায়তা সম্ভব।
নেতৃবৃন্দরা সাংবাদ সম্মেলনে আরও উল্লেখ করেন, উপরোক্ত বিষয় সমূহ নিয়ে সর্বমহলে নানান আলোচনা সমালোচনা শুরু হলে সভাপতি আহমেদ আলী মকিব বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি, সহ-সভাপতি, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক, প্রচার ও দপ্তর সম্পাদক সহ দলের প্রতিষ্ঠা কালীন অন্যতম প্রবীণ সকল নেতা-কর্মীদের বাইরে রেখে এমনকি দলের প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় নির্বাহী কমিটি সদস্য আলহাজ্ব আব্দুর রহমান জেদ্দায় উপস্থিত থাকার পরেও দলের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের সাথে ভার্চুয়াল মিটিং এর লিংক থেকে বঞ্চিত রাখেন। ভার্চুয়াল এর পরপরই সংগঠনের মধ্যে অসন্তোষ আরও বাড়তে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালে সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের মাইনাস করে ৬১টি সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করে। তা কখনো আমরা মেনে নিতে পারি না এবং আমরা এই কমিটি প্রত্যাখান এবং বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইঞ্জিনিয়ার নুরুল আমিন বলেন, সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির ‘দুর্দিনে দলের হাল ধরেছিলাম। ৯০ সাল থেকে জিয়া পরিষদ এবং পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা করি যখন দলের দূর সময় তখন এই নেতারা কোথায় ছিলেন? যাকে দলের আহ্বায়ক করা হয়েছে। তিনি ২০১৫ সাল থেকে সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপিকে সাংগঠনিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। পঞ্চিমাঞ্চল বিএনপির প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক, ক্লিন ইমেজের প্রবাসী নেতা শহিদুল ইসলাম নান্নুর নেতৃত্বে তৎকালীন কমিটির প্রায় ৯৫ শতাংশ নেতাকর্মীর সাথে অসাংগঠনিক কার্যকালাপ অত্র যত যখন তখন দলের সিনিয়র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম ব্যবহার করে হুমকি ধামকি প্রতিবাদ স্বরূপ তার বিরুদ্ধে অধিকাংশ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে তাকে দল থেকে অব্যাহতি দিয়ে শহিদুল ইসলাম নান্নু সহ প্রায় সকল সদস্যকে বাদ দিয়ে নতুন আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে আসে তখন। সেই থেকে শুরু হওয়া নোংরা রাজনীতি করা আহমেদ আলী মুকিব এখানো করছে।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দরা আরো বলেন, “গঠনতন্ত্রের তোয়াক্কা না করে সংগঠনের সিনিয়র ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে কমিটির নামে ‘পকেট কমিটি’ গঠন করছে। এখন সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি অগণতান্ত্রিক, অনিয়মতান্ত্রিক ও অবৈধ, এই কমিটি বাতিল করে গণতান্ত্রিক, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সংগঠনের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ সহ সবার অংশগ্রহণে কমিটি করার দাবি জানাচ্ছি।”
এই সময় সৌদি আরবের অবস্থানরত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধি গণ উপস্থিত ছিলেন ।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy