1. dainiksurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
  2. editor@surjodoy.com : Daily Surjodoy : Daily Surjodoy
স্কুল টিকিয়ে রাখতে সহকর্মীদের নিয়ে ফল বিক্রি করছেন অধ্যক্ষ
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০১:০৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
স্বাধীনতাবিরোধীরা সুযোগ পেলেই ছোবল মারতে চায়: রাষ্ট্রপতি অবশেষে রাজধানিতে  দেখা মিলল  বৃষ্টির যে কারণে যৌনতার প্রতি আগ্রহ কমে যায় টেকনাফ সীমান্তে  ভেসে আসছে মর্টার শেল ও ভারি গোলার বিকট শব্দ,  দেখা যাচ্ছে  আগুনের কুণ্ডলী বৈদেশিক ঋণনির্ভর প্রকল্প বাস্তবায়নে বাড়তি পরিশ্রমের  নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর  সিনিয়র সহকারী সচিব পদে পদোন্নতি পেলেন মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী লক্ষ্মীপুরে বিনামূল্যে সার বীজ বিতরণ বরুড়ায় বই ও কসমেটিক বিক্রেতাকে হত্যার দায়ে স্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড,  স্বামী’র কারাদণ্ড বদলগাছীতে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত কাঠ মিস্ত্রিকে সহায়তা দিলেন সংসদ সদস্য সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী দেবীদ্বারে আনোয়ারাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড

স্কুল টিকিয়ে রাখতে সহকর্মীদের নিয়ে ফল বিক্রি করছেন অধ্যক্ষ

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১০ জুলাই, ২০২০, ১২.২১ পিএম
  • ২০৮ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের জেরে সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। রাজধানীর ছোট-বড় স্কুলগুলোতেও ঝুলছে তালা। যে স্কুলগুলো হাসি-আনন্দে মুখরিত থাকতো, সেগুলো প্রায় চার মাস ধরে শিক্ষার্থীশূন্য। যাদের সামান্য বেতনই ছিল শিক্ষকের উপার্জন সেই শিক্ষার্থী হারিয়ে শিক্ষকরাও চলে গেছেন নানা দিকে। আবার অনেকে মৌসুমি ফল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। আর রাজধানীর অলি-গলিতে দেখা যাচ্ছে স্কুল বিক্রির পোস্টার!

ফুলকুঁড়ি কিন্ডারগার্টেন অ্যান্ড হাই স্কুল যার অন্যতম উদাহরণ। প্রায় ১৭ বছর ধরে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় স্কুলটিতে নিম্নবিত্ত সন্তানদের পড়াচ্ছিলেন তাকবীর আহমেদ। করোনাভাইরাসের কারণে স্কুলে শিক্ষার্থী নেই, কিন্তু খাড়া আছে ব্যয়ভার। কয়েক মাস পকেট থেকে খরচ চালানোর পর এবার স্কুল বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

তাকবীর আহমেদ বলেন, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, এখন কী করবো বলেন? মানুষ সন্তানের লাশ ফেলে দেয় না?  এখন আমাকে সেটাই মনে করতে হচ্ছে। আমার সন্তান মারা গেছে!

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে বেতন পেতেন সেটা দিয়েই শিক্ষকদের সম্মানিসহ সব খরচ মিটিয়ে নিজের কাছে কিছু থাকতো বলে জানিয়েছেন তাকবীর। কিন্তু গত ৩-৪ মাস ধরে ভাড়াটাও দিতে হচ্ছে পকেট থেকে। করোনাকালে প্রায় চার লাখ টাকা খরচ হয়েছে তার। সামনের দিনগুলোর অনিশ্চয়তায় স্কুল বিক্রি করে দিচ্ছেন তিনি।

স্কুল বন্ধের কারণ প্রসঙ্গে তাকবীর বলেন, আমাদের স্কুলের যারা পড়েন, তাদের অভিবাবকরা সাধারণত গার্মেন্টস, বাসা-বাড়িতে কাজ করেন বা কেউ ড্রাইভার। আমি জানি কার কী অবস্থা। তাদের গিয়ে যদি বলি বেতনটা দেন, এর জন্য আমিই তো আমার বিবেকের কাছে বন্দী। এদিকে স্কুলের ভাড়া তো দিতে হবে, কারণ বাড়িওয়ালা ঋণ করে আমাকে বাড়ি করে দিয়েছেন।

রাজধানীর অলিতে গলিতে দেখা যাচ্ছে স্কুল বিক্রির পোস্টার!

রাজধানীর অলিতে গলিতে দেখা যাচ্ছে স্কুল বিক্রির পোস্টার!

রিনা আকতার নামের এক অভিবাবক বলেন, আমার দুই মেয়েই স্কুলটিতে পড়ে। এখন কোথায় পাঠাবো কিছুই বুঝতে পারছি না। এর চেয়ে বড় স্কুলে ভর্তি করানোর তো সামর্থ নেই আমাদের। এখন কিছু না কিছু তো কিছু করতেই হবে।

ফুলকুঁড়ি কিন্ডারগার্টেন বিক্রির বিজ্ঞাপনে ছেয়ে গেছে মোহাম্মদপুরের অলি-গলি। কিন্তু তদবির আহমেদ জানালেন, এত বিজ্ঞাপন দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। দুই-একজন ফোন দিলেও তারা স্রেফ দাম জেনেই ফোন কেটে দেন।

এমন বিপর্যয়ে রাজধানীর আরো অনেক কিন্ডারগার্টেন (কেজি) স্কুলই বিপদে পড়েছে। দিনের পর দিন বন্ধ থাকায় আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাড়িভাড়ার পাশাপশি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানগুলো।

স্কুলের আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সহকর্মীদের নিয়ে মৌসুমি ফল বিক্রি করছেন ঢাকার আদাবরের পপুলার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অধ্যক্ষ আমিনা বেগম তামান্না। তিনি বলেন, আমার প্রয়োজনে আমি রাস্তায় নেমেছি। আমি আমার প্রতিষ্ঠানটিকে টিকিয়ে রাখতে চাই। এমনকি আমাদেরও তো সন্তান আছে, তাদের মুখেও তো খাবার তুলে দিতে হবে।

বাড়ি ভাড়া দিতে না পারায় স্কুলের বিল্ডিংয়ে পরিবার নিয়ে উঠেছেন আমিনা বেগম তামান্না। তিনি বলেন, আমি স্কুল ভাড়াই জোগাড় করতে পারছি না, বাসা নিয়ে থাকবো কীভাবে। তাই একটা জায়গায় এসেছি, যাতে কিছুটা হলেও আমার সাশ্রয় হয়।

বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মিজানুর রহমান জানান, তাদের কাছে আসা তথ্যমতে এখন পর্যন্ত ঢাকায় অন্তত ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। আর বেশকিছু প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে দেয়ার নোটিশ দেয়া হয়েছে। ঝুঁকিতে আরো প্রায় শতাধিক স্কুল রয়েছে।

শিক্ষাবিদরা বলছেন, রাজধানীর অধিকাংশ পরিবারের পক্ষেই তাদের সন্তানদেরকে নামিদামি স্কুলে পড়ানোর আর্থিক সঙ্গতি থাকে না। তাই তাদের একমাত্র আশ্রয় গলির ভেতরে থাকা সাধারণ মানের ছোট ছোট স্কুলগুলো। সবমিলিয়ে কয়েক লাখ শিশু এসব স্কুলে লেখাপড়া করে থাকে। করোনার কারণে স্কুলগুলো যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে হুমকির মুখে পড়বে এসব শিক্ষার্থীর লেখাপড়া।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Comments are closed.

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews