জবি প্রতিনিধি:
করোনার কবলে পড়ে বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তবে চলছে অনাইনে ক্লাস। অনলাইনে ক্লাস হলেও আবার পরীক্ষা হচ্ছে না। এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ পর্বের শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ ও ১১ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এই ভোগান্তি পোহাচ্ছে।
অনেকে এই পরীক্ষার বাকী থাকার কারণে পার্মানেন্ট কোন জবেও ঢাকতে পারছেন না। আবার স্নাতক পরীক্ষা না সম্পন্ন হওয়ার কারনে বিভিন্ন পরীক্ষায় আবেদনও করতে পারছেন না। আবেদন করতে না পাওয়া অনেক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হতাশা প্রকাশ করেন।
তারা জানান, পরীক্ষা নিলে আমরা বিভিন্ন চাকুরীর পরীক্ষা আবেদন করে পরীক্ষা দিতে পারবো। পরীক্ষা না নেওয়ায় আমরা কোন চাকুরীর পরীক্ষায় আবেদন করতে পারছিনা। জানা যায় , বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ১০ ও ১১ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের যথাক্রমে স্নাতকোত্তর ও স্নাতকের শেষ সেমিষ্টারের পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করছেন।
কিন্তু ক্যাম্পাস না খোলা থাকার কারণে পরীক্ষা নিতে পারছেন না বিভাগগুলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান , গনিত, নৃবিজ্ঞান, আইন ও ভূগোলসহ আরো বিভিন্ন বিভাগের ১১ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা স্নাতক শেষ সেমিষ্টারের পরীক্ষা না হওয়ায় তারা কোন চাকুরীর পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারছেন না। এতে করে তারা পরীক্ষা দেওয়া থেকে বঞ্চিত এবং পিছিয়ে পড়ছেন বলে অভিযোগ করেন।
এছাড়াও ১০ ব্যাচের স্নাতকোত্তরের শেষ সেমিষ্টারের পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করা শিক্ষার্থীরাও পরেছেন বিপাকে। কবে হবে তাদের স্নাতকোত্তর! এ নিয়ে তারাও বেশ উদ্বিগ্ন। তারা চাচ্ছে তাদের পরীক্ষা এবছরেই নেওয়া হোক। কবে বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে এই অনিশ্চয়তায় তারা পরে থাকতে চায় না। তারাও পরীক্ষার জোড়ালো দাবি করছেন।
ইংরেজি বিভাগের ১১ ব্যাচের শিক্ষার্থী সুপ্ত বলেন, আমরা পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। পরীক্ষা নিলে আমাদের সবার উপকার হয়। পরীক্ষা না নিলে আমরা সেশন জোটে পড়ার সম্ভাবনা আছে। তিনি আরো বলেন, এমনিতে অনেকদিন ধরে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় লেখাপড়া করা হয়নি। পরীক্ষার মধ্য দিয়ে আবার লেখাপড়া করতে চাই।
ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ১০ ব্যাচের এক শিক্ষার্থী জানান, আমাদের মাস্টার্স পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা ছিল এপ্রিলে কিন্তু আমাদের এখনও পরীক্ষা নেওয়ার কোন সম্ভাবনা দেখছিনা। বিভাগের শিক্ষকরা চাইলেই পরীক্ষা নিতে পারে। তিনি আরো বলেন, আমাদের মাস্টার্স পরীক্ষা দ্রুত নেওয়া হোক।
এই বিষয়টি নিয়ে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল কাদেরের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, করোনার মধ্যে যাদের ক্লাস শেষ হয়েছে তাদের পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে তবে তাদের থেকে কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয় নি। আর করোনার মধ্যে ক্লাস শেষ হয়েছে বলা যাবে না কেননা মিড টার্ম ও আনুষাঙ্গিক বিভিন্ন বিষয়ে ক্লাস নেয়ার পর তাদের পরীক্ষা নিতে হবে। রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় গুলো স্বাভাবিক পরিবেশে ফিরে এলে পরীক্ষার চিন্তাভাবনা করা হবে।
পরীক্ষা কন্ট্রোলার এ. কে. এম. আক্তারুজ্জামান জানান, একাডেমিক কাউন্সিলে কোনো সিদ্ধান্ত হয় নি। কিছু কিছু পরীক্ষা যেমন রিটেক, সাপ্লি (১০-১২ জন) এসব পরীক্ষা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নেয়া হয়েছে। কিন্তু অনলাইন ক্লাসের পর রিফ্রেশমেন্ট ক্লাস না নিয়ে, প্র্যাক্টিকেল ক্লাস, ল্যাব না নিয়ে সরাসরি পরীক্ষা নেয়া সম্ভব নয়। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরীক্ষা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, কোনো বিভাগের পরীক্ষা যদি করোনার আগে শুরু হয়ে থাকে সেটা শেষ করা যায়নি সেটা বিভাগীয় চেয়ারম্যান সবার যোগাযোগ করে পরীক্ষা নিচ্ছে। আবার কোনো বিভাগে (নাট্যকলা, ম্যাথ গ্রুপ) ২০-২৫ শিক্ষার্থী থাকে তারা একটা ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু যেখানে ছাত্র সংখ্যা ৮০-১২০ জন সেখানে কি করা হবে সে ব্যাপারে কোনো আলোচনা বা সিদ্ধান্ত কিছুই হয়নি। সরকারের অনুমতি ব্যতীত কিছু করা সম্ভব নয়।
Like this:
Like Loading...
Related
এ জাতীয় আরো খবর..