রোস্তম আলী: রংপুর জেলা প্রতিনিধি
সারা দেশের ন্যায় রংপুর মহানগরীসহ জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পাঠদানের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। করোনা মহামারির কারণে প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলায় উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা।
রোববার সকাল থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ছুটতে দেখা গেছে প্রাণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দিকে। সবার চোখে-মুখে বাঁধভাঙা আনন্দ আর উচ্ছ্বাসে ভরা। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ করে নতুন রূপে সাজানো হয়েছে। ফলে দীর্ঘ বন্ধের পর আবারও শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের পদচারণায় মুখরিত হয়েছে শিক্ষাঙ্গণ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রংপুর নগরীসহ জেলার আট উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মূল ফটকের সামনে সচেতনতামূলক ব্যানার টানানো, শিক্ষার্থীদের মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করে প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ, সকলের হাত ধোয়া নিশ্চিত করাসহ শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে শ্রেণিকক্ষে বসার উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিনে শ্রেণিগুলোকে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান সম্পন্ন করা হয়েছে।
এদিকে রংপুর মহানগরীসহ জেলার মাদরাসাগুলোতেও সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়েছে। রোববার সকালে নগরীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক আসিব আহসান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রংপুর অঞ্চলের পরিচালক এসএম আব্দুল মতিন লস্কর, রংপুর বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষার উপপরিচালক মোজাহিদুল ইসলামসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।
রংপুর প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় ৯ হাজার ৫৪৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২ হাজার ৯৬৮ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৫৫৬টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৯ লাখ, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৪ লাখ ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ১ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে।
বড় রংপুর কারামতিয়া কামিল মাদরাসার দশম শ্রেণির ছাত্র মাহাদি হাসান জানান, দীর্ঘদিন পর মাদরাসায় এলাম। শিক্ষক ও বন্ধুদের সাথে দেখা হলো। খুব ভালো লাগছে। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাস করেছি।
রংপুর নগরীর তামপাট এলাকার অভিভাবক নুরুল ইসলাম, আশরতপুর এলাকার মইনুল হক ও সাতমাথা এলাকার আফজাল পাটোয়ারী বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর অবেশেষে চালু হওয়ায় স্বস্তিতে রয়েছি। কারণ দীর্ঘদিন সন্তানদের শিক্ষা জীবন নিয়ে বড় চিন্তায় ছিলাম। এখন মনে স্বস্তি ফিরেছে।
মহানগরীর মাহিগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ জাহানারা বেগম বলেন, সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। আশাকরি দীর্ঘদিনের স্থবিরতা কাটিয়ে শিক্ষায় স্বাভাবিক গতি আসবে।
মহানগরীর কেরানীরহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ধরনী বর্মন বলেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকারি নির্দেশনা মানার শতভাগ চেষ্টা করছেন তারা। বিগত দিনের পড়াশুনার ক্ষতি পূষিয়ে দিতে শিক্ষকদের বাড়তি নজর থাকবে বলে তিনি জানান।
রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমাদের কঠোর মনিটরিং রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
01717524413