আসমা আহম্মেদ নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
স্মার্টফোন থেকে শিশুদের দূরে রাখুন
বর্তমানে শিশুদের সিংহভাগ সময় দখল করে নিয়েছে স্মার্টফোন। এখন শিশুরা সাধারণত মোবাইল, টেলিভিশন, স্মার্টফোন, ট্যাব, ইউটিউবে সময় কাটায়। কিন্তু এসব প্রযুক্তির কারণে শিশুদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, সেদিকে খেয়াল রাখছে না অনেকেই। প্রযুক্তির এসব পণ্য থেকে শিশুদের দূরে রাখার জন্য দেশে দেশে অভিভাবকেরা উদ্যোগ নিচ্ছেন। বিশেষ করে বহির্বিশ্বের অনেক দেশই স্কুলে মোবাইল ফোন ইতিমধ্যে নিষিদ্ধ করেছে।
দেখা যায়, অভিভাবকেরা বাচ্চাকে শান্ত রাখার জন্য তার হাতে স্মার্টফোন ধরিয়ে দেন। গান, কার্টুন, মজার ভিডিও চালিয়ে দিয়ে তাকে শান্ত রাখা হয়। আপনার, আমার সবার বাসাতেই এই চিত্র এখন নিত্যদিনের। স্মার্টফোনের কল্যাণে শিশুদের শান্ত রাখা, খাওয়ানো, এমনকি বর্ণমালা ও ছড়া শেখানোর কাজটিও বাবা-মায়ের জন্য অনেক সহজ ও স্বস্তিদায়ক হয়ে উঠেছে। বিপরীতে স্মার্টফোনের ওপর নির্ভরতা বাড়ছে শিশুদের। আর এই নির্ভরশীলতাই আমাদের অজান্তে শিশুদের জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনছে। বড়দের উদাসীনতার কারণে ছোট বাচ্চারা মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে পড়ছে; যার প্রভাব ও কুফল খুবই ভয়ংকর।
আমরা বড়রা যেভাবে ফোনে আসক্ত হয়ে পড়ছি, ভবিষ্যতে শিশুরাও আরও বেশি আসক্ত হয়ে পড়বে। বাবা-মা কর্মব্যস্ততার দোহাই দিয়ে সময় না দেয়ার কারণে অথবা শখ করে ফোন কিনে দেয়ায় বা তাদের বায়না পূরণ করতে মোবাইল উপহার দেয়া ইত্যাদি কারণে আদরের শিশুদের হাতে হাতে ফোন। বাচ্চারা ইচ্ছেমতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা গেম খেলছে, ভিডিও দেখছে, ফোন নিয়ে যাচ্ছেতাই করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সন্তানকে স্মার্টফোন দেয়ার অর্থ হলো, তাদের হাতে এক বোতল মদ কিংবা এক গ্রাম কোকেন তুলে দেয়া। কারণ, স্মার্টফোনের আসক্তি মাদকাসক্তির মতোই বিপজ্জনক। দুই মিনিট স্থায়ী একটি মোবাইল কল শিশুদের মস্তিষ্কের হাইপার অ্যাক্টিভিটি সৃষ্টি করে, যা কিনা পরবর্তী এক ঘণ্টা পর্যন্ত তাদের মস্তিষ্কে বিরাজ করে। হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বেড়ে যায় দ্বিগুণ, ব্যবহারকারীর স্নায়ু দুর্বল হয়ে পড়ে, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, রক্তের চাপ বেড়ে যায়, দেহ ধীরে ধীরে ক্লান্ত ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে এমনকি নিয়মিত ঘুমেরও ব্যাঘাত ঘটায়। স্ক্রিনের রেডিয়েশন প্রাপ্তবয়স্কদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, শিশুদের জন্য তা আরও বেশি মারাত্মক ক্ষতিকর, যা কিনা তাদের মস্তিষ্কের বিকাশকে ব্যাহত করে। সারা পৃথিবীতে এখন শিশুরা বেশির ভাগ সময়েই মোবাইল ফোন নিয়ে খেলা করে। এ প্রসঙ্গে সানি’স স্কুল অব পাবলিক হেলথের ডিন ডেভিড কার্পেন্টার বলেছেন, ‘শিগগিরই আমরা হয়তো একটি মহামারি রোগের শিকার হতে পারি এবং সেটি হবে মস্তিষ্কের ক্যানসার।’ গবেষণা থেকে আরও বেরিয়ে এসেছে যে মোবাইল ফোন ব্যবহার শিশুদের শ্রবণক্ষমতাও হ্রাস করে দেয়।
যা হোক, অতি স্মার্ট বানাতে গিয়ে আদরের সোনামণিদের জীবন ও ভবিষ্যৎ ধ্বংসের দিকে ধাবিত করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বিভিন্ন ওষুধের মোড়কে যেমন লেখা থাকে ‘শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।’ ঠিক একইভাবে অভিভাবকদের মনে লিখে রাখতে হবে ‘শিশুদের ফোন থেকে দূরে রাখুন।’ কীভাবে মোবাইল ফোন থেকে বাচ্চাদের দূরে রাখা যাবে, সেই পথ নিশ্চয়ই সবার জানা। মনে রাখতে হবে, স্মার্টফোন থাকলেই স্মার্ট হয় না, প্রযুক্তির অভিশাপ থেকে নিজে ও পরিবারকে সুরক্ষিত রাখাই হলো প্রকৃত স্মার্ট।
Pharmacogenetics evaluates the effect of inherited genomic variation on patient response including resistance to treatment buy cialis online india The present study was carried out to examine anti oxidant potential of GSPE along with Vitamin E on DOX induced cardiotoxicity