কালচে লাল রঙ ও সুঠাম দেহের অধিকারী দেশি জাতের ষাঁড় ‘বাংলার বাহাদুর’ উপজেলার বানেশ্বরদী ইউপির বানেশ্বরদী খন্দকারপাড়া এলাকার ইউনুস আলীর ছেলে মো. আমিনুল ইসলামের পালিত ষাঁড়ের নাম।
এমন নাম রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে আমিনুল ইসলাম ও তার পরিবারের সদস্যরা জানান, শখের বশে পালিত ষাঁড়টি সম্পূর্ণ দেশীয় জাতের। অতীতে দেশীয় জাতের এতো বড় ষাঁড় দেখা যায়নি। তাদের দেখা, দেশীয় ষাঁড়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় ষাঁড় এটি।
তারা আরো জানান, বাংলার বাহাদুরের বর্তমান দৈর্ঘ্য প্রায় ১০ ফুট এবং ওজন প্রায় ৩৬ মণ (সাড়ে ১৪শ’ কেজি)। বাছুর অবস্থা থেকেই এটিকে জেলার সেরা ষাঁড়ে পরিণত করার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন আমিনুল ইসলাম। তাই এ ষাঁড়টির নাম ছোট কালেই রাখা হয় ‘বাংলার বাহাদুর’।
শান্ত প্রকৃতির বাংলার বাহাদুরকে দেখতে আমিনুল ইসলামের বাড়িতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার মানুষজন ভিড় করেন। তখন স্থানীয়রা ভাবেন, আগতরা হয়তো বাংলার বাহাদুরকে কিনতে এসেছেন। তাই মুহূর্তের মধ্যে ভিড় জমিয়ে ফেলেন স্থানীয় জনগণ ও দর্শনার্থীরা।
আমিনুল ইসলাম বলেন, বাহাদুরকে গরু মোটাতাজাকরণের ফিড কিনে খাওয়ানোর মতো আমার সামর্থ্য নেই। তাই সম্পূর্ণ দেশীয় খাবার দিয়ে বাংলার বাহাদুরকে বড় করে তুলেছি। বাহাদুরকে বর্তমান অবস্থায় আনতে সময় লেগেছে প্রায় ৫ বছর।
নকলা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবুল খায়ের মো. আনিসুর রহমান জানান, গরুর ওজন ও প্রয়োজনের ভিত্তিতে প্রাকৃতিক (ব্যালেন্সড) সুষম খাবার খাওয়ালে অর্থ ও ঝুঁকি দুটিই কমবে এবং নিরাপদ মাংস উৎপাদিত হবে। তাই বাংলার বাহাদুরের খাদ্য তালিকায় রাখা হয়েছে- পরিমিত পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের সবুজ ঘাস, গাছের পাতা, খড়, গমের ভূষি, ভুট্টা ভাঙা, সরিষার খৈল, চিটা গুড়, মিষ্টি লাউ, গোল আলু, চালের কুড়া, লবণ ও প্রয়োজন মতো পানি।
তাছাড়া বাংলার বাহাদুরকে নিয়মিত গোসল করানো, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ঘরে রাখা, ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা, নিয়মিত কিছু সময় হাঁটানো, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রুটিন মতো ভ্যাকসিন দেয়া ও কৃমির ওষুধ খাওয়ানোসহ সবকিছুই করা হয়েছে দেশীয় ব্যবস্থাপনায়। বাহাদুরকে মোটাতাজা ও আকর্ষণীয় করতে কোনো প্রকার ক্ষতিকর ওষুধ বা ইনজেকশন ব্যবহার করা হয়নি বলেও জানান বাহাদুরের লালন পালনকারী আমিনুল ইসলামসহ তার পরিবারের সদস্যরা।
বাংলার বাহাদুরের বিক্রি দাম নিয়ে আমিনুল বলেন, বাজার অনুযায়ী বিক্রি করতে হবে। যেকোনো পশুর দাম সাধারণত ক্রেতা ও পশু সরবরাহের উপর নির্ভর করে। তবে আমি আমার বাংলার বাহাদুরের দাম প্রথমে ২৮ লাখ টাকা চাইলেও করোনাভাইরাসের বিষয়টি মাথায় নিয়ে আপাতত ২৩ লাখ টাকা দাম চাচ্ছি।
গত বছর কোরবানি ঈদের বাজারে বিক্রি করার উদ্দেশ্যে রাজধানী ঢাকার গাবতলীতে নিয়ে গেলে ন্যায্য দাম না উঠায় বিক্রি করেননি বলে জানান আমিনুল। তবে এ বছর আগ্রহী ক্রেতার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে বিক্রি হতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
নকলা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবুল খায়ের মো. আনিসুর রহমান বলেন, আমার জানামতে দেশীয় জাতের ষাঁড়টি (বাংলার বাহাদুর) ময়মনসিংহ বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বড় দেশী ষাঁড়। দেশীয় জাতের এ ষাঁড়টিকে সম্পূর্ণ দেশি খাবার খাইয়ে লালন-পালন করা হয়েছে। দেশী জাতের এতোবড় ষাঁড় সচারাচর নজরে পরেনা বলে তিনি জানান।
প্রতিষ্ঠাতা : মেজর (অব) মোঃ মোদাচ্ছের হোসাইন, সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি: বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: তৌহিদ আহমেদে রেজা, বার্তা সম্পাদক: আসমা আহমেদ কর্তৃক ৫৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সৈয়দ ভবন, ঢাকা-১২১৩ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত
© All rights reserved 2020 Daily Surjodoy