1. dailysurjodoy24@gmail.com : admin2020 : TOWHID AHAMMED REZA
২০২৩-২৪ অর্থবছরে শিক্ষাখাতে ২০% জিডিপি’র ৬% বরাদ্দের দাবিতে চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণ ছাত্রসেনার স্মারকলিপি
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
বাকেরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বাদশার ব্যাপক গণসংযোগ। সাভার উপজেলার নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২ জনসহ মোট ১১ প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন ভিজিডি কাড না দেওয়ায় সৈয়দপুর পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও পথসভা নৈতীক স্খলন ও সিমাহীন আর্থিক অনিয়মের প্রতিবাদে সৈয়দপুর পৌর মেয়রের অপসারনের দাবীতে \ সংবাদ সম্মেলন টেলিভিশন ক্যামেরা র্জানালিস্ট অ্যাসোসয়িশেন (টিসিএ) নেতৃত্বে   সোহলে ও জুয়েল কলাতিয়া বাজারের যানজট ও ফুটপাত দখল মুক্ত করলেন কলাতিয়া পুলিশ ফাঁড়ি “বাংলাদেশ সূফী ফাউন্ডেশন পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে রমজান মাসে যাত্রা শুরু করবে” নীলফামারীতে উৎসবমুখর পরিবেশে চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। নীলফামারী টেলিভিশন ক্যামেরা জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের আহবায়ক কমিটি গঠন এস আই আল মামুন এর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হয়েছে – ভুক্তভোগী সজল

২০২৩-২৪ অর্থবছরে শিক্ষাখাতে ২০% জিডিপি’র ৬% বরাদ্দের দাবিতে চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণ ছাত্রসেনার স্মারকলিপি

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৫ মে, ২০২৩, ১১.২১ এএম
  • ৭৬ বার পঠিত

মোহাম্মদ জুবায়ের

২০২৩-২৪ অর্থ বছরে শিক্ষাখাতে মোট বাজেটের ২০% জিডিপির ৬% বরাদ্দের দাবিতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের স্টাফ অফিসার টু ডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্লাবন কুমার বিশ্বাস মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী বরবার ২৪ মে বেলা ১২ টায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি মুহাম্মদ জহির উদ্দীনের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল স্মারকলিপি প্রদান করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নুর রায়হান চৌধুরী, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক কাজী মুহাম্মদ জুনাইদ জাকী, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক মুহাম্মদ শাহিন রেজা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাজ্জাদুল ইসলাম সাজ্জাদ ও সদস্য তারেক আজিজ আলমী।

উল্লেখ্য যে, বাজেট আমাদের জাতীয় জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সারা বছর আমাদের জাতীয় জীবনের আয়-ব্যয় কেমন হবে তার প্রতিফলন হয় বাজেটে। আমাদের দেশের নাগরিকরা আগের চেয়ে অনেকবেশি সচেতন। তাই রাজনীতির পাশাপাশি অর্থনীতির বিষয় গুলো নিয়েও তাদের আগ্রহ বাড়ছে। বাজেট বিষয়ে তাদের আগ্রহও প্রচুর। বাজেট উপস্থাপনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়- ব্রিটিশ শাসনের শুরুর দিকে এই উপমহাদেশে সর্বপ্রথম বাজেট উপস্থাপনার সূচনা করেছিলেন জেমস উইলসন। দেশ ভাগ হওয়ার পর ১৯৪৮ সালে বাজেট উপস্থাপন করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী মালিক মুহাম্মদ। ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে সংসদে সর্বপ্রথম বাজেট পেশ করেন অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ। স্বাধীনতার পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত ২১) সর্বমোট ৫০ বার বাজেট উপস্থাপিত হয়েছে। প্রথম বাজেট ছিল ৭৮৬ কোটি টাকার এবং শেষেরটি ৫ লাখ, ৪৮ হাজার কোটি টাকার। তবে প্রতিবছরই মানুষের দৃষ্টি থাকে শিক্ষা খাতে প্রস্তাবিত বাজেটের উপর। কারণ এর উপরই অনেকাংশে নির্ভর করে আগামীতে দেশের শিক্ষা খাতের অবকাঠামো উন্নয়ন-অনুন্নয়নের রূপরেখা।

বাজেটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যয়খাত হলো শিক্ষাখাত। কিন্তু অন্যান্য বারের ধারাবাহিকতায় প্রতিবারই আমরা দেখি, শিক্ষা খাতের চেয়ে সরকার জনপ্রশাসন, প্রতিরক্ষা ও যোগাযোগ খাতকে বেশী প্রাধান্য দেয়। গতবারও বরাদ্দ পাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই খাতই ছিল সবচেয়ে অবহেলিত। অথচ শিক্ষা হলো রাষ্ট্রের সকল আর্থ-সামাজিক উন্নতির চাবিকাঠি। সে জন্য শিক্ষা হলো রাষ্ট্রের সর্বোত্তম বিনিয়োগ।

রবীন্দ্রনাথ প্রায় শত বছর আগে আরো একধাপ এগিয়ে বলেছিলেন ‘আমাদের সকল সমস্যার সবচেয়ে বড় রাস্তা হচ্ছে শিক্ষা।‘ (রাশিয়ার চিঠি, পৃঃ ৫৫৫, দশমখন্ড)। আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য শিক্ষার গুরুত্ব কাগজে-কলমে হাজারকাব্য করে বলা হলেও শিক্ষা ব্যবস্থায় পশ্চাৎপদ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ এখনো অন্যতম। অথচ আমাদের পাশেই দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো গত ২/৩দশকে তাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় এনেছে আমূল পরিবর্তন; যা পরবর্তীতে তাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করেছে।

বিগত অর্থ বছরগুলোর বাজেট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়-২০০৯-১০ অর্থবছরে শিক্ষা খাতে জাতীয় বাজেটের বরাদ্দ ছিল ১৪.১৮ শতাংশ। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে তা দাঁড়িয়েছে ১১.২৯ শতাংশে। ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে জাতীয় বাজেট বৃদ্ধি পেয়েছে ১০.৩১ শতাংশ কিন্তু ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে শিক্ষা বাজেট বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্র ৬০.২১ শতাংশ। এই অসম প্রবদ্ধির ফলে বাজেটে শিক্ষার আপেক্ষিক গুরুত্ব ১৪.১৮ শতাংশ থেকে ক্রমাগত হ্রাস পেয়ে ২০১৩-১৪ সালে তা ১১.২৯ শতাংশে পরিণত হয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে বরাদ্দ ছিল আনুপাতিক হারে অনেক কম। ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে বরাদ্দ ছিল ১৩.১ শতাংশ। ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১১.৬ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ১৪ শতাংশ।

২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ শিক্ষা ও প্রযুক্তিখাতে। টাকার অংকে তা ৬৭ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা। গতবারের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় তা বেড়েছে ৮ হাজার ৭ কোটি টাকা। মোট বাজেটের ১৪ দশমিক ৬ ভাগ অর্থ। কিন্তু টাকার অংকে বরাদ্দ বৃদ্ধি পেলেও মোট বাজেটের অংশ হিসেবে তা এর আগের বারের চেয়ে কমে গেছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মোট বাজেটের ১৬ দশমিক ৪ ভাগ অর্থ এ খাতে ব্যয় হলেও ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ১ দশমিক ৮ ভাগ বরাদ্দ কমেছে। গতবছর ২০২২-২৩ অর্থ বছরে এই খাতে বরাদ্দ ছিল ১২%, যা এর আগের বছরের তুলনায় মাত্র ০.৩১% বেশি। এই হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়েরও সার্বিকভাবে বরাদ্দ অপর্যাপ্তহচ্ছে।

জিডিপির অনুপাতে শিক্ষাখাতে বাংলাদেশের ব্যয় পতিবেশী ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপের চেয়েও কম। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) এখাতে বাংলাদেশের ব্যয় এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন। এমনকি প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ ও আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের চেয়ে বেশি ব্যয় করে। পৃথিবীর অন্যকোন রাষ্ট্রে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ নিয়ে এত বেশী অবহেলা-উপেক্ষা চোখে পড়ে না। এ এছাড়াও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের শিক্ষাখাতে জাতীয় বাজেটের বরাদ্দের অনুপাতে বাংলাদেশের শিক্ষাখাতে জাতীয় বাজেটের বরাদ্দের আনুপাতিক বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আফ্রিকার অনগ্রসর অধিকাংশ দেশ যেমন- কেনিয়া, তানজানিয়া শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দেয় জাতীয় বাজটের ২০ ভাগের বেশি। পাশ্চাত্যসহ উন্নত বিশ্বের দেশগুলো শিক্ষা খাতে জিডিপির ৪ শতাংশের বেশি ব্যয় করে। ভারত তাদের জিডিপির ৩.৫ শতাংশ থেকে ৩.৭ শতাংশের মতো। পাকিস্তান করে ২.৮ শতাংশ, আমেরিকা করে ৫ শতাংশ, ইংল্যান্ড করে ৫.৬ শতাংশ, ব্রাজিল করে ৫.৬ শতাংশ, ইরান ৪.৭ শতাংশ, নেপাল ৩.৭ শতাংশ আর চীন করে ৪ শতাংশের ওপরে। দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ দেশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দেয় ২০ ভাগেরও বেশি। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য বাংলাদেশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দেয় জাতীয় বাজেটের মাত্র ১১ ভাগ।

শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দের দাবি বিবেচনায় রাখে। এখানে একটি শুভঙ্করের ফাঁকি লক্ষ করা যায। শিক্ষা বাজেটের সাথে প্রযুক্তি, খেলাধুলা, স্বাস্থ্য, ধর্ম সহ নানা বিষয় জুড়ে দেওয়া হয়। এমনকি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন বাজেটে সামরিক বাহিনী পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহের বারদ্দও ঢুকিয়ে দেয়া হয়। ২০১১-১৩ অর্থবছরে শিক্ষার সাথে প্রযুক্তি এবং ২০০৮-০৯ অর্থবছরে শিক্ষা ও প্রযুক্তির সাথে স্বাস্থ্যখাতকেও জুড়ে দেয়া হয়েছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরেও শিক্ষার সাথে প্রযুক্তিখাত জুড়ে দেয়া হয়েছিল। ফলে বরাদ্দকৃত স্বল্প অর্থ টুকু ভাগভাগি হয়ে যায় অন্যান্য খাতের সাথে। এদিকে সরকারী উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ, সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন প্রতিনিয়তই বাড়ানোর চেষ্টা চলে। যা শিক্ষা গবেষকদের মতে অযৌক্তিক ও অনৈতিক। অথচ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সেদেশের শিক্ষার্থীদেকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদান করে থাকে। তাই এদেশের সচেতন ছাত্রজনতার প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা শুধুমাত্র শিক্ষাখাতে মোট বাজেটের ২০% শতাংশ বরাদ্দের দাবী জানানোর পাশাপাশি তা বাস্তবায়নে নিন্মোক্ত প্রস্তাবনা ও কিছু যৌক্তক দাবী পেশ করছে।

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা :

১. বর্তমানে দেশে এক লক্ষ চার হাজার সতেরটি সরকারী, রেজিঃ সরকারী ও নন রেজিঃ প্রাইমারি স্কুল রয়েছে। এসব স্কুলে ছাত্র শিক্ষক অনুপাত ৪৩:১। তা অর্ধেকে নিয়ে আসতে হলে প্রয়োজন অনেক সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ। তাই এই সংকট নিরসনে শিক্ষক চাহিদা বাড়াতে হবে।

২. দেশের প্রায় ৩ লক্ষ মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনগণকে আধুনিক পদ্ধতির সমন্বয়ে দ্বীনি তালিম দিয়ে প্রশিক্ষিত করে তাদের মাধ্যমে ‘মসজিদ ভিত্তিক’ প্রাথমিক বিদ্যালয় বা মক্তব পরিচালনা করা যায়। এই ক্ষেত্রে নিবন্ধিত ইমাম মুয়াজ্জিনরা অবসরপ্রাপ্ত হলে তাদেরকে ‘ইমাম মুয়াজ্জিন ট্রাষ্ট’ থেকে আর্থিক সুবিধা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।

৩. পথশিশু, সুবিধা বঞ্চিত দুর্গম এলাকার পাহাড়ী অধিবাসীদের শিক্ষিত করে তুলতে বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করতে হবে।

৪. প্রত্যেক থানায় আলাদা পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে।

৫. পাঠ্য পুস্তক হতে ইসলাম বিরোধী সব গল্প-প্রবন্ধ-উপন্যাস অপসারণ করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক ক্ষেত্রে ধর্মীয়-নৈতিক শিক্ষার প্রতি জোর তাগিদ দিতে হবে।

৬. বেসরকারী এম.পি.ও ভুক্ত শিক্ষকদের অপমানজনক ৫০০ টাকার পরিবর্তে প্রারম্ভিক স্কেলের ৪৫% বাড়িভাড়া -ভাতা বাড়াতে হবে।

৭. প্রতিটি উপজেলায় ন্যূনতম একটি মাধ্যমিক স্কুলকে সরকারিকরণ করতে হবে।

৮. সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আই সি টি নির্ভর ক্লাস রুমের ব্যবস্থা করতে হবে।

মাদ্রাসা পর্যায়ে আমাদের প্রস্তাবনা :

১. প্রত্যেক মাদ্রাসায় কম্পিউটার বরাদ্দ সহ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে পদ সৃষ্টি করে শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে হবে।

২. কওমী মাদ্রাসা গুলোকে মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে এনে সরকারী নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।

৩. বিভাগ ভিত্তিক মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এবং বাংলাদেশ মাদ্রাসা টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (বিএমটিটিআই) প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

৪. মাদ্রাসা গুলোতে সহকারী শিক্ষক ও সহকারী মাওলানা পদে বেতন বৈষম্য দূর করতে হবে।

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষা :

১. কারিগরি শিক্ষা লাভকারী শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য বিশেষয়িত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়াতে হবে।

২. ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী ধারীদেরকে চাকরিক্ষেত্রে প্রাপ্য সম্মানের ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. প্রচলিত শিক্ষাপদ্ধতির পরিবর্তে কারিগরি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোতে ‘কো-অপারেটিভ এন্ড প্রোডাক্টিভ এডুকেশন সিষ্টেম’ চালু করতে হবে। যাতে করে এক সাথে শিক্ষার্থী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকার অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্ভিতা অর্জন করতে পারে।

৪. মাধ্যমিক পর্যায়ে কারিগরি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। তা ছাড়া দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে কারিগরি বিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়ানো সহ এর অবকাঠামোগত উন্নতি সাধনে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে পর্যাপ্ত বাজেট থাকতে হবে।

৫. প্রতিটি উপজেলায় একটি কারিগরি বিদ্যালয় স্থাপন, প্রতিটি জেলায় গ্লার্লস টেকনিক্যাল স্কুল, নতুন পঞ্চাশটি উপজেলায় পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউট, সববিভাগীয় শহরে মহিলা পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউটসহ সববিভাগে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় :

১. শিক্ষকতা পেশাকে ব্যবসায়ীকরণের হাত থেকে রক্ষা করতে সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। তাই সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর জন্য বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ থাকতে হবে।

২. রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে।

৩. বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে যথার্থ গবেষণা কর্ম সম্পাদন করতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয়। প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষকদের জন্য গবেষণার দ্বার উন্মুক্ত করতে হবে। এজন্য চাই প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্ধ।

৪. নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্র্রতিষ্ঠা, যুগোপযুগি বিভাগ সৃষ্টি ও আসনসংখ্যা বাড়াতে হবে।

৫. তথ্য ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়াতে হবে।

৬. প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলা বিভাগ যুক্ত করা সহ ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার উপর পাঠদান বাধ্যতামূলক করতে হবে।

সামগ্রিক প্রস্তাবনা

বাজেট হচ্ছে একটি সরকারের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনার মৌলিক রূপরেখা এবং একটি প্রজ্ঞাবান সরকার বাজেট প্রণয়নের সময় সমাজের নানা চ্যুতি- বিচ্যুতি, অতীত ও বর্তমানের কার্যকারণ এবং ভবিষ্যতের জন্য সংশোধনমূলক বাস্তবসম্মত একটি কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ করে, যার প্রতিচ্ছবি বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে পরিস্ফুট হয়। শিক্ষাখাতে সরকারের বাজেট বরাদ্দ দেখে মনে হচ্ছে, তারা সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষাখাতে যে নৈরাশ্যজনক পরিস্থিতি বিরাজমান সে সম্পর্কে সম্যক অবগত নন অথবা তারা এ পরিস্থিতিকেই স্বাভাবিক হিসেবে মেনে নিয়েছেন, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শিক্ষাখাতে তুলনামূলকভাবে বাজেট না বাড়ানো, শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে গড়িমসি করা, সারা দেশে প্রশ্ন ফাঁস, কৃত্রিম মেধাবী তৈরির কর্মযজ্ঞ এবং সর্বোপরি সুশীল সমাজের প্রস্তাবনা অগ্রাহ্য করে একে শিক্ষাখাতে অগ্রগতির চিহ্ন হিসেবে দাবি করা সরকারের ব্যর্থতা হিসেবেই দেখা হবে। কার কাছে কতটুকু চাইতে হবে তা নির্ধারণ করতে পারাটা জীবনের একটি বড় শিক্ষা। গত বছরের অভিজ্ঞতায় তাই সরকার ও অর্থমন্ত্রীর কাছে আগ্রাসী শিক্ষা-বাজেট আমরা আর আশা করছি না। কিন্তু সরকার, অর্থমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট সবার কাছে এ বছরের বাজেট ও আগামী দিনের কথা মাথায় রেখে আমরা চারটি অনুরোধ করতে চাই।

 

এক. এ বাজেটে যতটুকু বরাদ্দ করা হয়েছে, সেখানে অপচয় যথাসম্ভব কমিয়ে পুরো অর্থ যেন যথাযথভাবে কাজে লাগানো যায়, সেই কর্মকৌশল ঠিক করে সে অনুযায়ী বাজেট বাস্তবায়ন করা হোক।

দুই. প্রতিবছর অন্তত ০.৫ শতাংশ হারে শিক্ষাখাতে জিডিপির বরাদ্দ বাড়ানো হোক।

তিন. শিক্ষাখাতের বাজেটের সঙ্গে অন্য কোনো খাত যুক্ত না করা হোক এবং শিক্ষাখাতের মধ্যে গবেষণার জন্য বরাদ্দ বাড়ানো হোক।

চার. শিক্ষাখাতে দুর্নীতি কমিয়ে বাজেটকে অর্থবহভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

 

এছাড়াও কিছু যৌক্তিক দাবী পেশ করছি –

১. শিক্ষার প্রত্যেক স্তর ও ক্ষেত্রে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

২. মোবাইল ব্যবহারে সরকারি নীতিমালার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আই সি টি আইন ও শাস্তির বিধান সম্পর্কিত সচেতনতা মূলক ক্যাম্পেইনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. যে সব বেসরকারি শিক্ষক অবসরে গেছেন তারা এখনো অবসর ভাতা পাননি। তাদেরকে অবিলম্বে অবসর ভাতা প্রদান করে অনিশ্চিয়তা থেকে মুক্তি দিতে হবে।

৪. নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও ভুক্তির জন্য বরাদ্দ থাকতে হবে।

৭. শুধুমাত্র শিক্ষাখাতে ২৫% এবং জাতীয় আয়ের ৮ ভাগ বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।

টেকসই উন্নতি করতে হলে শিক্ষা- বাজেট বাড়ানোর বিকল্প নেই। এটি আমাদের কথা নয়, অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের কথা। সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা উন্নতির জন্য অনেক কথা বলেন, আমরা প্রতিবছর সেগুলো বিশ্বাস করি। কিন্তু শিক্ষা-বাজেটে সরকারের এসব কথার প্রতিফলন না থাকায় বিশ্বাসগুলো প্রায়ই ঠুনকো হয়ে যেতে থাকে।

 

বিগত ২০২০-২০২১ সালে বাজেটে শিক্ষা নিয়ে তেমন কোন নতুন ঘোষণা না থাকায় দেশের সাধারণ জনগণ হতাশ হয়েছিল। অথচ উন্নত ও উন্নয়শীল সবদেশেই বর্তমানে শিক্ষা খাতকে অগ্রধিকার দিয়ে আসছে। এমনকি অফ্রিকার কঙ্গো ও উগান্ডার মতো দরিদ্র দেশগুলোও শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দেয় তাদের মোট বাজেটের ৩০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি (শিক্ষা বুলেটিন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়)। কিন্তু স্বাধীনতার পর এ যাবৎ ৪৫ বার বাজেট ঘোষণা করা হলেও আমরা শিক্ষা খাতে বরাদ্দ মোট বাজেটের ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ও নিয়ে যেতে পারিনি। তাই বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি এবং বিশ্বমানের শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার জন্য ইউনেস্কোর সুপারিশ অনুযায়ী, শিক্ষা ক্ষেত্রে জাতীয় ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের বাজেটে শুধু শিক্ষা খাতে ২৫% বরাদ্দ সহ শিক্ষা খাত নিয়ে কিছু যৌক্তিক প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেছে। আমরা আশা করি যদি প্রস্তাবিত সুপারিশমালা গুলো বিবেচনা করা হয় তাহলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন সাধিত হবে। অচিরেই বিশ্ব দরবারে আমরা একটি শিক্ষিত ও উন্নত জাতি হিসেবে স্বীকৃতি পাব বলে আমরা বিশ্বাস করি। আমরা আশা করি সরকার আগামী বাজেটে এই সুপারিশগুলো গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবে এবং বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Comments are closed.

© All rights reserved  2020 Daily Surjodoy
Theme Customized BY CreativeNews